ঢাকা ০২:৫০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

২৬ কোটি টাকার চিনি অবিক্রিত রেখেই শুরু কুষ্টিয়া চিনিকলে আখমাড়াই

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৩:২২:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ ডিসেম্বর ২০১৫
  • ৩৯২ বার

কুষ্টিয়া চিনিকলের গোডাউনে ২৬ কোটি ১লাখ ২২ হাজার টাকার ৭ হাজার ৬০ মেট্রিক টন চিনি গোডাউনে অবিক্রিত রেখেই শুক্রবার শুরু হতে যাচ্ছে নতুন বছরের ২০১৫-১৬ উৎপাদন মৌসুম।

বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প সংস্থার চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন প্রধান অতিথি হিসাবে মাড়াই মৌসুমের শুভ সূচনা করবেন। জানা যায়, এবারে ৮০হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ৫ হাজার আট’শ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নিয়ে শুরু হতে যাচ্ছে আখমাড়াই মৌসুম।

লক্ষ্যমাত্রায় প্রতি ১০০ কেজি আখ থেকে চিনির আহরণ হার গড়ে সাড়ে সাত কেজি ধরা হয়েছে। ইতিমধ্যে উৎপাদনের জন্য আখমাড়াই কাজ নির্বিঘœ করতে কারখানার রক্ষনাবেক্ষনের কাজসহ সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে অনুকুল আবহাওয়া ও আখচাষীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা থাকলে এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন চিনিকলের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।

জানা যায়, পর্যাপ্ত আখের অভাবে কুষ্টিয়া চিনিকল বর্তমানে ধারণ ক্ষমতার ২০ভাগ চিনিও উৎপাদন করতে পারছেনা। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ১৯৯৪-৯৫ উৎপাদন মৌসুমে যেখানে, ২লাখ ৪৭হাজার ৮শ’ ১ মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ১৯ হাজার ৬শ’ ৩১ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদন করেছে, সেক্ষেত্রে ২০১৪-১৫ মাড়াই মৌসুমে মাত্র ৫৬হাজার ৯শ’ মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ২হাজার ৯শ’ ৭ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদন করেছে কুষ্টিয়া চিনিকল।

লাগসই প্রযুক্তির ব্যবহারে ফলনশীল ও স্বল্পমেয়াদী আখেরজাত উদ্ভাবন, আখচাষীদের দাবি অনুযায়ী সামঞ্জস্যমূলক আখের মূল্যবৃদ্ধি এবং কর্তৃপক্ষ সময়মত আখের মূল্য পরিশোধ করতে না পারায় কৃষকদের মাঝে আখচাষে অনিহা দেখা দিয়েছে, ফলে পর্যাপ্ত আখের অভাবে কুষ্টিয়া চিনিকলে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উৎপাদন নিম্নের কোঠায় নেমে গেছে।

অন্যদিকে বেসরকারী চিনিকলগুলো কম শূল্কে র’সুগার আমদানি করায় দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব চিনিকলগুলো অসম বাজার প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারছেনা। যে কারণে চিনির গুনগতমান অপেক্ষাকৃত ভাল হওয়া সত্বেও সরকারী চিনিকলের উৎপাদিত চিনির মূল্য গত চার বছরে ৫ দফায় ৬০টাকা থেকে কমিয়ে ৩৭টাকা নির্ধারণ করেও চিনি বিক্রি নেই।

কিছু চিনি বিক্রি হলেও তার বেশির ভাগই অবসরে যাওয়া শ্রমিক-কর্মচারীদের পাওনা পরিশোধ আর পুলিশ, বিজিবি, সেনাবাহিনী ক্রেতা হিসাবে খরিদ করেছেন বলে জানা যায়। এভাবে বছরের পর বছর চিনি গোডাউনে অবিক্রিত অবস্থায় পড়ে থাকায় চিনির গুণগতমান কমে যাচ্ছে এবং কিছু চিনি নষ্ট হয়ে আর্থিক ক্ষতির পরিমানও বেড়ে যাচ্ছে কুষ্টিয়া চিনিকলে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

