দুর্নীতি রাজনীতিকে খেয়ে ফেলেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক এ কে আজাদ চৌধুরী।
রবিবার দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আয়োজিত দুর্নীতিবিরোধী বিতর্ক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠান হয়।
দুর্নীতিবিরোধী বিতর্ক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এ কে আজাদ চৌধুরী বলেন, ‘কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এলেই তখন সেটাকে রাজনীতিকরণ করা হয়। বলা হয়, এগুলো ষড়যন্ত্র করে করা। তখন মনে হয়, ওই সব রাজনীতিবিদ ধোয়া তুলসী পাতা। আর এ কারণেই রাজনীতিকে খেয়ে ফেলছে দুর্নীতি।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশ দুর্নীতির সুচকে চারবার প্রথম হয়েছে। যদিও ওই সূচক নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে। তবে এ কথা সত্যি, কিছু কিছু লোকের জন্যই বাংলাদেশের এমন বদনাম সহ্য করতে হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদ্য বিদায়ী এই চেয়ারম্যান বলেন, দুর্নীতিবাজরা মানুষের সঙ্গে প্রতারণা ও নীতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে আদর্শিক অবস্থানে থেকে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। সাময়িকভাবে আরাম আয়েশ করার জন্যই মানুষ দুর্নীতি করে—এমন কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, যে দেশ ৩০ লাখ তাজা প্রাণের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জন করতে পারে; সে দেশে আরাম আয়েশের মতো ক্ষুদ্র স্বার্থ ত্যাগ করা মোটেই অসম্ভব নয়।
দুদককে একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে উল্লেখ করে আজাদ চৌধুরী বলেন, দুর্নীতিবাজরা যদিও আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে বেরিয়ে আসে; তার পরও ওই সব লোকদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স দেখাতে হবে। মনে রাখা দরকার, নৈতিকতা হলো সবচেয়ে বড় পুরস্কার।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে দুদক চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামান বলেন, ‘স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের নিয়ে সততা সংঘ গঠন করে দুর্নীতি প্রতিরোধে এগিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু কেউ কেউ সমালোচনা করছেন। তবে আমরা অত্যন্ত আশাবাদী।’
দুদক কমিশনার (তদন্ত) মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, দুর্নীতি প্রতিরোধ সপ্তাহ উপলক্ষে এই বিতর্ক প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়েছে। যাতে এর মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে দুর্নীতিবিরোধী মনোভাব তৈরি হয়।
অনুষ্ঠানে বিতর্ক প্রতিযোগিতায় মাধ্যমিক পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন সিরাজগঞ্জ জেলা দল ও রানারআপ চাঁদপুর জেলা দল এবং উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন বাগেরহাট জেলা দল ও রানারআপ শেরপুর জেলা দলকে পুরস্কার প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে দুদক কমিশনার (অনুসন্ধান) নাসিরউদ্দীন আহমেদ, সচিব মো. মাকসুদুল হাসান খানসহ দুদকের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।