হাওর বার্তা ডেস্কঃ বেইজিংভিত্তিক প্রতিষ্ঠ্যান সিনোভ্যাক বায়োটেক উদ্ভাবিত করোনা (কোভিড-১৯) ভ্যাকসিনের হিউম্যান ট্রায়াল প্রক্রিয়া আগামী দুইদিনের মধ্যে বাংলাদেশকে অফিসিয়ালি জানানো হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান।
তিনি বলেন, ভ্যাকসিন নিয়ে বিভিন্ন দেশের ৯টি কোম্পানি কাজ করছে।
এরমধ্যে সরকার পাঁচটি কোম্পানির সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ আছে। এর মধ্যে চীনের কোম্পানিকে ট্রায়ালের অনুমোদন দিয়েছি। তারা ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া আর তুরস্কে তারা অনেক ইনভেস্ট করেছে। তারা ট্রায়াল শুরু করার জন্য দুইদিনের মধ্যে চিঠি দিয়ে অফিসিয়ালি সিদ্ধান্ত জানাবে।
সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
ভ্যাকসিন ট্রায়াল বিষয়ে সচিব বলেন, আমরা আশাবাদী দ্রুততম সময়ের মধ্যে তারা এগিয়ে আসবে। শুরুর বিষয়ে জানতে চেয়েছি, তারা বলেছে ফরমাল চিঠি দেবে, যা আগামীকাল বা পরেরদিন হয়তো হবে। এরইমধ্যে যারা বাংলাদেশে ট্রায়াল শুরু করতে চেয়েছে, তাদের কাছে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) মাধ্যমে চিঠি দিয়ে জানতে চেয়েছি, কি প্রক্রিয়ায় ট্রায়াল শুরু করা হবে। এছাড়া ভারতের কোম্পানিও কিছু প্রস্তাব দিয়েছে।
তিনি বলেন, ভ্যাকসিনের জন্য অর্থ বরাদ্দ আছে। যেকোনো সময় চাইলে আমরা তা ব্যবহার করে, ভ্যাকসিন সংগ্রহ করতে পারবো। একটি বিদেশি প্রকল্পের ১০০ মিলিয়নের ওপরে টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। আরও প্রয়োজন পড়লেও অন্য যেকোন প্রকল্প থেকে নেওয়া হবে। প্রাথমিকভাবে আড়াই থেকে তিন মিলিয়ন ভ্যাকসিন চাওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী আগাম বুকিংয়ের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। ভ্যাকসিন কিভাবে দ্রুত পেতে পারি সেজন্য যখন যেটা প্রয়োজন সেটা করছি।
সাধারণ জনগণকে কি ভ্যাকসিন ফ্রিতে দেওয়া হবে এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, ফ্রিতে পেতে আমাদের অনেক সময় লেগে যাবে। তবে সরকার যারা ফ্রন্টলাইন এবং বয়োবৃদ্ধ তাদের অগ্রাধিকার দেবে। এছাড়া ভ্যাকসিন পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো শ্রণী কিভাবে পাবে সেজন্য একটি নীতিমালা করা হবে। সাংবাদিকরাও ঘরের বাইরে কাজ করছে, তারাও গুরুত্ব পাবে। সাধারণ মানুষের জন্য কতটা অ্যাভেইলেবল করা যায় সেটি দেখছি। তবে যারা বয়স্ক এবং বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন, তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবো।
রাশিয়া বাংলাদেশের কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান ভ্যাকসিন উৎপাদনে সক্ষম বলে মনে করছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রাশিয়ার কোম্পানিগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা আমাদের ফার্মাসিটিক্যাল কোম্পানিগুলোকে কাজে লাগাতে চাচ্ছে। ইনসেপটা, পপুলার, বেক্সিমকো, হেলথ কেয়ার, স্কয়ারসহ বড় কোম্পানিগুলোর কথা বলেছে। বেলজিয়াম ও ফ্রান্সের কোম্পানিও আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।
সামনে করোনা আরও বাড়তে পারে, এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কতটা প্রস্তুত জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা প্রস্তুতির ব্যাপারে মঙ্গলবার (২২ সেপ্টেম্বর) মন্ত্রীপরিষদ সচিবের সভাপতিত্বে একটি সভা করবো। সেকেন্ড ওয়েভ কেমন হতে পারে, বিভিন্ন দেশে কেমন আঘাত হানছে, আমরা কতটা প্রস্তুত সেসব আলোচনা হবে। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগসহ অন্যান্য বিভাগ কী কী প্রস্তুতি আছে, সেসব নিয়ে আমরা আজ আলোচনা করেছি। করোনা এখন সহনশীল অবস্থায় আছে। তবে প্রত্যাশার বাইরে কিছু হলে কিভাবে মোকাবিলা করবো তার প্রস্তুতি আমাদের আছে। আইসোলেশন সেন্টার, চিকিৎসকদের থাকার ব্যবস্থা, নন-কোভিড যেগুলো ঘোষণা করেছি সেগুলো কীভাবে দ্রুত কোভিড হাসপাতালে রুপান্তর করা যায় সেগুলোর বিষয়ে আমরা লক্ষ্য রাখছি।
স্বাস্থ্যের ডিজির গাড়িচালকের বিষয়ে তিনি বলেন, সার্ভিস রোলে যে বিধান আছে, সে অনুয়ায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ডিজি বলেছে, তিনি ব্যবস্থা নিচ্ছে। দুদক আছে তারা দেখবে। তবে তার ছাড় পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আরও যারা যারা এমন আছেন তাদের বিষয়ে অনুসন্ধানের প্রক্রিয়া রয়েছে। গত কয়েক মাসে স্বাস্থ্য বিভাগে কোনো ধরনের অনন্যায় অবিচার দুর্নীতির সঙ্গে যেই জড়িত কাউকে ছাড় দিচ্ছি না। আমরা কাউকে ছাড়তে চাচ্ছি না। তবে সেই ড্রাইভারকে তাকে বরখাস্ত করার দায়িত্ব ডিজির। তাকে বরখাস্ত করতে আজকের দিন পার হওয়ার কথা না।