ঢাকা ০৬:৩৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ২১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যত গর্জে, তত বর্ষে না

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:১৩:৪৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৯ ডিসেম্বর ২০১৫
  • ৩৮০ বার

যত গর্জে, তত বর্ষে না মুসা বিন শমসের বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামান। তিনি যতটা বলেছেন ততটা সঠিক নয়। তিনি জানান, ধন-সম্পদ অর্জনের বিষয়ে আলোচিত ব্যবসায়ী ও ড্যাটকো গ্রুপের চেয়ারম্যান ড. মুসা বিন শমসের (প্রিন্স মুসা) দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) যতটা বলেছেন ততটা সঠিক নয়। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এমন মন্তব্য করেন। দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুদকের কাছে তিনি বিশাল জমি-জমার হিসাব দিয়েছেন। তবে কোনো জায়গায়ই তার দখলে নেই। বিদেশে আটকে থাকা ১২ বিলিয়ন ডলারের যে তথ্য দিয়েছেন, সেখান থেকে সে তথ্যও পাচ্ছি না। আবার তিনিও কিছু দিতে পারছে না। তিনি বলেন, আমরা খোঁজ-খবর নিয়ে দেখেছি, তেমন কিছু নেই তার। যতটা না করেছেন, তার চেয়ে বেশি বলেছেন তিনি। দুদক সূত্র জানায়, মুসা বিন শমসেরকে এর আগে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও তার কাছ থেকে সুইস ব্যাংকের হিসাব নম্বর জানা যায়নি। কমিশনে মুসার জমা দেয়া সম্পদবিবরণীতেও এ তথ্য নেই। সুইস ব্যাংকের ওই হিসাব নম্বর না পাওয়ায় সুনির্দিষ্ট তথ্য চেয়ে এমএলএআর পাঠাতে পারছে না দুদক। শিগগিরই সুইস ব্যাংকের ওই হিসাব নম্বরটি জানতে তাকে আবারো জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। সূত্র জানায়, চলতি বছরের ৭ জুন দুদকে সম্পদবিবরণী জমা দেন মুসা বিন শমসের। সম্পদ বিবরণীতেসুইস ব্যাংকে তার ১২ বিলিয়ন ডলার (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৯৩ হাজার ৬০০ কোটি- প্রতি ডলার ৭৮ টাকা হিসাবে) ফ্রিজ অবস্থায় থাকার কথা উল্লেখ করেন। সুইস ব্যাংকে ৯০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৭০০ কোটি) অলঙ্কার জমার তথ্য দেন তিনি। দেশে তার সম্পদের মধ্যে গুলশান ও বনানীতে দুটি বাড়ি, সাভার ও গাজীপুরে এক হাজার ২০০ বিঘা জমির কথাও সম্পদবিবরণীতে উল্লেখ করা হয়। প্রাথমিক অনুসন্ধানে মুসার বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া গেলে চলতি বছরের ১৯ মে তার বিরুদ্ধে সম্পদবিবরণী দাখিলের নোটিস জারি করে দুদক। ২০১১ সালে মুসার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। ওই সময় বিজনেস ম্যাগাজিন ফোর্বস’র প্রতিবেদন বিবেচনায় নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করা হয়। তবে অজ্ঞাত কারণে দুদকের ওই অনুসন্ধান আলোর মুখ দেখেনি। তিন বছর পর ২০১৪ সালের শেষের দিকে ‘বিজনেস এশিয়া’ ম্যাগাজিনের প্রতিবেদন বিবেচনায় নিয়ে ফের নতুন করে অনুসন্ধানে নামে দুদক। ২০১৪ সালের ৩ নভেম্বর দুদকের পরিচালক মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলীকে অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেয়া হয়। ওই বছরের ৪ ডিসেম্বর শমসের বিন মুসাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিস পাঠায় দুদক। ১৮ ডিসেম্বর হীরার জুতা পরে দুদকের জিজ্ঞাসাবাদে হাজির হন তিনি। সে সময় সঙ্গে ছিল নারী-পুরুষের ৮০ জনের এক দেহরক্ষীর বহর। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সুইস ব্যাংকে জব্দ করা অর্থ ফেরত পেলে পদ্মা সেতু নির্মাণসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করার কথা উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান মুসা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

