ঢাকা ১০:২৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রংপুরে পুলিশ সদস্যের নেতৃত্বে স্কুলছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:১০:৩৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৬ অক্টোবর ২০২০
  • ১৬৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ রংপুর মেট্রোপলিটন ডিবি পুলিশের এক এএসআইয়ের নেতৃত্বে মহানগরীর হারাগাছ থানার ক্যাদারের পুল এলাকার একটি বাড়িতে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ডেকে এনে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় পুলিশ অসুস্থ অবস্থায় ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছে। পাশাপাশি আটক করা হয়েছে আলেয়া (৩৫) নামের এক ভাড়াটিয়াকে।

ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, রংপুর মহানগরীর হারাগাছ থানার ময়নাকুঠি কচুটারি এলাকার নবম শ্রেণিতে পড়া এক ছাত্রীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন মেট্রোপলিটন ডিবি পুলিশের এএসআই রায়হানুল ইসলাম। পরিচয়ের সময় রায়হান তার ডাক নাম রাজু বলে জানায়। সম্পর্কেরে সূত্র ধরে রবিবার সকালে ওই ছাত্রীকে ক্যাদারের পুল এলাকার শহিদুল্লাহ মিয়ার ভাড়াটিয়া আলেয়া বেগমের বাড়িতে ডেকে নেয় রায়হান। সেখানে রায়হান ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের পর তার আরও কয়েকজন পরিচিত যুবককে দিয়ে ধর্ষণ করায়। এ ঘটনায় ওই ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে সেখান থেকে বের হয়ে পুলিশকে বিষয়টি জানায়।

রাত সাড়ে আটটার দিকে পুলিশ ওই ছাত্রীকে ওই বাড়ি থেকে ভাড়াটিয়া আলেয়া বেগমসহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। খবর দেয়া হয় পরিবারকে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছাত্রীর পিতা আয়নাল বাদী হয়ে পুলিশ সদস্য রাজুসহ আরও দুইজনের নাম উল্লেখ করে ধর্ষণ মামলা করেন। রাত পৌনে ১২ টায় পুলিশ অসুস্থ ছাত্রীকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ১৩ নং ওয়ার্ডে ভর্তি করায় পুলিশ। ওই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ওই ওই বাড়িতে বিভিন্ন সময়ে মেয়ে নিয়ে গিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগও আছে।

ওই ছাত্রীর মা জানান, ডিবি পুলিশের এএসআই রায়হানের সাথে আমার মেয়ে কথা বলতো এবং মাঝেমধ্যে দেখা সাক্ষাত করতো।

মামলার সাক্ষী ওই ছাত্রীর পাশের বাড়ির চাচা আতিয়ার রহমান জানান, মামলার আসামি ধরতে গিয়ে আমার ভাতিজির সাথে পরিচয় এএসআই রায়হানুলের। তার পর থেকেই তাদের সাথে ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়। আমার ভাতিজি তার সাথে কথাবার্তা বলতো। আমার ভাতিজি ময়নাকুঠি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী। সে পড়াশুনায় খুব ভালো।

এদিকে এ ঘটনায় রাত ১২টায় হারাগাছ থানায় মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার(অপরাধ) আবু মারুফ হোসেন জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাকে দুই জন ধর্ষণ করেছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে রাজু নামের একজন পুলিশ সদস্যের কথা জানিয়েছেন তিনি। তবে ওই রাজু ডিবি পুলিশের এএসআই রায়হানুল কিনা তা নিশ্চিত হতে রায়হানুলকেও পুলিশের জিম্মায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। মামলার তদন্ত কার্যক্রম এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে বলে জানান তিনি।

এদিকে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (অপরাধ) রাত একটায় শহিদুল্ল্যা কায়সার মোবাইল ফোনে জানান, ওই পুলিশ সদস্যও সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গত শনিবার আটক মহিলার বাড়িতে এই পুলিশ সদস্য ডেটিং করে। পরবর্তীতে মেয়েটি বাসায় চলে যায়। তার বাড়ি যাওয়ায় দেরিতে তার মা রাগ করলে সে পুনরায় সেই মহিলার বাড়িতে চলে আসলে মহিলা মেয়েটিকে আটক রেখে দুই জনকে দিয়ে ধর্ষণ করায়। আজ সন্ধ্যায় মেয়েটি পুলিশের পেট্রল গাড়ির সামনে এসে সব কথা খুলে বললে তাকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়। মেয়েটি পুলিশের নিকট ধর্ষণের ব্যাপারে মামলা করেছে। আমরা রংপুর মেট্রোপলিটন ডিবি পুলিশের এ এস আই রায়হানের ব্যাপারটি ক্ষতিয়ে দেখছি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

