ঢাকা ০৪:২০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বন্যায় ১৮ জেলা প্লাবিত, ৮ জনের মৃত্যু

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:০৬:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জুলাই ২০২০
  • ২৪৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ এখন পর্যন্ত বন্যায় দেশের ১৮ জেলা প্লাবিত হয়েছে জানিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেছেন, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় পদ্মা অববাহিকা এলাকায় পানি বাড়বে।

তিনি জানান, প্লাবিত জেলাগুলোর উপজেলা ৯২টি ও ৫৩৫টি ইউনিয়নে বন্যায় মোট ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ২২ লাখ ৪৬ হাজার ৪৭২ জন। বন্যায় জামালপুরে চারজন এবং লালমনিরহাট, সুনামগগঞ্জ, সিলেট ও টাঙ্গাইলে একজন করে মোট আটজন মারা গেছেন। পানিবন্দি ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৩৭৬টি পরিবার।

বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) সচিবালয়ে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান প্রতিমন্ত্রী। এ সময় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব মো. মোহসীন উপস্থিতি ছিলেন।

বন্যায় জামালপুরে চারজন এবং লালমনিরহাট, সুনামগগঞ্জ, সিলেট ও টাঙ্গাইলে একজন করে মোট আটজন মারা গেছেন জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এবারের বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হবে না বলে আমরা আশা করছি। কারণ নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। যেসব নদীর পানি বাড়ছে সেগুলোর পানি আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কমতে শুরু করবে বলে পূর্বাভাস রয়েছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের প্রতিবেদন তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি স্থিতিশীল রয়েছে। অপরদিকে যমুনা নদীর পানি বাড়ছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি কমতে শুরু করবে এবং যমুনা নদীর পানি স্থিতিশীল হবে।

তিনি বলেন, গঙ্গা-পদ্মার নদীর পানি বাড়ছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত এ পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। কুশিয়ারা ছাড়া উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনার প্রধান নদীগুলোর পানি কমছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।

আগামী ২৪ ঘণ্টায় সিলেট, সুনামগঞ্জ ও কুড়িগ্রাম জেলার বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হতে পারে। অপরদিকে গাইবান্ধা, বগুড়া, জামালপুর, নাটোর ও নওগাঁ জেলার বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে। ‘আগামী ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরিয়তপুর, রাজবাড়ী ও ঢাকার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হতে পারে।’

বন্যায় আক্রান্ত ১২ জেলায় এক হাজার ৫৪৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে জানিয়ে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে ৩০ হাজার ৭০৫ জন মানুষ এবং ৫৬ হাজার ৩১টি গবাদিপশু আশ্রয় নিয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে আনসার, গ্রাম পুলিশ, স্বেচ্ছাসেবক ও এনজিও প্রতিনিধিরা কাজ করছেন।

বন্যায়র কারণে সরকার ৫৯৬টি মেডিকেল টিম গঠন করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, এরমধ্যে বর্তমানে ১৯৭টি টিম কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে রান্না করা খাবার দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, কোভিড-১৯ সংক্রমণের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে আশ্রয়কেন্দ্রে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে সবাইকে মাস্ক ব্যবহারের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

ধানকাটা শেষ হওয়ায় বন্যায় ধানের ক্ষতি হয়নি জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, পাট, ডাল ও শাকসবজির ক্ষতি হয়েছে। আমন ধানের বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, কৃষি মন্ত্রণালয় উঁচু জায়গায় আমনের বীজতলা করে কৃষকদের বিনামূল্যে তা সরবরাহ করবে।

ত্রাণ কার্যক্রম নিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আক্রান্ত এলাকায় চার হাজার ৮৫০ টন চাল বিতরণ এবং এক কোটি ৯১ লাখ টাকা নগদ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে ৩৫ হাজার ৮২২ প্যাকেট। শিশুখাদ্য কেনা বাবদ ২১ লাখ ও পশু খাদ্যের জন্য ২১ লাখ টাকা খরচ করা হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

