হাওর বার্তা ডেস্কঃ দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে মাল্টা চাষ। এখনাকার মাটি ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মাল্টার আবাদ ভালো হয়েছে এবং দাম ভালো পাওয়ায় মাল্টা চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের।
স্থানীয় কৃষি অফিস বলছে, মাল্টা বারি-১ জাতের প্রদর্শনী বাগান করা হয়েছে, মাল্টা চাষে চাষিদের উদ্বুদ্ধ করতে পরামর্শ ও সহযোগীতা প্রদান করা হচ্ছে।
দু’বছর আগে স্থানীয় কৃষি অফিসের উদ্যোগে কৃষকদের ৫ বিঘা জমিতে বারি-১ জাতের সুস্বাদু মাল্টার প্রদর্শনী বাগান করা হয়। কম খরচে ফলন ভালো ও লাভ বেশি হওয়ায় উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বাণিজ্যিকভাবে এ বছর ৭ হেক্টর জমিতে মাল্টা চাষ শুরু করেছে কৃষকরা।
প্রায় ১০টন মাল্টা উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা নিরুপণ করেছে স্থানীয় কৃষি অধিদফতর। এদিকে মাল্টা বিক্রি হচ্ছে ১শ ৪০ টাকা থেকে ১শ ৫০ টাকা প্রতি কেজি দরে। এ বছরে সব বাগানেই বিপুল পরিমাণ মাল্টা ধরেছে এবং আয় করবে ভালো। এদিকে বেকার যুবকেরা মাল্টা চাষে আগ্রহ প্রকাশ করছে।
এদিকে মাল্টা বাগানে ফলের উৎপাদনের পাশা পাশি মাল্টার চারা উৎপাদন করছে কৃষকরা। বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা চারা কিনছেন এখান থেকে। মাল্টা চাষে কৃষকদের কৃষি বিভাগ থেকে সব বিষয়ে পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে।
চলতি বছরে ভাল ফলন হয়েছে। ফলে এ বছরে ভাল লাভ হবে। মাল্টাতে লাভ হওয়ায় মাল্টা গাছের চারার চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন উপজেলা থেকে এসে চারা কিনছেন কৃষকরা। চারা বিক্রি করেও বেশ ভাল আয় করছেন বাগানিরা।
কৃষকরা বলছেন, সরকারিভাবে ঋণ সুবিধাসহ সার্বিক সহযোগীতা পেলে উৎপাদিত মাল্টা চাষ প্রসারে ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারবে উপজেলার কৃষকরা।
মাল্টা চাষি আবু সাঈদ বলেন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় উপজেলায় প্রথম মাল্টা চাষ শুরু করি। এখন তিন একর জমি মাল্টা চাষ করছি। গত বছর থেকে মাল্টার ফল আসতে শুরু করেছে।
এ বছর বিপুল পরিমাণ ফল এসেছে। এরইমধ্যেই মাল্টা পাকা শুরু করেছে। বর্তমান বাজারে যে পরিমাণ মাল্টা দাম রয়েছে তাতে করে এ বছর মাল্টা বাজারে বিক্রি করে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ।
উপজেলা মাল্টা চাষি জাহাঙ্গীর আলম ও মোহাম্মদ আলী জানান, আবু সাঈদের মাল্টার বাগান দেখে এই বছর মাল্টার বাণিজ্যিক ভাবে চাষ শুরু করেছি। মাল্টার বাগানে তেমন বেশি রাসায়নিক সারের প্রয়োজন হয় না। মাল্টার ফুল আসার আগে জৈব সারের সঙ্গে স্বল্প পরিমাণে রাসায়নিক সার প্রয়োগ করতে হয়। মাল্টার বাগানে পরিচর্চা করেই ভাল মানের ফল পাওয়া যায় ।
ঘোড়াঘাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা একলাছ হোসেন সরকার বলেন, উপজেলার মাটি মাল্টা চাষের জন্য বেশ উপযুক্ত। তাই এই উপজেলার কিছু চাষিদেরকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মাল্টা চাষে উদ্ধুদ্ধ করা হয়েছে।
এই উপজেলার মাল্টা পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের মাল্টার চেয়েও বেশি সুস্বাদু ও বেশি মিষ্টি হচ্ছে। আগামী দুই বছরের মধ্যে এই উপজেলার মাল্টা দিয়ে দেশীয় মাল্টার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বাইরে রফতানি করা সম্ভব হবে ।