রংপুরে পুলিশ সদস্যের নেতৃত্বে স্কুলছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ

আপডেট টাইম : ০৯:১০:৩৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৬ অক্টোবর ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ রংপুর মেট্রোপলিটন ডিবি পুলিশের এক এএসআইয়ের নেতৃত্বে মহানগরীর হারাগাছ থানার ক্যাদারের পুল এলাকার একটি বাড়িতে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ডেকে এনে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় পুলিশ অসুস্থ অবস্থায় ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছে। পাশাপাশি আটক করা হয়েছে আলেয়া (৩৫) নামের এক ভাড়াটিয়াকে।

ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, রংপুর মহানগরীর হারাগাছ থানার ময়নাকুঠি কচুটারি এলাকার নবম শ্রেণিতে পড়া এক ছাত্রীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন মেট্রোপলিটন ডিবি পুলিশের এএসআই রায়হানুল ইসলাম। পরিচয়ের সময় রায়হান তার ডাক নাম রাজু বলে জানায়। সম্পর্কেরে সূত্র ধরে রবিবার সকালে ওই ছাত্রীকে ক্যাদারের পুল এলাকার শহিদুল্লাহ মিয়ার ভাড়াটিয়া আলেয়া বেগমের বাড়িতে ডেকে নেয় রায়হান। সেখানে রায়হান ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের পর তার আরও কয়েকজন পরিচিত যুবককে দিয়ে ধর্ষণ করায়। এ ঘটনায় ওই ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে সেখান থেকে বের হয়ে পুলিশকে বিষয়টি জানায়।

রাত সাড়ে আটটার দিকে পুলিশ ওই ছাত্রীকে ওই বাড়ি থেকে ভাড়াটিয়া আলেয়া বেগমসহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। খবর দেয়া হয় পরিবারকে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছাত্রীর পিতা আয়নাল বাদী হয়ে পুলিশ সদস্য রাজুসহ আরও দুইজনের নাম উল্লেখ করে ধর্ষণ মামলা করেন। রাত পৌনে ১২ টায় পুলিশ অসুস্থ ছাত্রীকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ১৩ নং ওয়ার্ডে ভর্তি করায় পুলিশ। ওই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ওই ওই বাড়িতে বিভিন্ন সময়ে মেয়ে নিয়ে গিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগও আছে।

ওই ছাত্রীর মা জানান, ডিবি পুলিশের এএসআই রায়হানের সাথে আমার মেয়ে কথা বলতো এবং মাঝেমধ্যে দেখা সাক্ষাত করতো।

মামলার সাক্ষী ওই ছাত্রীর পাশের বাড়ির চাচা আতিয়ার রহমান জানান, মামলার আসামি ধরতে গিয়ে আমার ভাতিজির সাথে পরিচয় এএসআই রায়হানুলের। তার পর থেকেই তাদের সাথে ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়। আমার ভাতিজি তার সাথে কথাবার্তা বলতো। আমার ভাতিজি ময়নাকুঠি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী। সে পড়াশুনায় খুব ভালো।

এদিকে এ ঘটনায় রাত ১২টায় হারাগাছ থানায় মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার(অপরাধ) আবু মারুফ হোসেন জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাকে দুই জন ধর্ষণ করেছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে রাজু নামের একজন পুলিশ সদস্যের কথা জানিয়েছেন তিনি। তবে ওই রাজু ডিবি পুলিশের এএসআই রায়হানুল কিনা তা নিশ্চিত হতে রায়হানুলকেও পুলিশের জিম্মায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। মামলার তদন্ত কার্যক্রম এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে বলে জানান তিনি।

এদিকে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (অপরাধ) রাত একটায় শহিদুল্ল্যা কায়সার মোবাইল ফোনে জানান, ওই পুলিশ সদস্যও সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গত শনিবার আটক মহিলার বাড়িতে এই পুলিশ সদস্য ডেটিং করে। পরবর্তীতে মেয়েটি বাসায় চলে যায়। তার বাড়ি যাওয়ায় দেরিতে তার মা রাগ করলে সে পুনরায় সেই মহিলার বাড়িতে চলে আসলে মহিলা মেয়েটিকে আটক রেখে দুই জনকে দিয়ে ধর্ষণ করায়। আজ সন্ধ্যায় মেয়েটি পুলিশের পেট্রল গাড়ির সামনে এসে সব কথা খুলে বললে তাকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়। মেয়েটি পুলিশের নিকট ধর্ষণের ব্যাপারে মামলা করেছে। আমরা রংপুর মেট্রোপলিটন ডিবি পুলিশের এ এস আই রায়হানের ব্যাপারটি ক্ষতিয়ে দেখছি।