হাওর বার্তা ডেস্কঃ উত্তর জনপদ লালমনিরহাট শহর থেকে ১২ থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরেই রয়েছে ৩৭.১৪ একরের এক প্রাচীন দীঘি, নাম তার পদ্মপুকুর। গাছপালায় ঘেরা অপরূপ সে দীঘি, তবে তা দেখতে, প্রকৃতির সান্নিধ্য নিতে সেখানে নেই মানুষের পদচারণা। স্থানীয়দের দাবি, শুধু মাছের খামার হিসেবে এই দীঘিটি সরকার শুধু ইজারা না দিয়ে গড়ে তুলুক বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে।
১৯৮৭ সালের আগে-পরে কয়েকবার পুকুরটি দখলে নিতে হয়েছে দাঙ্গা, জাল দলিল করে পুকুরটির মালিকানাও দাবি করা হয়েছে। সেই সময় চিলমারী-রৌমারি থেকে অনেক মানুষ পদ্মপুকুরের আশাপাশে বসবাস শুরু করে। পুকুর এবং পাশের জায়গাগুলোতে বোরোধানের চাষ শুরু করে। এখন পুকুরটি শতভাগ সরকারি। সরকারের তরফ থেকে লিজ দেওয়া হয় মাছ চাষের জন্য।
এখন পুকুরটি দেখলেই যে কারোরই মন জুড়িয়ে যায়।পারে ঘন, বড় বড় গাছের সারি। পুকুর ভর্তি পদ্ম। হাজার হাজার ফুল ফুটে থাকে। পদ্মের পাতা-ফুল-কলিতে খেলা করে ভোমড়ার দল,নানান জাতের জলজ প্রাণ ও পোকা। সে এক অভুদপূর্ব দৃশ্য। ভূমির ওপর যেন একটুক প্রাকৃতিক স্বর্গ। নৈসর্গিকতা একটা অশান্ত মনকে নিবিড়,শান্ত করে দেয়।
হিন্দু ধর্ম বিশ্বাস ঘিরে বছরে তিনটি উৎসব। চৈত্রমাসে মেলা, দূর্গা পূজার ভাসান উৎসব, মন্দির কেন্দ্রীক অষ্টপ্রহর। আছে ভিন্ন ভিন্ন দেব-দেবির মন্দির, কালি,গোবিন্দ,দূর্গা।
পুকুরপাড়ে কথা হয় অনেকের সঙ্গে, জানা যায় অনেক তথ্য।
ষাটোর্ধ জগবন্ধু জানান, তিনি শুনেই এসেছেন তার বাবা,ঠাকুরদার কাছ থেকে। পুকুরটির নাম শুকানদীঘি। সত্যযুগে তৈরি হয়েছে। কত বছর আগে তৈরি হয়েছে, তা সঠিক কেউ বলতে পারেনা।
স্থানীয়রা আক্ষেপের সুরেই বলেন, সরকার অনেক প্রকল্প গ্রহন করছে। শুকান দীঘিকে নিয়ে যদি কোন প্রকল্প নিতো, একটা বিনোদন কেন্দ্র করতো, তাহলে তারা তাদের গ্রামের কিছু লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ হতো।
কিছু মানুষ মাঝে মধ্যেই বেড়াতে আসতেন, প্রকৃতির খুব নিকটে পরিবার নিয়ে। কিন্তু স্থানীয় কিছু ছেলেপেলেদের হাতে লাঞ্চিত হতে হয় তাদের। দিনের আলোতে ছিনতাইয়ের মতো ঘটনাও ঘটেছে। তাই এখন আর কোনো মানুষ সেখানে বেড়াতে যায়না।
রাইজিংবিডির সঙ্গে কথা বলেন লালমরিরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার।
তিনি বলেন, ‘পুকুরটিকে নিয়ে আমরা ছোট ছোট প্রকল্পে কাজ করছি। বেঞ্চ বসাচ্ছি,পাড় বাঁধছি, সংস্কারের কাজ করছি। আগামীতে কী করে আরও ভাল কিছু করা যায়, তা নিয়ে আমরা ভাববো।’