বন্যায় ১৮ জেলা প্লাবিত, ৮ জনের মৃত্যু

আপডেট টাইম : ০৫:০৬:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জুলাই ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ এখন পর্যন্ত বন্যায় দেশের ১৮ জেলা প্লাবিত হয়েছে জানিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেছেন, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় পদ্মা অববাহিকা এলাকায় পানি বাড়বে।

তিনি জানান, প্লাবিত জেলাগুলোর উপজেলা ৯২টি ও ৫৩৫টি ইউনিয়নে বন্যায় মোট ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ২২ লাখ ৪৬ হাজার ৪৭২ জন। বন্যায় জামালপুরে চারজন এবং লালমনিরহাট, সুনামগগঞ্জ, সিলেট ও টাঙ্গাইলে একজন করে মোট আটজন মারা গেছেন। পানিবন্দি ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৩৭৬টি পরিবার।

বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) সচিবালয়ে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান প্রতিমন্ত্রী। এ সময় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব মো. মোহসীন উপস্থিতি ছিলেন।

বন্যায় জামালপুরে চারজন এবং লালমনিরহাট, সুনামগগঞ্জ, সিলেট ও টাঙ্গাইলে একজন করে মোট আটজন মারা গেছেন জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এবারের বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হবে না বলে আমরা আশা করছি। কারণ নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। যেসব নদীর পানি বাড়ছে সেগুলোর পানি আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কমতে শুরু করবে বলে পূর্বাভাস রয়েছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের প্রতিবেদন তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি স্থিতিশীল রয়েছে। অপরদিকে যমুনা নদীর পানি বাড়ছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি কমতে শুরু করবে এবং যমুনা নদীর পানি স্থিতিশীল হবে।

তিনি বলেন, গঙ্গা-পদ্মার নদীর পানি বাড়ছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত এ পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। কুশিয়ারা ছাড়া উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনার প্রধান নদীগুলোর পানি কমছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।

আগামী ২৪ ঘণ্টায় সিলেট, সুনামগঞ্জ ও কুড়িগ্রাম জেলার বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হতে পারে। অপরদিকে গাইবান্ধা, বগুড়া, জামালপুর, নাটোর ও নওগাঁ জেলার বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে। ‘আগামী ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরিয়তপুর, রাজবাড়ী ও ঢাকার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হতে পারে।’

বন্যায় আক্রান্ত ১২ জেলায় এক হাজার ৫৪৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে জানিয়ে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে ৩০ হাজার ৭০৫ জন মানুষ এবং ৫৬ হাজার ৩১টি গবাদিপশু আশ্রয় নিয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে আনসার, গ্রাম পুলিশ, স্বেচ্ছাসেবক ও এনজিও প্রতিনিধিরা কাজ করছেন।

বন্যায়র কারণে সরকার ৫৯৬টি মেডিকেল টিম গঠন করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, এরমধ্যে বর্তমানে ১৯৭টি টিম কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে রান্না করা খাবার দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, কোভিড-১৯ সংক্রমণের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে আশ্রয়কেন্দ্রে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে সবাইকে মাস্ক ব্যবহারের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

ধানকাটা শেষ হওয়ায় বন্যায় ধানের ক্ষতি হয়নি জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, পাট, ডাল ও শাকসবজির ক্ষতি হয়েছে। আমন ধানের বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, কৃষি মন্ত্রণালয় উঁচু জায়গায় আমনের বীজতলা করে কৃষকদের বিনামূল্যে তা সরবরাহ করবে।

ত্রাণ কার্যক্রম নিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আক্রান্ত এলাকায় চার হাজার ৮৫০ টন চাল বিতরণ এবং এক কোটি ৯১ লাখ টাকা নগদ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে ৩৫ হাজার ৮২২ প্যাকেট। শিশুখাদ্য কেনা বাবদ ২১ লাখ ও পশু খাদ্যের জন্য ২১ লাখ টাকা খরচ করা হয়েছে।