প্রায় তিনবছর ফাইলবন্দি থাকার পর অবশেষে প্রস্তাবিত নতুন ওষুধনীতির খসড়া অনুমোদন দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। গত ৬ জানুয়ারি স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় প্রস্তাবিত ওষুধ নীতি ২০১৩ এর খসড়ার অনুমোদন দেয়া হয়।
ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের পরিচালক রুহুল আমিন শনিবার দুপুরে এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ২০১১ সালে সর্বপ্রথম কমিটি গঠন করে ওষুধনীতি হালনাগাদ তথা নতুন ওষুধনীতি প্রণয়নের কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১৩ সালের শুরুর দিকে প্রস্তাবিত ওষুধনীতির খসড়াটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া হয়। ওষুধ শিল্পের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার মতামত গ্রহণ শেষে গত ৬ জানুয়ারির বৈঠকে এটি অনুমোদিত হয়।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, অনুমোদিত নতুন ওষুধনীতির খসড়টি (খসড়াটির আইনগত বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখতে) বেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। আইন মন্ত্রণালয় থেকে ফেরত আসলে তা পাসের জন্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে পাঠানো হবে। সভায় অনুমোদিত হলে আইনটি পাসের জন্য সংসদে উত্থাপিত হবে। সংসদে পান হলে কার্যকর হবে নতুন ওষুধনীতি।
নতুন ওষুধনীতি প্রণয়ণের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত সাব-কমিটির অন্যতম সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ও ওষুধ বিশেষজ্ঞ আ ব ম ফারুক জানান, ওষুধ সেক্টরের সার্বিক উন্নয়নে এবারই প্রথমবারের মতো অ্যালোপ্যাথিক, হোমিওপ্যাথিক, ইউনানি, আয়ুর্বেদিকসহ সকল প্রকার ওষুধকে অর্ন্তভুক্ত করে নতুন ওষুধনীতি প্রণয়নের কাজ শুরু হয়েছে। নকল, ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ উৎপাদন ও বিক্রি বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ ও শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, নতুন গ্রহণযোগ্য ওষুধনীতি প্রণয়নের বিষয়টি ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নির্বাচনের ইশতেহারে প্রতিশ্রুতি ছিল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১১ সালে একটি গ্রহণযোগ্য ওষুধনীতি প্রণয়নের লক্ষ্যে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের তৎকালীন মহাপরিচালককে প্রধান করে ১৪ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠিত হয়। কমিটিতে সাংসদ, ডাক্তার, ফার্মাসিউটিক্যালস্ কোম্পানির প্রতিনিধি, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও ফার্মেসিস্টরা ছিলেন।
কমিটির সদস্যরা ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে খসড়া ওষুধনীতি প্রণয়ন করে মন্ত্রণালয়ে জমা দিলেও এতদিন সেটি ফাইলবন্দি হয়ে পড়েছিল। তবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, ওষুধনীতি প্রণয়নে তাদের আন্তরিকতার ঘাটতি না থাকলেও বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের পরামর্শ গ্রহণে বিলম্ব হয়েছে।