বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ ২৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ব পর্যটন দিবস-২০২০ উপলক্ষ্যে বাণী প্রদান করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেছেন: “বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও বিশ্ব পর্যটন দিবস-২০২০ পালনের উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। এবছর বিশ্ব পর্যটন দিবসের প্রতিপাদ্য ‘Tourism and Rural Development’ অর্থাৎ ‘গ্রামীণ উন্নয়নে পর্যটন’ অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে বলে আমি মনে করি।
বহুমাত্রিকতা ও ব্যাপ্তির কারণে পর্যটন শিল্প ইতোমধ্যে বিশ্বে একক বৃহত্তম সেবাখাত হিসাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে পর্যটনশিল্প অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ জাতীয় অর্থনীতিতে পর্যটনের রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ অবদান। বিশ্ব পর্যটন সংস্থা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে পর্যটনশিল্পে সম্পৃক্তকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে। আমি আশা করি, যথাযথ পরিকল্পনা, দক্ষ সম্পদব্যবস্থাপনা এবং স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্তকরণের মাধ্যমে বাংলাদেশের পর্যটনশিল্প উন্নতির শিখরে পৌঁছতে সক্ষম হবে।
বাংলাদেশে পর্যটনশিল্পের বিকাশে অফুরন্ত সম্ভাবনা রয়েছে। এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে দেশের পর্যটনশিল্পের উন্নয়নে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের পাশাপাশি গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিতে হবে। একই সাথে বিশ্বদরবারে দেশের পর্যটনশিল্পকে কার্যকরভাবে তুলে ধরতে হবে। আমি স্থানীয় কৃষ্টি, ঐতিহ্য ও মূল্যবোধকে সমুন্নত রেখে পর্যটনশিল্পের বিকাশের পাশাপাশি জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে পর্যটনসংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ সকলকে একসাথে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি।
আমি ‘বিশ্ব পর্যটন দিবস-২০২০’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করি।
জয় বাংলা। খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”
প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেছেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও জাতিসংঘ পর্যটন সংস্থা ঘোষিত ২৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ব পর্যটন দিবস-২০২০ পালিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এবছর বিশ্ব পর্যটন দিবসের প্রতিপাদ্য ‘Tourism and Rural Development;
আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় অদম্য বাংলাদেশের অন্যতম এজেন্ডা ‘গ্রাম হবে শহর’ যা এবছর জাতিসংঘ বিশ্ব পর্যটন সংস্থা কর্তৃক ঘোষিত প্রতিপাদ্যের সাথে অত্যন্ত সংগতিপূর্ণ। পর্যটন বিশ্বে শ্রমঘন এবং সর্ববৃহৎ শিল্প হিসেবে স্বীকৃত।
কৃষ্টি, ঐতিহ্য আর অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভুমি বাংলাদেশ। এখানে রয়েছে অসংখ্য নদী-নালা, প্রত্নতাত্ত্বিক ও ধর্মীয় স্থান, পাহাড়, বন, জলপ্রপাত, চা বাগান এবং বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন। বিশ্বের বৃহত্তম অবারিত বালূকাময় সমুদ্রসৈকতটি বাংলাদেশের কক্সবাজারে অবস্থিত। দেশের উত্তর-পূর্বঞ্চলে রয়েছে বিস্তীর্ণ হাওড়, চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড় এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জীবনপ্রণালী পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণীয় বিষয়। সবুজে ঘেরা গ্রামীণ সৌন্দযও ছুটির দিনে পর্যটকদের বাড়তি আকর্ষণ হতে পারে।
বাংলাদেশে পর্যটনের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। অর্থনৈতিক বিকাশের ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। আবহমান গ্রামবাংলার সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং পরিবেশগত ভারসাম্য বজায় রেখে যথাযথ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দায়িত্বশীল পর্যটনকার্যক্রম পরিচালনা করতে এবং এর সুফল যাতে স্থানীয় জনগোষ্ঠী ভোগ করতে পারে, সে লক্ষ্যে বর্তমান সরকার বিভিন্নমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। আমি আশ করি, সরকারের এসব পরিকল্পনা যথাযথ বাস্তবায়ন এবং জাতীয় উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারাকে অব্যাহত রাখতে সকলে নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালন করবেন। টেলিভিশন, বেতার এবং ডিজিটাল মাধ্যমে পর্যটনকেন্দ্রসম্পর্কে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে তুলে ধরতে হবে। এ ব্যাপারে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি আমি বেসরকারি উদ্যোক্তাদের স্বতস্ফুর্তভাবে এগিয়ে আসার উদাত্ত আহ্বান জানাই।
আসুন, আমরা সবাই একসঙ্গে অপার সম্ভাবনাময় এই পর্যটনশিল্পে অধিকতর কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং সংশ্লিষ্ট সেবাখাতসমূহে দক্ষ জনবল তৈরি করে দেশের সার্বিক উন্নয়নে অবদান রাখার মাধ্যমে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ‘সোনার বাংলাদেশ’ গড়ে তুলি। আমি ‘বিশ্ব পর্যটন দিবস-২০২০’ এর সাফল্য কামনা করি।