যত গর্জে, তত বর্ষে না

আপডেট টাইম : ১২:১৩:৪৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৯ ডিসেম্বর ২০১৫

যত গর্জে, তত বর্ষে না মুসা বিন শমসের বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামান। তিনি যতটা বলেছেন ততটা সঠিক নয়। তিনি জানান, ধন-সম্পদ অর্জনের বিষয়ে আলোচিত ব্যবসায়ী ও ড্যাটকো গ্রুপের চেয়ারম্যান ড. মুসা বিন শমসের (প্রিন্স মুসা) দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) যতটা বলেছেন ততটা সঠিক নয়। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এমন মন্তব্য করেন। দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুদকের কাছে তিনি বিশাল জমি-জমার হিসাব দিয়েছেন। তবে কোনো জায়গায়ই তার দখলে নেই। বিদেশে আটকে থাকা ১২ বিলিয়ন ডলারের যে তথ্য দিয়েছেন, সেখান থেকে সে তথ্যও পাচ্ছি না। আবার তিনিও কিছু দিতে পারছে না। তিনি বলেন, আমরা খোঁজ-খবর নিয়ে দেখেছি, তেমন কিছু নেই তার। যতটা না করেছেন, তার চেয়ে বেশি বলেছেন তিনি। দুদক সূত্র জানায়, মুসা বিন শমসেরকে এর আগে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও তার কাছ থেকে সুইস ব্যাংকের হিসাব নম্বর জানা যায়নি। কমিশনে মুসার জমা দেয়া সম্পদবিবরণীতেও এ তথ্য নেই। সুইস ব্যাংকের ওই হিসাব নম্বর না পাওয়ায় সুনির্দিষ্ট তথ্য চেয়ে এমএলএআর পাঠাতে পারছে না দুদক। শিগগিরই সুইস ব্যাংকের ওই হিসাব নম্বরটি জানতে তাকে আবারো জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। সূত্র জানায়, চলতি বছরের ৭ জুন দুদকে সম্পদবিবরণী জমা দেন মুসা বিন শমসের। সম্পদ বিবরণীতেসুইস ব্যাংকে তার ১২ বিলিয়ন ডলার (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৯৩ হাজার ৬০০ কোটি- প্রতি ডলার ৭৮ টাকা হিসাবে) ফ্রিজ অবস্থায় থাকার কথা উল্লেখ করেন। সুইস ব্যাংকে ৯০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৭০০ কোটি) অলঙ্কার জমার তথ্য দেন তিনি। দেশে তার সম্পদের মধ্যে গুলশান ও বনানীতে দুটি বাড়ি, সাভার ও গাজীপুরে এক হাজার ২০০ বিঘা জমির কথাও সম্পদবিবরণীতে উল্লেখ করা হয়। প্রাথমিক অনুসন্ধানে মুসার বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া গেলে চলতি বছরের ১৯ মে তার বিরুদ্ধে সম্পদবিবরণী দাখিলের নোটিস জারি করে দুদক। ২০১১ সালে মুসার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। ওই সময় বিজনেস ম্যাগাজিন ফোর্বস’র প্রতিবেদন বিবেচনায় নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করা হয়। তবে অজ্ঞাত কারণে দুদকের ওই অনুসন্ধান আলোর মুখ দেখেনি। তিন বছর পর ২০১৪ সালের শেষের দিকে ‘বিজনেস এশিয়া’ ম্যাগাজিনের প্রতিবেদন বিবেচনায় নিয়ে ফের নতুন করে অনুসন্ধানে নামে দুদক। ২০১৪ সালের ৩ নভেম্বর দুদকের পরিচালক মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলীকে অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেয়া হয়। ওই বছরের ৪ ডিসেম্বর শমসের বিন মুসাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিস পাঠায় দুদক। ১৮ ডিসেম্বর হীরার জুতা পরে দুদকের জিজ্ঞাসাবাদে হাজির হন তিনি। সে সময় সঙ্গে ছিল নারী-পুরুষের ৮০ জনের এক দেহরক্ষীর বহর। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সুইস ব্যাংকে জব্দ করা অর্থ ফেরত পেলে পদ্মা সেতু নির্মাণসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করার কথা উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান মুসা।