২৬ কোটি টাকার চিনি অবিক্রিত রেখেই শুরু কুষ্টিয়া চিনিকলে আখমাড়াই

আপডেট টাইম : ০৩:২২:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ ডিসেম্বর ২০১৫

কুষ্টিয়া চিনিকলের গোডাউনে ২৬ কোটি ১লাখ ২২ হাজার টাকার ৭ হাজার ৬০ মেট্রিক টন চিনি গোডাউনে অবিক্রিত রেখেই শুক্রবার শুরু হতে যাচ্ছে নতুন বছরের ২০১৫-১৬ উৎপাদন মৌসুম।

বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প সংস্থার চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন প্রধান অতিথি হিসাবে মাড়াই মৌসুমের শুভ সূচনা করবেন। জানা যায়, এবারে ৮০হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ৫ হাজার আট’শ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নিয়ে শুরু হতে যাচ্ছে আখমাড়াই মৌসুম।

লক্ষ্যমাত্রায় প্রতি ১০০ কেজি আখ থেকে চিনির আহরণ হার গড়ে সাড়ে সাত কেজি ধরা হয়েছে। ইতিমধ্যে উৎপাদনের জন্য আখমাড়াই কাজ নির্বিঘœ করতে কারখানার রক্ষনাবেক্ষনের কাজসহ সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে অনুকুল আবহাওয়া ও আখচাষীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা থাকলে এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন চিনিকলের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।

জানা যায়, পর্যাপ্ত আখের অভাবে কুষ্টিয়া চিনিকল বর্তমানে ধারণ ক্ষমতার ২০ভাগ চিনিও উৎপাদন করতে পারছেনা। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ১৯৯৪-৯৫ উৎপাদন মৌসুমে যেখানে, ২লাখ ৪৭হাজার ৮শ’ ১ মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ১৯ হাজার ৬শ’ ৩১ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদন করেছে, সেক্ষেত্রে ২০১৪-১৫ মাড়াই মৌসুমে মাত্র ৫৬হাজার ৯শ’ মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ২হাজার ৯শ’ ৭ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদন করেছে কুষ্টিয়া চিনিকল।

লাগসই প্রযুক্তির ব্যবহারে ফলনশীল ও স্বল্পমেয়াদী আখেরজাত উদ্ভাবন, আখচাষীদের দাবি অনুযায়ী সামঞ্জস্যমূলক আখের মূল্যবৃদ্ধি এবং কর্তৃপক্ষ সময়মত আখের মূল্য পরিশোধ করতে না পারায় কৃষকদের মাঝে আখচাষে অনিহা দেখা দিয়েছে, ফলে পর্যাপ্ত আখের অভাবে কুষ্টিয়া চিনিকলে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উৎপাদন নিম্নের কোঠায় নেমে গেছে।

অন্যদিকে বেসরকারী চিনিকলগুলো কম শূল্কে র’সুগার আমদানি করায় দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব চিনিকলগুলো অসম বাজার প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারছেনা। যে কারণে চিনির গুনগতমান অপেক্ষাকৃত ভাল হওয়া সত্বেও সরকারী চিনিকলের উৎপাদিত চিনির মূল্য গত চার বছরে ৫ দফায় ৬০টাকা থেকে কমিয়ে ৩৭টাকা নির্ধারণ করেও চিনি বিক্রি নেই।

কিছু চিনি বিক্রি হলেও তার বেশির ভাগই অবসরে যাওয়া শ্রমিক-কর্মচারীদের পাওনা পরিশোধ আর পুলিশ, বিজিবি, সেনাবাহিনী ক্রেতা হিসাবে খরিদ করেছেন বলে জানা যায়। এভাবে বছরের পর বছর চিনি গোডাউনে অবিক্রিত অবস্থায় পড়ে থাকায় চিনির গুণগতমান কমে যাচ্ছে এবং কিছু চিনি নষ্ট হয়ে আর্থিক ক্ষতির পরিমানও বেড়ে যাচ্ছে কুষ্টিয়া চিনিকলে।