হাওর বার্তা ডেস্কঃ অনৈতিক কর্মকাণ্ডসহ নানা অপকর্মের অভিযোগে গ্রেপ্তার শামীমা নূর পাপিয়াকে নরসিংদী জেলা যুব মহিলালীগের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। স্থানীয় নেতাদের তোপের মুখে তাকে ঢাকা থেকে জেলা যুব মহিলালীগের সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয় বলে দাবি করেছেন নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম হীরু (বীর প্রতীক)।
তিনি দাবি করেন, শামীমা নূর পাপিয়া লবিং করে ঢাকা থেকে জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ পান। ২০১৪ সালে সম্মেলন মঞ্চে স্থানীয় নেতাদের তোপের মুখে তৎকালীন সময় পাপিয়াকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করতে পারেনি কেন্দ্রীয় যুব মহিলা লীগ। পরে ঢাকায় গিয়ে পাপিয়াকে যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি ঘোষণা করা হয়।
সোমবার মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম হীরু বলেন, ‘যুব মহিলা লীগের কাউন্সিলের সময় আমি মঞ্চে বসে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি নাজমা আক্তারকে অনুরোধ করেছিলাম পাপিয়াকে কোনোভাবেই দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে না আনতে। তখন নাজমা আক্তার, বর্তমান শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন ভুইয়া আমার সঙ্গে একমত হয়েছিলেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল একমত না হওয়াতে আমার সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। পরে আমি নরসিংদীর কাউন্সিলে কমিটি ঘোষণা করতে দেইনি। পরে ঢাকা এসে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরে পাপিয়াকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি ঘোষণা করা হয়। কিন্তু সেটা কী কারণে আজও আমার অজানা রয়ে গেল।’
পাপিয়া ও তার স্বামী মতি সুমনের অপকর্মের দায় আওয়ামী লীগ নেবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যেখানে শামীমা নূর পাপিয়ার অপকর্মের দায় যুব মহিলা লীগ নিচ্ছে না সেখানে আওয়ামী লীগ দায় নেওয়ার প্রশ্নই আসে না। পাপিয়ার স্বামী মতি সুমন কার লোক, তাদের জন্ম কোথায় থেকে নরসিংদীবাসী জানে। আমি রাজনীতিতে আসার আগেই মতি সুমন ছিলেন প্রয়াত মেয়র লোকমানে হোসেনের দেহরক্ষী। মতি সুমনকে যারা তৈরি করেছে এ দায় তাদের আওয়ামী লীগের নয়। আর নরসিংদীর রাজনীতিতে সুমন ও পাপিয়া আমার অনুসারী না। ’
তিনি আরও বলেন, ‘বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমার নির্বাচনী প্রচার করতে চায় পাপিয়া ও সুমন। আমি বলেছি আমার নির্বাচনী প্রচারণা তোমাদের করতে হবে না। কারণ তারা ভোট চাইলে আমার ভোট আরও কমবে।’
পালিয়ে দেশত্যাগ করার সময় গত শনিবার রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে শামিমা নূর পাপিয়া (২৮) এবং তার স্বামী ও অপরাধের সহযোগী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমন (৩৮), সাব্বির খন্দকার (২৯), ও শেখ তায়্যিবাকে (২২) গ্রেপ্তার করে র্যাব।
গত রোববার রাজধানীর ইন্দিরা রোডের বিলাসবহুল একটি ভবনে পাপিয়া-সুমন দম্পতির দুটি ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে একটি বিদেশি পিস্তল, ২০টি গুলিসহ দুটি পিস্তলের ম্যাগাজিন, পাঁচ বোতল দামি মদ, নগদ ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা, যার বৈধ উৎস তারা দেখাতে পারেননি, তিনটি পাসপোর্ট, চেক বই, বিদেশি মুদ্রা, বিভিন্ন ব্যাংকের ১০টি এটিএম কার্ড উদ্ধার করা হয়।