হাওর বার্তা ডেস্কঃ অবশেষে শেষ হচ্ছে অপেক্ষার পালা। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) উদ্বোধন হচ্ছে ‘হাওরের বিস্ময়’ হিসেবে পরিচিত কিশোরগঞ্জের ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম ‘অলওয়েদার’ সড়ক।
কাল সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে হাওরবাসীর স্বপ্নের এ সড়ক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গভীর হাওরের তিন উপজেলা ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রামের মধ্যে সরাসরি সড়ক যোগাযোগের জন্য তৈরি করা নান্দনিক এই সড়ক এখন সৌন্দর্যপিপাসুদের কাছে হয়ে উঠেছে দুর্নিবার আকর্ষণ। এর ফলে কিশোরগঞ্জের হাওর এলাকায় উন্মোচিত হয়েছে পর্যটন সম্ভাবনার নতুন আকাশ।
এলাকাবাসী বলছেন, এ সড়ক উদ্বোধনের মাধ্যমে হাওরে নতুন দিগন্তের উন্মোচন হবে। সড়ককে ঘিরে হাওরে, কেরালার মডেলে পর্যটন এলাকা ঘোষণার উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন।
এক সময়ের অবহেলিত ইটনা-মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম উপজেলাকে সংযুক্ত করেছে এ সড়কটি। দিগন্ত বিস্তৃত হাওরের মাঝ দিয়ে পিচঢালা প্রশ্বস্ত উঁচু সড়কটি হাওরের সৌন্দর্যকে যেন বাড়িয়ে দিয়েছে বহু গুণ।
এ সড়ককে ঘিরে সমৃদ্ধ হবে হাওরের অর্থনীতি। বাড়বে মানুষের জীবনমান এমনটা মনে করছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
এমপি রেওয়ান আহাম্মদ তৌফিক বলেন, রাস্তাটার জন্য সারা বছর নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পারব।
এ সড়ককে ঘিরে হাওরে ভারতের কেরালা মডেলে পর্যটন এলাকা গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী।
কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম) আসনের সংসদ সদস্য ও রাষ্ট্রপতির বড় ছেলে রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক বলেন, সড়কটি হওয়ার ফলে তিন উপজেলার মানুষের যোগাযোগসহ পরস্পরের প্রতি সম্প্রীতির বন্ধন সৃষ্টি হয়েছে। ভবিষ্যতে হাওরের অলওয়েদার সড়কটি সিলেট-ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহাসড়কে যুক্ত হবে। এ ছাড়া হাওরে ফ্লাইওভার নির্মাণেরও পরিকল্পনা রয়েছে।
কিশোরগঞ্জের সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাশেদুল আলম জানান, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অধীনে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর ৮৭৪.০৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম সড়ক নির্মাণ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে। ২৯.৭৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এই অলওয়েদার সড়কে ৫৯০.৪৭ মিটার দীর্ঘ তিনটি পিসি গার্ডার, ১৯০ মিটার দীর্ঘ ৬২টি আরসিসি বক্স কালভার্ট, ২৬৯.৬৮ মিটার দীর্ঘ ১১টি আরসিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ৭.৬০ লাখ বর্গমিটার সিসি ব্লক দিয়ে স্লোপ প্রটেকশনের কাজ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৬১.৮১ মিটার দীর্ঘ ভাতশালা সেতু, ১৭১.৯৬৪ মিটার ঢাকী সেতু এবং ১৫৬.৭২ মিটার দীর্ঘ ছিলনী সেতু- এ তিনটি সেতু সড়কটির সৌন্দর্যকে বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে।