ঢাকা ০৬:৪৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বছরজুড়েই আলোচনায় চাঞ্চল্যকর মামলা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:২৯:৪৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৯
  • ২৫৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আলোচিত ও গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর মামলা জন্য বছরজুড়েই মানুষের আগ্রহ ও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল দেশের আইন অঙ্গন। বিশেষ করে ফেনীর সোনাগাজীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যা মামলার রায়, রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে বর্বরোচিত সন্ত্রাসী হামলা মামলার রায়, বহুল আলোচিত বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যা মামলা বছর জুড়েই ছিলো আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।

ফেনীর নুসরাত হত্যা মামলা: ফেনীর সোনাগাজীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় গত ২৭ নভেম্বর অধ্যক্ষ সিরাজসহ ১৬ আসামির মৃত্যুদণ্ড দেন ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। রায়ে বলা হয়, নারীর প্রতি সহিংসতা ও মৃত্যুর ঘটনায় ১৬ আসামির অংশগ্রহণ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাদের মৃত্যুদণ্ড দেয়া হলো। এছাড়া প্রত্যেক আসামিকে এক লাখ টাকা করে জরিমানার আদেশ দেয়া হয় রায়ে। মামলার ৮০৮ পৃষ্ঠার রায়ে তৎকালিন পুলিশের এসপি ও ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনসহ চার পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ারও সুপারিশ করা হয়। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার বহিষ্কৃত অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা, ফাজিল শ্রেণির শিক্ষার্থী শাহাদাত হোসেন শামীম, নুর উদ্দিন, মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সাবেক সহসভাপতি ও সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের বিদায়ী সভাপতি রুহুল আমিন, মাদরাসার ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক আবসার উদ্দিন, সোনাগাজী পৌর কাউন্সিলর মকসুদ আলম, মাদরাসার বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থী হাফেজ আব্দুল কাদের, উম্মে সুলতানা পপি, কামরুন নাহার মনি, ইফতেখার উদ্দিন রানা, এমরান হোসেন মামুন, মহিউদ্দিন শাকিল, মো. শরিফ, আবদুর রহিম শরিফ, সাইফুর রহমান জোবায়ের ও জাবেদ হোসেন। রায় ঘোষণার মাধ্যমে অপরাধ ঘটার সাড়ে ছয় মাসের মধ্যে এবং মাত্র ৬১ কার্যদিবসে বিচারপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হচ্ছে মামলাটির।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ২০ জুন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। ২৭ জুন থেকে শুরু হয় সাক্ষ্যগ্রহণ। মামলার ৯১ জন সাক্ষীর মধ্যে ৮৭ জন সাক্ষ্য দেন। বাকি চারজনের মধ্যে একজন বিদেশে থাকায় এবং তিনজনের সাক্ষ্য অন্য সাক্ষীদের সঙ্গে পুরোপুরি মিলে যাওয়ায় তাদের সাক্ষ্যগ্রহণের প্রয়োজন হয়নি।

গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে তার মায়ের করা মামলায় গ্রেফতার করা হয় অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে। পরে ৬ এপ্রিল ওই মাদরাসা কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে গেলে নুসরাতকে মাদরাসার প্রশাসনিক ভবন কাম সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে ডেকে নিয়ে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

হলি আর্টিজানে হামলা মামলা: রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে বর্বরোচিত সন্ত্রাসী হামলা মামলার রায়ে ৭ আসামির ফাঁসির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেক আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। চার্জশিটভুক্ত ৮ আসামির মধ্যে মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান নামে একজন আসামিকে খালাস দিয়েছেন আদালত। গত ২৭ নভেম্বর ঢাকার সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমানের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। হামলার ৩ বছর ৪ মাস পর এ রায় ঘোষণা করা হলো। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- রাজীব গান্ধী, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, হাতকাটা সোহেল মাহফুজ, হাদিসুর রহমান সাগর, রাশেদ ইসলাম ওরফে আবু জাররা ওরফে র‌্যাশ, শরিফুল ইসলাম ওরফে খালেদ ও মামুনুর রশীদ ওরফে রিপন। রায় ঘোষণার জন্য কারাগারে আটক থাকা ৮ আসামিকেই আদালতে হাজির করা হয়েছিল।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে (স্প্যানিশ রেস্তোরাঁ) হামলা চালায় জঙ্গিরা। ওই হামলায় ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে তারা। নিহতের মধ্যে নয়জন ইতালি, সাতজন জাপানি ও একজন ভারতীয় নাগরিক ছিলেন। এর আগে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে তাদের ওপর গ্রেনেড হামলা চালায় জঙ্গিরা। গ্রেনেড হামলায় ডিবি পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি) রবিউল ইসলাম ও বনানী থানার ওসি সালাউদ্দিন আহমেদ নিহত হন।

