অনলাইন গণমাধ্যম নিবন্ধন বিষয়ে সরকারের উদ্যোগের বিরোধিতা করেছে নিউজ পেপারস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব)। সংগঠনটি আশঙ্কা করছে, কমিশন গঠিত হওয়ার আগে সরকার অনলাইন গণমাধ্যমের নিবন্ধন বা পরিচালনার বিষয়গুলো নিজ এখতিয়ারে রাখলে এর ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ কঠোর হবে, যা মুক্ত সাংবাদিকতার অন্তরায় হয়ে উঠতে পারে। তা ছাড়া এই নিবন্ধনকে কেন্দ্র করে দলীয় পরিচয় দেখা, হয়রানি বা আর্থিক লেনদেনের মতো স্পর্শকাতর অভিযোগ ওঠাও দেশের আর্থসামাজিক বাস্তবতায় অসম্ভব ব্যাপার নয় বলে মনে করে নোয়াব।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে নোয়াব এসব আশঙ্কার কথা জানায়।
নোয়াব মনে করে, প্রচলিত আইন ও নীতিমালার আওতায় অনলাইন গণমাধ্যম পরিচালনা সম্ভব।
বিবৃতিতে বলা হয়, ছাপা পত্রিকাগুলো সরকারের সব নিয়ম মেনে চলছে। সময়ের প্রয়োজনে ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে ছাপা পত্রিকাগুলোর অনলাইন সংস্করণ রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে দেশের পাঠক ছাড়াও প্রবাসী বাঙালিরা তাৎক্ষণিক দেশের খবরাখবর জানতে পারছেন। তাই এসব পত্রিকার অনলাইন সংস্করণের জন্য আলাদা নিবন্ধন কোনোভাবেই যুক্তিসংগত নয়। আর এর প্রয়োজন নেই বলেও মনে করে নোয়াব।
নীতিমালা বা কমিশন হওয়ার আগে তথ্য মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী আদেশে অনলাইন পত্রিকার নিবন্ধন কার্যক্রম শুরুর ঘোষণাকে স্ববিরোধী ও উদ্দেশ্যমূলক বলে মনে করে নোয়াব। অনলাইন নীতিমালায় নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের কথা বলা হলেও ওই ‘কর্তৃপক্ষ’ (কমিশন) নির্ধারণ না করেই সরকার তথ্য অধিদপ্তরের কাছে নিবন্ধনের দায়িত্ব দিয়েছে, যা যুক্তিসংগত নয় বলে মনে করছে সংগঠনটি।
নোয়াব মনে করে, এই নীতিমালার সঙ্গে গণমাধ্যমের স্বাধীন মত প্রকাশের অধিকারসহ নতুন এই শিল্পের ভবিষ্যৎ জড়িত। তাই তাড়াহুড়ো না করে যৌক্তিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ও বাস্তবতার নিরিখে যেকোনো উদ্যোগ গ্রহণ করাই বাঞ্ছনীয়।
প্রসঙ্গত, গত ৬ আগস্ট অনলাইন নীতিমালার খসড়া তথ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। সেখানে জাতীয় সম্প্রচার কমিশনের মাধ্যমে অনলাইন গণমাধ্যম পরিচালনার কথা বলা হলেও এটি চূড়ান্ত হওয়ার আগেই তথ্য অধিদপ্তর এক তথ্য বিবরণীর মাধ্যমে অনলাইন পত্রিকার নিবন্ধন কার্যক্রম চালু করে। আবেদনের শেষ সময় ১৫ ডিসেম্বর।