ঢাকা ১২:০৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বোরো ছেড়ে সয়াবিনে ঝুঁকছেন কৃষকরা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৩:৪০:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২০
  • ৩৪৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সয়াবিনের রাজধানী’ খ্যাত লক্ষ্মীপুরের রায়পুর। দেশের মোট উৎপাদিত সয়াবিনের বড় একটি অংশ এ উপজেলায় উৎপাদিত হয়। তাই বোরো ধানের চাষ ছেড়ে সয়াবিন আবাদে ঝুঁকছেন অনেক কৃষক।

কৃষকদের অভিযোগ, সার, কীটনাশক, জ্বালানি, সেচ সংকটসহ কৃষি উপকরণের মূল্য ও শ্রমিকের মজুরি বাড়ায় ধান আবাদ করা যাচ্ছে না। এ বছর উপজেলায় তিন হাজার ৮৪৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হচ্ছে না।

উপজেলা কৃষি কার্যালয়ের তথ্যমতে, উপজেলা ও পৌরশহরে ১০ হাজার ৭৪৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত ছয় হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়। বিগত বছরের চেয়ে এবার অস্বাভাবিক হারে কমে যায় এ আবাদ। পাঁচ বছর ধরে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা পুরণ না হলেও প্রায় তিন গুণ বেড়েছে সয়াবিনের আবাদ।

উপজেলার হায়দরগঞ্জ এলাকার কৃষক তোফায়েল বলেন, ডিজেল ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর অজুহাতে সেচের খরচ একর প্রতি এক হাজার টাকা করে বেশি নিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। তাই লোকসানের পরিমাণ আগের চেয়ে বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় বোরো জমিতে সয়াবিনসহ বিভিন্ন ফসল আবাদ করেছেন কৃষকরা।

চরপাতা গ্রামের কৃষক মো. হানিফ বলেন, ধান আবাদ করে এখন আর লাভ হয় না। এবার পাঁচ বিঘা জমিতে আমন ধান আবাদ করে খরচের টাকাও তুলতে পারিনি। বোরো ধান আবাদেও মনে হয় লোকসান গুনতে হবে। তাই এখন সয়াবিসহ অন্য আবাদের কথা ভাবছি।

চরমোহনা গ্রামের কৃষক দুলাল হোসেন বলেন, বেশি দামে চারা কেনা, পানি, সার, ওষুধসহ সব মিলিয়ে মণপ্রতি ধান উৎপাদন খরচ হবে কমপক্ষে ৯০০ থেকে এক হাজার টাকা। বর্তমানে বোরো চাষে ব্যয় অনেক বেড়ে গেছে। তাই জমিতে সয়াবিন চাষ করা হবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হোসেন শহীদ সরোয়ারদী বলেন, বোরো আবাদের জন্য সার্বক্ষণিক কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। তবে উৎপাদন ব্যয় বাড়ায় ও লাভজনক হবে না বলে যুক্তি দেখিয়ে কৃষকরা বোরো আবাদে আগ্রহ কম দেখাচ্ছেন। তারপরও লক্ষ্যমাত্রা সঠিকভাবে পুরণ হচ্ছে। যেসব জমিতে বোরো আবাদ হয়নি সেগুলোতে সয়াবিনসহ বিভিন্ন ফসল আবাদের জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

বোরো ছেড়ে সয়াবিনে ঝুঁকছেন কৃষকরা

আপডেট টাইম : ০৩:৪০:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সয়াবিনের রাজধানী’ খ্যাত লক্ষ্মীপুরের রায়পুর। দেশের মোট উৎপাদিত সয়াবিনের বড় একটি অংশ এ উপজেলায় উৎপাদিত হয়। তাই বোরো ধানের চাষ ছেড়ে সয়াবিন আবাদে ঝুঁকছেন অনেক কৃষক।

কৃষকদের অভিযোগ, সার, কীটনাশক, জ্বালানি, সেচ সংকটসহ কৃষি উপকরণের মূল্য ও শ্রমিকের মজুরি বাড়ায় ধান আবাদ করা যাচ্ছে না। এ বছর উপজেলায় তিন হাজার ৮৪৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হচ্ছে না।

উপজেলা কৃষি কার্যালয়ের তথ্যমতে, উপজেলা ও পৌরশহরে ১০ হাজার ৭৪৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত ছয় হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়। বিগত বছরের চেয়ে এবার অস্বাভাবিক হারে কমে যায় এ আবাদ। পাঁচ বছর ধরে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা পুরণ না হলেও প্রায় তিন গুণ বেড়েছে সয়াবিনের আবাদ।

উপজেলার হায়দরগঞ্জ এলাকার কৃষক তোফায়েল বলেন, ডিজেল ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর অজুহাতে সেচের খরচ একর প্রতি এক হাজার টাকা করে বেশি নিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। তাই লোকসানের পরিমাণ আগের চেয়ে বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় বোরো জমিতে সয়াবিনসহ বিভিন্ন ফসল আবাদ করেছেন কৃষকরা।

চরপাতা গ্রামের কৃষক মো. হানিফ বলেন, ধান আবাদ করে এখন আর লাভ হয় না। এবার পাঁচ বিঘা জমিতে আমন ধান আবাদ করে খরচের টাকাও তুলতে পারিনি। বোরো ধান আবাদেও মনে হয় লোকসান গুনতে হবে। তাই এখন সয়াবিসহ অন্য আবাদের কথা ভাবছি।

চরমোহনা গ্রামের কৃষক দুলাল হোসেন বলেন, বেশি দামে চারা কেনা, পানি, সার, ওষুধসহ সব মিলিয়ে মণপ্রতি ধান উৎপাদন খরচ হবে কমপক্ষে ৯০০ থেকে এক হাজার টাকা। বর্তমানে বোরো চাষে ব্যয় অনেক বেড়ে গেছে। তাই জমিতে সয়াবিন চাষ করা হবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হোসেন শহীদ সরোয়ারদী বলেন, বোরো আবাদের জন্য সার্বক্ষণিক কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। তবে উৎপাদন ব্যয় বাড়ায় ও লাভজনক হবে না বলে যুক্তি দেখিয়ে কৃষকরা বোরো আবাদে আগ্রহ কম দেখাচ্ছেন। তারপরও লক্ষ্যমাত্রা সঠিকভাবে পুরণ হচ্ছে। যেসব জমিতে বোরো আবাদ হয়নি সেগুলোতে সয়াবিনসহ বিভিন্ন ফসল আবাদের জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।