আইন মানুষই তৈরি করেন। এটা কোনো ধর্মগ্রন্থ নয়। তাই এই আইন পরিবর্তন হওয়াটাও অসম্ভব কিছু নয়। তবে সেটি বিশেষভাবে কোনো একটা পক্ষের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হলেই তখন তৈরি হয় বিপত্তি। তেমনটি হয়েছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) সিলেট সুপারস্টার্সের ক্ষেত্রে। নিয়ম অনুযায়ী প্রত্যেক দলকে কোনো ম্যাচে ৪জন বিদেশী খেলোয়াড় নামাতে হবে। অথচ সোমবার চিটাগাং ভাইকিংসের বিপক্ষে সিলেটের হয়ে নেমেছেন দুজন বিদেশী। বিপিএলের টেকনিক্যাল কমিটির দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক ও মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস জানিয়েছেন, যা করা হয়েছে তা ক্রিকেটের স্বার্থেই হয়েছে।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে তামিম অভিযোগ করেছেন, টসের সময় যে টিম লিস্ট দেখেছেন পরে সেখানে পরিবর্তন করা হয়েছে। তাই ব্যাটিংয়ে নেমেও তিনি ওঠে গিয়েছিলেন। নিজের অবস্থান যৌক্তিক হিসেবেই তিনি উল্লেখ করেছেন।
টিম লিস্ট দেওয়ার পর প্রতিপক্ষকে অবহিত করা ছাড়া তা পরিবর্তনের সুযোগ নাই। অথচ নাম না থাকা সত্ত্বেও মাঠে নামানোর সময় রবি বোপারা ও জশোয়া কবকে একাদশে রেখেছিল সিলেট। এটিই মানতে পারেননি তামিম।
বিষয়টি নিয়ে ম্যাচ শুরুর আগেই অনেক দেনদরবার হয়েছে। জালাল ইউনুস জানিয়েছেন, প্রতিপক্ষ দলের অধিনায়কের একটা ক্ষমতা আছে। সে অনুমতি দিলে খেলোয়াড় পরিবর্তন করতে পারে। কোনো খেলোয়াড় ইনজুরিতে পরলে সাধারণত এই নিয়মেই খেলোয়াড় পরিবর্তন করা হয়। বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল চিটাগাং অধিনায়ক তামিমকে এই বিষয়টিই বুঝাতে চেয়েছিলেন, যাতে খেলার স্বার্থে তারা ছাড় দিয়ে সিলেটকে দুই বিদেশী মাঠে নামাতে দেয়। তবে এই প্রস্তাবে তামিম রাজি হননি।
তাই বাধ্য হয়েই দুজন বিদেশীকে নিয়ে খেলেছে সিলেট। যা ছিল নিয়ম বহির্ভূত। কেন নিয়ম বহির্ভূতভাবেই দুজন বিদেশী খেলোয়াড়কে নিয়ে মাঠে নামতে দেওয়া হল সিলেটকে? জানতে চাইলে জালাল ইউনুস বলেছেন, ‘এটি একটি ব্যতিক্রম ঘটনা। তখন সিলেটকে মাঠে নামানো না গেলে ম্যাচ ওয়াকওভার পেয়ে যেত চিটাগাং। এই টুর্নামেন্টের শুরুতেই এমন একটি কালিমা লাগাতে আমরা চাইনি। তাই যেটুকু করা হয়েছে ক্রিকেটের স্বার্থে, বিপিএলের স্বার্থেই করা হয়েছে।’
অবশ্য জালাল ইউনুস একথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যে টেকনিক্যাল কমিটি ইচ্ছা করলে বাইলজ পরিবর্তন করতে পারে। তবে ৪ বিদেশী মাঠে নামানোর বাধ্যবাধকতায় পরিবর্তন আনা হবে- এমনটিও তিনি বলেননি। সেক্ষেত্রে সামনে যাতে এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন না হতে হয়, সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে বলেছেন বিসিবির এই কর্মকর্তা।
খেলোয়াড়দের অনাপত্তিপত্র জমা দিতে বিসিবি আগেই ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকে তাগিদ দিয়েছে। সিলেট চুক্তিপত্র জমা দিলেও সংশ্লিষ্ট দেশের বোর্ডের অনাপত্তিপত্র দেয়নি। যখন দিয়েছে তখন টস হয়ে গিয়েছিল। তখন কাউকে অবহিত না করে সেই খেলোয়াড় মাঠে নামানো ঠিক হয়নি বলেও মনে করেন জালাল ইউনুস। তবে তার বক্তব্য, বিষয়টি নিয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর এ নিয়ম ঠিকমতো জানা নাও থাকতে পারে। তারা হয়তো মনে করেছে চু্ক্তিপত্র হলেই চলবে।
ঘটে যাওয়া ঘটনা সম্পর্কে জানতে সিলেট সুপারস্টার্সের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকের পক্ষ থেকে খুব দ্রুতই নিজেদের অবস্থান তুলে ধরতে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করা হবে বলেও জানান তারা।