হাওর বার্তা ডেস্কঃ ফ্রান্সে রাষ্ট্রীয় পৃষ্টপোষকতায় মানবতার মুক্তির দূত বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অবমাননা ও ব্যঙ্গচিত্র কার্টুন প্রকাশের প্রতিবাদে কিশোরগঞ্জে ফ্রান্সবিরোধী ব্যাপক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আল্লামা আযহার আলী আনোয়ার শাহ রহ. প্রতিষ্ঠিত কিশোরগঞ্জ ইমাম ও উলামা পরিষদের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) সকালে অনুষ্ঠিত সর্বস্তরের তাওহিদী জনতার এই বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ থেকে ফ্রান্সের পণ্য বর্জন ও সম্পর্ক ছিন্নের আহ্বান জানানো হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, ফ্রান্সে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় মানবতার মুক্তির দূত, শান্তির প্রতীক, মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিয়ে যে ঘৃণ্য কাজ করা হয়েছে, তাতে বিশ্ব মুসলিমদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে। বেঈমানরা বেঁচে থাকার জন্য যুদ্ধ করে আর আমরা মুসলিম সম্প্রদায় ইসলাম ও নবীর ইজ্জতের হেফাজত রক্ষার জন্য জিহাদ করে জীবন দিতে সর্বদা প্রস্তুত থাকে।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আল জামিয়াতুল ইমদাদিয়ার প্রিন্সিপাল মাওলানা সিব্বির আহমেদ রশিদ, জামিয়াতুল ইমদাদিয়ার ওস্তাদ মাওলানা আব্দুর রহিম, মদনী মসজিদের খতিব মাওলানা মোহাম্মদ তৈয়ব, ইসলামী আন্দোলন জেলা শাখার সভাপতি হাফেজ মাওলানা আলমগীর হোসাইন তালুকদার প্রমুখ।
এছাড়া বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে প্রধানমন্ত্রী বরাবর কিছু দাবি পেশ করা হয়। দাবিগুলো হচ্ছে, বাংলাদেশস্থ ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে ফ্রান্স সরকার কর্তৃক আমাদের প্রিয় নবী সা: এর বিরুদ্ধে অবমাননাকর কার্টুন ছবি প্রচার বন্ধ করতে নির্দেশ প্রদান করতে হবে এবং নিজেদের কৃতকর্মের জন্য মুসলিম বিশ্বের কাছে নিঃশ্বর্ত ক্ষমা চাইতে হবে।
ফ্রান্সে বসবাসকারী মুসলমান নারী-পুরুষের উপর জুলুম নির্যাতন বন্ধ করতে হবে। তাদের স্বাধীনভাবে ধর্ম পালনের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। বন্ধ করে দেওয়া মসজিদ মাদরাসা খুলে দিতে হবে।
এসব দাবি পূরণে ব্যর্থ হলে ফ্রান্সের সাথে সকল প্রকার কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে। সেখানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় দূতকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। তাদের সাথে সকল প্রকার ব্যবসায়ীক লেনদেন বন্ধ করতে হবে।
ফ্রান্সের সাথে সকল প্রকার আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকবে। তাদের উৎপাদিত কোন পণ্য বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা বিক্রয় করবে না। সকল প্রকার ফ্রান্স পণ্য বর্জন করতে হবে।
জাতীয় সংসদের আগামী অধিবেশনে এদেশে ইসলাম ধর্ম-আল্লাহ রাসূল, খোলাফায়ে রাশেদীন এবং সাহাবায়ে কেরামের নামে কুৎসা রটনা, সমালোচনা এবং কূরুচিপূর্ণ বক্তব্য ও লেখালেখির নিষিদ্ধের আইন পাশ করতে হবে। সর্বোপরি ব্লাসফেমি আইন পাশ করতে হবে।
ইসলামী শরীয়া বিধি বিধানের বিরুদ্ধে সর্ব প্রকার আলোচনা, সমালোচনা ও টকশোর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক আইন পাশ করতে হবে।
যে সকল নাগরিক রেডিও, টিভি ও স্যোসাল মিডিয়ায় নবী, রাসূল, মক্কা, মদিনা, কাবা শরীফ, মসজিদ মাদরাসার বিরুদ্ধে কুৎসা বা অবমাননাকর ছবি প্রচার করে মুসলিম সমাজে বিশৃংখলা তৈরি করে তাদের ইসলামী শরীয়া আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হবে।
নারী নির্যাতন ও ধর্ষণরোধে নারীদের সম্মানজনক কর্মস্থল, বাসস্থান, নিরাপদে চলাচল এবং ইসলামী শরীয়া ও পর্দার বিধানসহ শালীন পোষাক পরিধানের বিধান করে আইন পাশ করতে হবে।
বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহর প্রদক্ষিণ করে মোনাজাতের মাধ্যমে সমাবেশ সমাপ্ত ঘোষণা হয়।