এমপি লিটন হত্যা মামলা: গাইবান্ধা-১ আসনের সাবেক এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন হত্যা মামলায় গাইবান্ধা জেলা ও দায়রা জজ দিলীপ কুমার ভৌমিক ২৮ নভেম্বর ৭ জনকে বহুল আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন- জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি অবসরপ্রাপ্ত কর্ণেল ডা. আবদুল কাদের খান, তার একান্ত সহযোগী মো. শামছুজ্জোহা, গাড়িচালক আবদুল হান্নান, মেহেদি হাসান, শাহীন মিয়া ও আনোয়ারুল ইসলাম রানা। রায় ঘোষণার সময় তারা সবাই আসামির কাঠগড়ায় ছিলেন।

এর আগে ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যার দিকে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নের শাহবাজ গ্রামের মাস্টারপাড়ার নিজ বাড়িতে গুলি করে হত্যা করা হয় এমপি লিটনকে। ঘটনার পরদিন অজ্ঞাত ৪-৫ জনকে আসামি করে সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন লিটনের বড় বোন ফাহমিদা কাকলী বুলবুল।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের ফলে সারাদেশে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন মামলা দ্রুততার সঙ্গে নিষ্পত্তি হচ্ছে। দ্রুত বিচার আইনে করা চাঞ্চল্যকর মামলাগুলো তদারকির জন্য আইন ও বিচার বিভাগের একটি মনিটরিং টিম কাজ করছে। তিনি আরো বলেন, আদালতগুলো গুরুত্বসহকারে দ্রুততার সঙ্গে মামলা নিষ্পত্তি করছে। পুরাতন মামলাগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিষ্পত্তির লক্ষ্যে মনিটরিং সেল কাজ করছে। এই সেল গঠিত হওয়ার পর থেকে দেশের বৃহত্তর জেলাগুলোতে পর্যায়ক্রমে ৫-১০ বছর এবং ১০ বছরের অধিক সময়ের পুরাতন ফৌজদারি মামলাসমূহ দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হচ্ছে এবং মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে সুপারিশমালা প্রণয়ন করা হচ্ছে। এছাড়া সারাদেশের প্রতি জেলায় কেস ম্যানেজমেন্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।

দেশে দ্রুত বিচার আইন-২০০২-এর আওতায় ২০১৯ সালের ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ৩ হাজার ১০৩টি। এর মধ্যে ঢাকায় বিচারাধীন মামলার সংখ্যা এক হাজার ৯৮৯টি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

বছরজুড়েই আলোচনায় চাঞ্চল্যকর মামলা

আপডেট টাইম : ০৯:২৯:৪৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আলোচিত ও গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর মামলা জন্য বছরজুড়েই মানুষের আগ্রহ ও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল দেশের আইন অঙ্গন। বিশেষ করে ফেনীর সোনাগাজীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যা মামলার রায়, রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে বর্বরোচিত সন্ত্রাসী হামলা মামলার রায়, বহুল আলোচিত বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যা মামলা বছর জুড়েই ছিলো আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।

ফেনীর নুসরাত হত্যা মামলা: ফেনীর সোনাগাজীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় গত ২৭ নভেম্বর অধ্যক্ষ সিরাজসহ ১৬ আসামির মৃত্যুদণ্ড দেন ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। রায়ে বলা হয়, নারীর প্রতি সহিংসতা ও মৃত্যুর ঘটনায় ১৬ আসামির অংশগ্রহণ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাদের মৃত্যুদণ্ড দেয়া হলো। এছাড়া প্রত্যেক আসামিকে এক লাখ টাকা করে জরিমানার আদেশ দেয়া হয় রায়ে। মামলার ৮০৮ পৃষ্ঠার রায়ে তৎকালিন পুলিশের এসপি ও ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনসহ চার পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ারও সুপারিশ করা হয়। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার বহিষ্কৃত অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা, ফাজিল শ্রেণির শিক্ষার্থী শাহাদাত হোসেন শামীম, নুর উদ্দিন, মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সাবেক সহসভাপতি ও সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের বিদায়ী সভাপতি রুহুল আমিন, মাদরাসার ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক আবসার উদ্দিন, সোনাগাজী পৌর কাউন্সিলর মকসুদ আলম, মাদরাসার বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থী হাফেজ আব্দুল কাদের, উম্মে সুলতানা পপি, কামরুন নাহার মনি, ইফতেখার উদ্দিন রানা, এমরান হোসেন মামুন, মহিউদ্দিন শাকিল, মো. শরিফ, আবদুর রহিম শরিফ, সাইফুর রহমান জোবায়ের ও জাবেদ হোসেন। রায় ঘোষণার মাধ্যমে অপরাধ ঘটার সাড়ে ছয় মাসের মধ্যে এবং মাত্র ৬১ কার্যদিবসে বিচারপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হচ্ছে মামলাটির।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ২০ জুন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। ২৭ জুন থেকে শুরু হয় সাক্ষ্যগ্রহণ। মামলার ৯১ জন সাক্ষীর মধ্যে ৮৭ জন সাক্ষ্য দেন। বাকি চারজনের মধ্যে একজন বিদেশে থাকায় এবং তিনজনের সাক্ষ্য অন্য সাক্ষীদের সঙ্গে পুরোপুরি মিলে যাওয়ায় তাদের সাক্ষ্যগ্রহণের প্রয়োজন হয়নি।

গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে তার মায়ের করা মামলায় গ্রেফতার করা হয় অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে। পরে ৬ এপ্রিল ওই মাদরাসা কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে গেলে নুসরাতকে মাদরাসার প্রশাসনিক ভবন কাম সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে ডেকে নিয়ে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

হলি আর্টিজানে হামলা মামলা: রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে বর্বরোচিত সন্ত্রাসী হামলা মামলার রায়ে ৭ আসামির ফাঁসির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেক আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। চার্জশিটভুক্ত ৮ আসামির মধ্যে মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান নামে একজন আসামিকে খালাস দিয়েছেন আদালত। গত ২৭ নভেম্বর ঢাকার সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমানের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। হামলার ৩ বছর ৪ মাস পর এ রায় ঘোষণা করা হলো। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- রাজীব গান্ধী, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, হাতকাটা সোহেল মাহফুজ, হাদিসুর রহমান সাগর, রাশেদ ইসলাম ওরফে আবু জাররা ওরফে র‌্যাশ, শরিফুল ইসলাম ওরফে খালেদ ও মামুনুর রশীদ ওরফে রিপন। রায় ঘোষণার জন্য কারাগারে আটক থাকা ৮ আসামিকেই আদালতে হাজির করা হয়েছিল।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে (স্প্যানিশ রেস্তোরাঁ) হামলা চালায় জঙ্গিরা। ওই হামলায় ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে তারা। নিহতের মধ্যে নয়জন ইতালি, সাতজন জাপানি ও একজন ভারতীয় নাগরিক ছিলেন। এর আগে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে তাদের ওপর গ্রেনেড হামলা চালায় জঙ্গিরা। গ্রেনেড হামলায় ডিবি পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি) রবিউল ইসলাম ও বনানী থানার ওসি সালাউদ্দিন আহমেদ নিহত হন।

এমপি লিটন হত্যা মামলা: গাইবান্ধা-১ আসনের সাবেক এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন হত্যা মামলায় গাইবান্ধা জেলা ও দায়রা জজ দিলীপ কুমার ভৌমিক ২৮ নভেম্বর ৭ জনকে বহুল আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন- জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি অবসরপ্রাপ্ত কর্ণেল ডা. আবদুল কাদের খান, তার একান্ত সহযোগী মো. শামছুজ্জোহা, গাড়িচালক আবদুল হান্নান, মেহেদি হাসান, শাহীন মিয়া ও আনোয়ারুল ইসলাম রানা। রায় ঘোষণার সময় তারা সবাই আসামির কাঠগড়ায় ছিলেন।

এর আগে ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যার দিকে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নের শাহবাজ গ্রামের মাস্টারপাড়ার নিজ বাড়িতে গুলি করে হত্যা করা হয় এমপি লিটনকে। ঘটনার পরদিন অজ্ঞাত ৪-৫ জনকে আসামি করে সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন লিটনের বড় বোন ফাহমিদা কাকলী বুলবুল।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের ফলে সারাদেশে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন মামলা দ্রুততার সঙ্গে নিষ্পত্তি হচ্ছে। দ্রুত বিচার আইনে করা চাঞ্চল্যকর মামলাগুলো তদারকির জন্য আইন ও বিচার বিভাগের একটি মনিটরিং টিম কাজ করছে। তিনি আরো বলেন, আদালতগুলো গুরুত্বসহকারে দ্রুততার সঙ্গে মামলা নিষ্পত্তি করছে। পুরাতন মামলাগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিষ্পত্তির লক্ষ্যে মনিটরিং সেল কাজ করছে। এই সেল গঠিত হওয়ার পর থেকে দেশের বৃহত্তর জেলাগুলোতে পর্যায়ক্রমে ৫-১০ বছর এবং ১০ বছরের অধিক সময়ের পুরাতন ফৌজদারি মামলাসমূহ দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হচ্ছে এবং মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে সুপারিশমালা প্রণয়ন করা হচ্ছে। এছাড়া সারাদেশের প্রতি জেলায় কেস ম্যানেজমেন্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।

দেশে দ্রুত বিচার আইন-২০০২-এর আওতায় ২০১৯ সালের ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ৩ হাজার ১০৩টি। এর মধ্যে ঢাকায় বিচারাধীন মামলার সংখ্যা এক হাজার ৯৮৯টি।