বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ১৯৯৬ সালে সরকারে থেকে নির্বাচন করে ক্ষমতায় থাকার স্বপ্ন দেখেছিল কিন্তু দেড় মাসের বেশি টিকতে পারেনি। এদিকে ২০১৪ সালে ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে প্রায় ২ বছর ধরে অবিচল আস্থার সঙ্গে দেশ পরিচালনা করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে এভাবে কি হাসিনা পুরো ৫ বছর ক্ষমতায় থাকতে পারবেন, না খালেদা্র মতো ক্ষমতা ছেড়ে নির্বাচন দিবেন?
এ প্রশ্ন নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছে দেশ-বিদেশের সবাই। আর এটা থাকবে ততদিন, যতদিন এ সরকার ক্ষমতায় থাকবেন। কারণ, এভাবে ক্ষমতায় থাকা মানে আতঙ্কের মধ্যে থাকা। সত্যিকার অর্থে কোন সময় কি হয়? তা সরকার নিজেও জানেনা। আর এর জ্বলন্ত প্রমাণ হলো ১৯৯৬ সালের বিএনপির সেই নির্বাচন।
১৯৯৬ সালের নির্বাচনে বেশ সাহসের সঙ্গে বীরত্ব দেখিয়ে নির্বাচন করেছিলেন বিএনপি প্রধান কিন্তু পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের দুর্বার আন্দোলন, বিদেশী চাপ, রাজনীতিবিদ ও সুশীল সমাজের সমালোচনা ও সাধারণ জনগণের অনীহার কারণে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি।
তবে ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে বিদেশী চাপ, আলোচনা-সমালোচনা, জনগণ চাইছে কি, চাইছে না কোন কিছুরই তোয়াক্কা না করে বীরের মতো ক্ষমতায় রয়েছেন। এখন প্রশ্ন হলো এভাবে আসলেই কি ক্ষমতায় থাকা যায়? না শেখ হাসিনা বড় ধরনের ভুল বাঘের পিঠে উঠে আর নামতে পারছেন না।
আমার জানা মতে, এরশাদ, খালেদা জিয়াসহ পৃথিবীর ইতিহাসে কোন সরকারই দমন-পীড়ন চালিয়ে ক্ষমতায় থাকতে পারেন নি। আর বাংলাদেশে তো পারবেই না। কারণ ৩০ লাখ মানুষের জীবনের বিনিময় পাওয়া এই বাংলার মানুষ আর যাই, সহ্য করুক না কেন? কোন অন্যায় সহ্য করবে না। এর প্রমাণ ১৯৭১ সালেই বাঙালী দিয়েছে। এখন প্রশ্ন হলো এরশাদ, খালেদা পারেন নি। শেখ হাসিনা কি পারবেন, আর পারলেও তা কত দিন?
আমার সাধারণ জ্ঞান মতে, এরশাদ ও খালেদা জিয়ার চেয়ে শেখ হাসিনা একটু বেশিই পারবেন। কারণ, রাজনৈতিক জ্ঞান ও শক্তির দিক থেকে আওয়ামী লীগের সামনে বাংলাদেশে কেউ নেই। এর প্রমাণ তো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমেই দিয়ে গেছেন।
তবে কে কত দিন ক্ষমতায় ছিল, আছে, থাকবে? সে নিয়ে আমার মাথা ব্যথা নেই। তবে একজন মানুষ হিসেবে খুবই খারাপ লাগছে এজন্যে, স্বাধীন দেশে জম্ম নিয়ে যদি দেশের সর্বত্র শোনা যায়- আমি আসলে কি করবো, একটা ব্যবসাও শুরু করতে পারছি না। কোন কিছুতেই নিরাপত্তা পাচ্ছি না। কোন সময় খুন হই জানিনা। দেশে কি হবে, কোন সময় এ সরকার চলে যাবে। আবার কে ক্ষমতায় আসবে, সে এসে কি করবে। সব কিছুতে এরকম নিরাপত্তা হীনাতা সত্যিই আমাদের জন্য খুবই কষ্টদ্বায়ক, দুর্ভাগ্যজনক এবং লজ্জাজনক।