ছাত্রদের অনুষ্ঠানে অসভ্যতার শিকার শুভশ্রী

তৃণমূল ছাত্র পরিষদ-পরিচালিত ছাত্র সংসদের বার্ষিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ফালাকাটা কলেজে গিয়েছিলেন টালিগঞ্জের নায়িকা শুভশ্রী গাঙ্গুলি। সেখানে উপস্থিত ছাত্রদের অসভ্য আচরণের শিকার হয়ে মঞ্চে উঠার মাত্র দুই মিনিটের মধ্যেই নেমে যেতে বাধ্য হন তিনি। এ নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছে পশ্চিমবঙ্গের শাসক দলের ছাত্র সংগঠনটি।

অস্বস্তিতে পড়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষও। প্রচুর পুলিশ মোতায়েন থাকা সত্ত্বেও কী করে টলিউডের নায়িকার সঙ্গে এমন হয়রানির ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছে পুলিশ-প্রশাসন।

আনন্দবাজারের বরাতে জানা গেছে, ফালাকাটা কলেজের বার্ষিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সানন্দেই রাজি হয়েছিলেন ‌‌‘খোকাবাবু’র নায়িকা। আর শুভশ্রী আসছেন বলে রীতিমতো প্রচার চালানো হয় তৃণমূল ছাত্র পরিষদ-পরিচালিত ছাত্র সংসদের পক্ষ থেকে। শনিবার দুপুর থেকে ভিড় উপচে পড়তে থাকে কলেজ মাঠে। দুপুর থেকে চলছিল সংগীতানুষ্ঠান। সকলে শুভশ্রীর অপেক্ষায় ছিলেন। সে জন্য প্রচুর পুলিশ মোতায়ন করা হয়। বিকাল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ শুভশ্রীর গাড়ি কলেজে পৌঁছতে একদল যুবক তাকে ঘিরে ধরে। অনেকেই নায়িকাকে ছোঁয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ে। মুহূর্তের মধ্যে কয়েকগুণ ভিড় উপচে পড়ে নায়িকাকে ঘিরে।

পুলিশ চেষ্টা চালালেও ভিড় থেকে নায়িকাকে উদ্ধার করতে পারেনি। একদল যুবক শুভশ্রীর শরীরে হাত দিয়ে অসভ্যতাও করেছে। তারমধ্য দিয়েই ভিড় ঠেলে শুভশ্রীকে মঞ্চে নিয়ে যাওয়া হয়। ততক্ষণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন শুভশ্রী। তাই মঞ্চে উঠেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন তিনি।

তিনি মাইক হাতে ব্যথিত স্বরে বলেন, ‘এই কলেজের ছেলেরা আমার সঙ্গে ভীষণ বাজে ব্যবহার করেছে। আমার সঙ্গে যেটা হয়েছে তা কোনো মেয়ের সঙ্গেই করা উচিত নয়। ছাত্রদের কাছ থেকে এ ধরনের অসভ্যতা কেউ আশা করে না। আমি সত্যিই লজ্জিত এমন প্রতিষ্ঠানে অংশ নিতে এসে। আমার মানসিক অবস্থা ভাল নয়। আমি আজ কোনো পরিবেশনা নিয়ে আসতে পারব না।’

এর পরেই তিনি মঞ্চ থেকে নেমে চলে যান। পুলিশ বাহিনী ব্যারিকেড করে তাকে গাড়িতে তুলে দেয়।

এদিকে ঘটনার জেরে ‘বহিরাগতদের’ দিকে আঙুল তুলেছে টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদ। ফালাকাটা কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক অনন্ত সরকার বলেন, ‘শুভশ্রীর উপর যা হয়েছে তা অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা। এটা মানা যায় না। যারা ওই কাণ্ড ঘটিয়েছে, তারা বহিরাগত। আমরা তাদের চিহ্নিত করছি। এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেয়া হবে। এবং শুভশ্রীর কাছে আমরা নত মস্তকেই ক্ষমা চাইছি।’

ঘটনার কথা মেনেছেন ফালাকাটার ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি সঞ্জয় দাসও। শুভশ্রী চলে যাওয়ার পরে মঞ্চে উঠে ক্ষমা চান তিনিও।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি কোচবিহারের রাসমেলায় অনুষ্ঠান করে ফিরে স্টেজের পাশ থেকে কটূক্তির অভিযোগ তুলেছিলেন সঙ্গীতশিল্পী আকৃতি কক্করও। সেখানেও তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার পুরপ্রধানের ছেলের সামনেই ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর