ঢাকা ১০:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যগত রিপোর্ট উঠছে হাইকোর্টে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:১২:২৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২০
  • ২৪৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যগত তথ্যের প্রতিবেদন হাইকোর্টে পেশ করা হচ্ছে আজ (বৃহস্পতিবার)। হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুসারে গতকাল বুধবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রার জেনারেলের দফতরে জমা দেয়া হয়। প্রতিবেদনটি আজ বিচারপতি ওবায়দুল  হাসান এবং বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের ডিভিশন বেঞ্চে পেশ করার কথা রয়েছে। এ কারণে দেশবাসীর দৃষ্টি আজ উচ্চ আদালতের দিকে। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্টের জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সম্মতি দিয়েছেন কি-না, সম্মতি দিলে চিকিৎসা শুরু হয়েছে কি-না এবং শুরু হলে সর্বশেষ কি অবস্থা- তা জানাতে বিএসএমএমইউ ভিসিকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। ওই আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে পেশ করা হচ্ছে- ‘সর্বশেষ প্রতিবেদন’। হাইকোর্ট বিভাগের স্পেশাল অফিসার ব্যারিস্টার সাইফুর রহমান জানান, বুধবার সকালে বিএসএমএমইউ থেকে প্রতিবেদনটি আমরা হাতে পেয়েছি। (আজ) বৃহস্পতিবার এটি আদালতে পেশ করা হবে।

খালেদা জিয়ার আজকের জামিন- আবেদনের শুনানিকে কেন্দ্র করে উৎসুক দেশবাসীর দৃষ্টি আজ নিবদ্ধ হাইকোর্টে। বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে দিনের প্রথম কিংবা দ্বিতীয়ার্ধে এ প্রতিবেদন দাখিল করা হবে জানিয়েছে রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয় সূত্র। এ উপলক্ষে হাইকোর্টে নেয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আদালতের ৫টি প্রবেশদ্বারেই মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। আদালত অঙ্গনে বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি। সর্বশেষ স্বাস্থ্য প্রতিবেদন প্রসঙ্গে অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন গতকাল দুপুরে বলেন, আমরা চাই বেগম খালেদা জিয়ার জামিন, যাতে তিনি দেশের বাইরে গিয়ে উন্নত চিকিৎসা নিতে পারেন। বিএসএমএমইউর মেডিক্যাল বোর্ড নিজেরাই বলেছে, খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়টি ব্যতিক্রম ও স্পর্শকাতর। এই চিকিৎসার কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। এটি সামাল দেয়া এই মেডিক্যাল বোর্ডের পক্ষে সম্ভব নয়। আর এ চিকিৎসার জন্যই খালেদা জিয়াকে বিদেশ নিতে হবে। আমরা এ জিনিসটিই চাইছি আদালতের।

তিনি বলেন, সরকার বলছে, বিএসএমএমইউর চিকিৎসা উন্নতমানের। হাসপাতালের মান নিয়ে আমাদেরও দ্বি-মত নেই। কিন্তু খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়টি স্পর্শকাতর ও ঝুঁকিপূর্ণ। বিষয়টি নিয়ে খালেদা জিয়া শঙ্কিত। তাই বিদ্যমান মেডিক্যাল বোর্ড দ্বারা এই চিকিৎসা নিতে খালেদা জিয়া সম্মত নন।

এদিকে খালেদা জিয়ার জামিন শুনানি সম্পর্কে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)র অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান বলেন, খালেদা জিয়া যেই গ্রাউন্ডে জামিন চেয়েছেন- এই গ্রাউন্ডে কোনোভাবেই জামিন পেতে পারেন না। তিনি দন্ডপ্রাপ্ত। তার চাহিদা অনুযায়ী চিকিৎসাও চলছে। এ কারণে আমরা জামিনের বিরোধিতা করছি।

এদিকে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, আগের আবেদন আর এখনকার আবেদনের বক্তব্য একই। নতুন কিছু নেই। আপিল বিভাগ আদেশ দিয়েছিলেন খালেদা জিয়ার অনুমতি নিয়ে তার বায়োলজিক এজেন্ট নামের থেরাপি দিতে। খালেদা জিয়া অনুমতি না দেয়ায় ওই চিকিৎসা শুরু করা যাচ্ছে না। বোর্ড তার অনুমতির অপেক্ষায় আছে। তার চিকিৎসার জন্য যে ওষুধের কথা বলা হচ্ছে তা দেশেই উৎপাদিত হচ্ছে। আর কোন্ কোন্ তার স্বাস্থ্যের অবনতি হয়েছে সেটি- হাইকোর্টে করা জামিনের সর্বশেষ আবেদনে স্পষ্ট করে কিছু বলা হয়নি। বার বার জামিনের আবেদন করা হচ্ছে- শুধুমাত্র আদালতকে বিব্রত করার জন্য। তারা মানুষকে দেখাতে চায় যে, আদালত জামিন দিচ্ছে না। আদালত স্বাধীন নয়।

অবশ্য অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্যের পরপরই খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, আগের আবেদন আর এখনকার আবেদন এক নয়। আপিল বিভাগ আদেশ দিয়েছেন ২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর। কিন্তু এরপর কী হয়েছে তা জানি না। এর আগে আমরা আপিল বিভাগে আদালতে জামিনের আবেদন করেছিলাম। আপিল বিভাগ সেটি খারিজ করে দেন। তবে খালেদা জিয়া ইচ্ছে পোষণ করলে মেডিক্যাল বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী ‘অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্ট’ (উন্নত চিকিৎসা) করার নির্দেশনা দেন। কিন্তু দিনদিন খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবনতি হচ্ছে।

মেডিক্যাল রিপোর্ট সম্পর্কে জয়নুল আবেদীন বলেন, যে মেডিক্যাল থেকে রিপোর্টটি পাঠানো হয়েছে, এই মেডিক্যালটি হচ্ছে সরকারের কন্ট্রোলে (নিয়ন্ত্রণে)। তারপরও যদি দেখি সরকারের কোনো রকম প্রভাব পড়েছে, তাহলে আমরা আদালতকে বলব, মাননীয় আদালত, আপনারা তাকে (খালেদা জিয়া) হাজির করে দেখেন তার কী অবস্থা। প্রয়োজনে তাকে হাইকোর্টে হাজির করার আবেদন জানাব।

এরও আগে ১৮ ফেব্রুয়ারি জামিন আবেদন করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী সগীর হোসেন লিয়ন। গত বছরের ১২ ডিসেম্বর এ মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন পর্যবেক্ষণসহ খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ। তবে আবেদনকারী (খালেদা জিয়া) যদি সম্মতি দেন তাহলে বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী তার উন্নত চিকিৎসার জন্য পদক্ষেপ নিতে বলা হয়। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৫ বছরের কারাদন্ডে দন্ডিত হন খালেদা জিয়া। দুদকের আপিলের পর হাইকোর্টে সেটি বেড়ে ১০ বছর হয়। ২০১৮ সালের ১৮ নভেম্বর খালাস চেয়ে আপিল বিভাগে খালেদা জিয়া জামিন আবেদন করেন। সেই আবেদন এখনও আদালতে উপস্থাপন করেননি তার আইনজীবীরা।

প্রসঙ্গত: ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা করা হয়। ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে মামলাটি করে দুদক। তদন্ত শেষে ২০১২ সালে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ খালেদাসহ চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে দুদকের পক্ষেই রায় দেন আদালত। মামলায় দন্ডপ্রাপ্ত অপর তিন আসামি হলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, তার তৎকালীন একান্ত সচিব জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মরহুম সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যগত রিপোর্ট উঠছে হাইকোর্টে

আপডেট টাইম : ০৯:১২:২৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যগত তথ্যের প্রতিবেদন হাইকোর্টে পেশ করা হচ্ছে আজ (বৃহস্পতিবার)। হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুসারে গতকাল বুধবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রার জেনারেলের দফতরে জমা দেয়া হয়। প্রতিবেদনটি আজ বিচারপতি ওবায়দুল  হাসান এবং বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের ডিভিশন বেঞ্চে পেশ করার কথা রয়েছে। এ কারণে দেশবাসীর দৃষ্টি আজ উচ্চ আদালতের দিকে। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্টের জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সম্মতি দিয়েছেন কি-না, সম্মতি দিলে চিকিৎসা শুরু হয়েছে কি-না এবং শুরু হলে সর্বশেষ কি অবস্থা- তা জানাতে বিএসএমএমইউ ভিসিকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। ওই আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে পেশ করা হচ্ছে- ‘সর্বশেষ প্রতিবেদন’। হাইকোর্ট বিভাগের স্পেশাল অফিসার ব্যারিস্টার সাইফুর রহমান জানান, বুধবার সকালে বিএসএমএমইউ থেকে প্রতিবেদনটি আমরা হাতে পেয়েছি। (আজ) বৃহস্পতিবার এটি আদালতে পেশ করা হবে।

খালেদা জিয়ার আজকের জামিন- আবেদনের শুনানিকে কেন্দ্র করে উৎসুক দেশবাসীর দৃষ্টি আজ নিবদ্ধ হাইকোর্টে। বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে দিনের প্রথম কিংবা দ্বিতীয়ার্ধে এ প্রতিবেদন দাখিল করা হবে জানিয়েছে রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয় সূত্র। এ উপলক্ষে হাইকোর্টে নেয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আদালতের ৫টি প্রবেশদ্বারেই মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। আদালত অঙ্গনে বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি। সর্বশেষ স্বাস্থ্য প্রতিবেদন প্রসঙ্গে অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন গতকাল দুপুরে বলেন, আমরা চাই বেগম খালেদা জিয়ার জামিন, যাতে তিনি দেশের বাইরে গিয়ে উন্নত চিকিৎসা নিতে পারেন। বিএসএমএমইউর মেডিক্যাল বোর্ড নিজেরাই বলেছে, খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়টি ব্যতিক্রম ও স্পর্শকাতর। এই চিকিৎসার কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। এটি সামাল দেয়া এই মেডিক্যাল বোর্ডের পক্ষে সম্ভব নয়। আর এ চিকিৎসার জন্যই খালেদা জিয়াকে বিদেশ নিতে হবে। আমরা এ জিনিসটিই চাইছি আদালতের।

তিনি বলেন, সরকার বলছে, বিএসএমএমইউর চিকিৎসা উন্নতমানের। হাসপাতালের মান নিয়ে আমাদেরও দ্বি-মত নেই। কিন্তু খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়টি স্পর্শকাতর ও ঝুঁকিপূর্ণ। বিষয়টি নিয়ে খালেদা জিয়া শঙ্কিত। তাই বিদ্যমান মেডিক্যাল বোর্ড দ্বারা এই চিকিৎসা নিতে খালেদা জিয়া সম্মত নন।

এদিকে খালেদা জিয়ার জামিন শুনানি সম্পর্কে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)র অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান বলেন, খালেদা জিয়া যেই গ্রাউন্ডে জামিন চেয়েছেন- এই গ্রাউন্ডে কোনোভাবেই জামিন পেতে পারেন না। তিনি দন্ডপ্রাপ্ত। তার চাহিদা অনুযায়ী চিকিৎসাও চলছে। এ কারণে আমরা জামিনের বিরোধিতা করছি।

এদিকে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, আগের আবেদন আর এখনকার আবেদনের বক্তব্য একই। নতুন কিছু নেই। আপিল বিভাগ আদেশ দিয়েছিলেন খালেদা জিয়ার অনুমতি নিয়ে তার বায়োলজিক এজেন্ট নামের থেরাপি দিতে। খালেদা জিয়া অনুমতি না দেয়ায় ওই চিকিৎসা শুরু করা যাচ্ছে না। বোর্ড তার অনুমতির অপেক্ষায় আছে। তার চিকিৎসার জন্য যে ওষুধের কথা বলা হচ্ছে তা দেশেই উৎপাদিত হচ্ছে। আর কোন্ কোন্ তার স্বাস্থ্যের অবনতি হয়েছে সেটি- হাইকোর্টে করা জামিনের সর্বশেষ আবেদনে স্পষ্ট করে কিছু বলা হয়নি। বার বার জামিনের আবেদন করা হচ্ছে- শুধুমাত্র আদালতকে বিব্রত করার জন্য। তারা মানুষকে দেখাতে চায় যে, আদালত জামিন দিচ্ছে না। আদালত স্বাধীন নয়।

অবশ্য অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্যের পরপরই খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, আগের আবেদন আর এখনকার আবেদন এক নয়। আপিল বিভাগ আদেশ দিয়েছেন ২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর। কিন্তু এরপর কী হয়েছে তা জানি না। এর আগে আমরা আপিল বিভাগে আদালতে জামিনের আবেদন করেছিলাম। আপিল বিভাগ সেটি খারিজ করে দেন। তবে খালেদা জিয়া ইচ্ছে পোষণ করলে মেডিক্যাল বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী ‘অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্ট’ (উন্নত চিকিৎসা) করার নির্দেশনা দেন। কিন্তু দিনদিন খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবনতি হচ্ছে।

মেডিক্যাল রিপোর্ট সম্পর্কে জয়নুল আবেদীন বলেন, যে মেডিক্যাল থেকে রিপোর্টটি পাঠানো হয়েছে, এই মেডিক্যালটি হচ্ছে সরকারের কন্ট্রোলে (নিয়ন্ত্রণে)। তারপরও যদি দেখি সরকারের কোনো রকম প্রভাব পড়েছে, তাহলে আমরা আদালতকে বলব, মাননীয় আদালত, আপনারা তাকে (খালেদা জিয়া) হাজির করে দেখেন তার কী অবস্থা। প্রয়োজনে তাকে হাইকোর্টে হাজির করার আবেদন জানাব।

এরও আগে ১৮ ফেব্রুয়ারি জামিন আবেদন করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী সগীর হোসেন লিয়ন। গত বছরের ১২ ডিসেম্বর এ মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন পর্যবেক্ষণসহ খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ। তবে আবেদনকারী (খালেদা জিয়া) যদি সম্মতি দেন তাহলে বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী তার উন্নত চিকিৎসার জন্য পদক্ষেপ নিতে বলা হয়। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৫ বছরের কারাদন্ডে দন্ডিত হন খালেদা জিয়া। দুদকের আপিলের পর হাইকোর্টে সেটি বেড়ে ১০ বছর হয়। ২০১৮ সালের ১৮ নভেম্বর খালাস চেয়ে আপিল বিভাগে খালেদা জিয়া জামিন আবেদন করেন। সেই আবেদন এখনও আদালতে উপস্থাপন করেননি তার আইনজীবীরা।

প্রসঙ্গত: ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা করা হয়। ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে মামলাটি করে দুদক। তদন্ত শেষে ২০১২ সালে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ খালেদাসহ চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে দুদকের পক্ষেই রায় দেন আদালত। মামলায় দন্ডপ্রাপ্ত অপর তিন আসামি হলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, তার তৎকালীন একান্ত সচিব জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মরহুম সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।