ঢাকা ১২:৫০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নতুন আসামি কারাগারে ঢুকলেই ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:১০:০৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ জুন ২০২০
  • ২১৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কারাবন্দিদের করোনামুক্ত রাখতে নানা ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। নতুন কোনও আসামি কারাগারে ঢুকলেই তাকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হচ্ছে।

সেই সঙ্গে কারও জ্বর, সর্দি, কাশি থাকলে প্রথমেই তার করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। আলাদা সেলে রেখে ডাক্তারের পরামর্শে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

প্রতিটি কারাগারে তৈরি করা হয়েছে মেডিকেল টিম ও আইসোলেশন ওয়ার্ড। ঢাকা কেন্দ্রীয়সহ দেশের সব কারাগারে বন্দিদের করোনামুক্ত রাখতে এ ধরনের বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

কারা প্রশাসন প্রত্যেক বন্দির জন্য তাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় তৈরি মাস্ক, স্যানিটাইজার, হ্যান্ডগ্লাভস, স্প্রে মেশিন, থার্মোমিটার ও হ্যান্ডওয়াশ সরবরাহ করছে।

সতর্কতার কারণে কারাবন্দিদের মধ্যে করোনা ছড়িয়ে পড়ছে না বলে জানায় কারা কর্তৃপক্ষ।

করোনার সংক্রমণ শুরুর পর আদালতের নির্দেশে এ পর্যন্ত প্রায় ১৯ হাজার নতুন আসামি দেশের বিভিন্ন কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সব মিলিয়ে এখন আসামি রয়েছেন ৭২ হাজারের মতো। ভার্চুয়াল আদালতের মাধ্যমে ৩৫ হাজার বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়।

কেন্দ্রীয় কারা অধিদফতরের মহাপরিদর্শক (আইজি-প্রিজন্স) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম মোস্তফা পাশা গণমাধ্যমকে বলেন, আমি এক কঠোর অনুশাসনের মধ্যে কারাগারে বন্দিদের রেখেছি। একজনের কাছ থেকে আরেকজন যেন আক্রান্ত না হয় সেজন্য সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছি। যে কারণে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারসহ দেশের প্রায় সব ক’টি কারাগারে কোনও সংক্রমণ নেই। জামিন না পাওয়া নতুন তিনজন বন্দি আক্রান্ত হন ঢাকার বাইরের কারাগারে। তবে তারাও এখন সুস্থ। তাদের সংস্পর্শে আসার কারণে কারাগারের বেশ কিছু প্রহরী করোনা আক্রান্ত হন বলে জানান তিনি।

ব্রিগেডিয়ার পাশা বলেন, আমি কারাগারে ঢোকার পথে ‘ফুটবাথ’ চালু করেছি, যাতে করে নতুন আসা আসামিরা পা ভিজিয়ে ভেতরে ঢুকতে পারে। করোনা মহামারী দেখা দিলে ২৪ মার্চ থেকে আসামিদের আদালতে পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছি। বর্তমান পরিস্থিতিতে বন্দিদের স্বজনরা দেখা করতে পারছেন না। এ কারণে বন্দিরা পাঁচ মিনিট করে কাছের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পাচ্ছেন।

তিনি জানান, কক্সবাজার ছাড়া সব কারাগারেই করোনা উপসর্গ দেখা দিলে যেকোনও বন্দিকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে রাখার ব্যবস্থা আছে। দেশে বর্তমানে ৬৮টি কারাগার রয়েছে। গত তিন মাসে ১২৮ জন কারারক্ষী করোনায় আক্রান্ত হন। তাদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৭৮ জন।

কারা মহাপরিদর্শক আরও জানান, ২৫ এপ্রিল পেরুর একটি কারাগারে দাঙ্গায় ৯ জন বন্দি নিহত হয় এবং এ ঘটনায় ৬৭ জন কারারক্ষী আহত হয়। ভারতের কলকাতার দমদম কেন্দ্রীয় কারাগারে করোনা নিয়ে উদ্বিগ্ন বন্দিদের সঙ্গে কারা কর্মচারীদের সংঘর্ষে এক কয়েদির মৃত্যু হয়। ৩০ মার্চ থাইল্যান্ডের একটি কারাগারে করোনাভাইরাস আতঙ্কে বড় ধরনের দাঙ্গা হয়।

২৩ মার্চ কলম্বিয়ার বোগোটার একটি কারাগারে করোনা ভাইরাস আতঙ্কে সৃষ্ট দাঙ্গায় অন্তত ২৩ জন নিহত হয়েছিল।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

নতুন আসামি কারাগারে ঢুকলেই ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন

আপডেট টাইম : ১১:১০:০৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ জুন ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কারাবন্দিদের করোনামুক্ত রাখতে নানা ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। নতুন কোনও আসামি কারাগারে ঢুকলেই তাকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হচ্ছে।

সেই সঙ্গে কারও জ্বর, সর্দি, কাশি থাকলে প্রথমেই তার করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। আলাদা সেলে রেখে ডাক্তারের পরামর্শে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

প্রতিটি কারাগারে তৈরি করা হয়েছে মেডিকেল টিম ও আইসোলেশন ওয়ার্ড। ঢাকা কেন্দ্রীয়সহ দেশের সব কারাগারে বন্দিদের করোনামুক্ত রাখতে এ ধরনের বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

কারা প্রশাসন প্রত্যেক বন্দির জন্য তাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় তৈরি মাস্ক, স্যানিটাইজার, হ্যান্ডগ্লাভস, স্প্রে মেশিন, থার্মোমিটার ও হ্যান্ডওয়াশ সরবরাহ করছে।

সতর্কতার কারণে কারাবন্দিদের মধ্যে করোনা ছড়িয়ে পড়ছে না বলে জানায় কারা কর্তৃপক্ষ।

করোনার সংক্রমণ শুরুর পর আদালতের নির্দেশে এ পর্যন্ত প্রায় ১৯ হাজার নতুন আসামি দেশের বিভিন্ন কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সব মিলিয়ে এখন আসামি রয়েছেন ৭২ হাজারের মতো। ভার্চুয়াল আদালতের মাধ্যমে ৩৫ হাজার বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়।

কেন্দ্রীয় কারা অধিদফতরের মহাপরিদর্শক (আইজি-প্রিজন্স) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম মোস্তফা পাশা গণমাধ্যমকে বলেন, আমি এক কঠোর অনুশাসনের মধ্যে কারাগারে বন্দিদের রেখেছি। একজনের কাছ থেকে আরেকজন যেন আক্রান্ত না হয় সেজন্য সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছি। যে কারণে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারসহ দেশের প্রায় সব ক’টি কারাগারে কোনও সংক্রমণ নেই। জামিন না পাওয়া নতুন তিনজন বন্দি আক্রান্ত হন ঢাকার বাইরের কারাগারে। তবে তারাও এখন সুস্থ। তাদের সংস্পর্শে আসার কারণে কারাগারের বেশ কিছু প্রহরী করোনা আক্রান্ত হন বলে জানান তিনি।

ব্রিগেডিয়ার পাশা বলেন, আমি কারাগারে ঢোকার পথে ‘ফুটবাথ’ চালু করেছি, যাতে করে নতুন আসা আসামিরা পা ভিজিয়ে ভেতরে ঢুকতে পারে। করোনা মহামারী দেখা দিলে ২৪ মার্চ থেকে আসামিদের আদালতে পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছি। বর্তমান পরিস্থিতিতে বন্দিদের স্বজনরা দেখা করতে পারছেন না। এ কারণে বন্দিরা পাঁচ মিনিট করে কাছের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পাচ্ছেন।

তিনি জানান, কক্সবাজার ছাড়া সব কারাগারেই করোনা উপসর্গ দেখা দিলে যেকোনও বন্দিকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে রাখার ব্যবস্থা আছে। দেশে বর্তমানে ৬৮টি কারাগার রয়েছে। গত তিন মাসে ১২৮ জন কারারক্ষী করোনায় আক্রান্ত হন। তাদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৭৮ জন।

কারা মহাপরিদর্শক আরও জানান, ২৫ এপ্রিল পেরুর একটি কারাগারে দাঙ্গায় ৯ জন বন্দি নিহত হয় এবং এ ঘটনায় ৬৭ জন কারারক্ষী আহত হয়। ভারতের কলকাতার দমদম কেন্দ্রীয় কারাগারে করোনা নিয়ে উদ্বিগ্ন বন্দিদের সঙ্গে কারা কর্মচারীদের সংঘর্ষে এক কয়েদির মৃত্যু হয়। ৩০ মার্চ থাইল্যান্ডের একটি কারাগারে করোনাভাইরাস আতঙ্কে বড় ধরনের দাঙ্গা হয়।

২৩ মার্চ কলম্বিয়ার বোগোটার একটি কারাগারে করোনা ভাইরাস আতঙ্কে সৃষ্ট দাঙ্গায় অন্তত ২৩ জন নিহত হয়েছিল।