হাওর বার্তা ডেস্কঃ অনেকের অ্যালার্জিজনিত সমস্যা রয়েছে। নানা কারণে অ্যালার্জি হতে পারে। কারও ধুলোবালি, কারও বা সুগন্ধী, আবার কারও কিছু খাবারের কারণে অ্যালার্জি বেড়ে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, খাবার ঘিরেই অ্যালার্জিতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। আবার কিছু খাবার আছে, যেগুলো অ্যালার্জি নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। এমন কিছু খাবার সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক:
দুধ
দুধ অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী। বিশেষ করে গরুর দুধে ২০ ধরনের প্রোটিন রয়েছে, যার পাঁচটি অ্যালার্জি সৃষ্টি করে। অর্থাৎ, গরুর দুধ খেলে অনেকে অ্যালার্জিতে আক্রান্ত হন। বিশেষ করে শিশুদের বেশি হয়। কারণ, বড়দের তুলনায় শিশুরা গরুর দুধ বেশি খেয়ে থাকে। তাই অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দিলে দুধ খাওয়া কমিয়ে ফেলতে হবে, অথবা না খাওয়াই উত্তম।
ডিম
অনেকেরই ডিম থেকে অ্যালার্জির সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে ডিমের সাদা অংশে থাকা প্রোটিন থেকেই অ্যালার্জি হয়। তাই যাদের ডিমের কারণে শরীরে অ্যালার্জি সৃষ্টি হয়, তাদের ডিম না খাওয়াই শ্রেয়।
বাদামজাতীয় খাবার
কাজু, পেস্তা, আমন্ড, আখরোট, চীনাবাদাম প্রভৃতি বাদামজাতীয় খাবারে অ্যালার্জির সমস্যা হয়ে থাকে। বিশেষ করে চীনাবাদাম মারাত্মক অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী হিসেবে পরিচিত।
মাছ
কিছু মাছও অ্যালার্জির কারণ। ইলিশ অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী মাছ। এছাড়া বোয়াল মাছও অ্যালার্জির অন্যতম উৎস। যে মাছ শক্ত খোসা বা আবরণ দ্বারা ঢাকা থাকে, সে ধরনের মাছ অ্যালার্জি সৃষ্টি করে। যেমন চিংড়ি, কাঁকড়া, শামুকজাতীয় খাবার অ্যালার্জির জন্য দায়ী।
গমের আটা
গমের আটার তৈরি খাবারেও অ্যালার্জি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শিশুদের যদি গম বা গমের আটায় অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে বার্লি বা অন্য দানাশস্যের ক্ষেত্রেও অ্যালার্জি হতে পারে।
বেগুন
বেগুনও খাদ্য-অ্যালার্জির উৎস। অল্প পরিমাণে অ্যালার্জি রয়েছে এমন ব্যক্তিদের বেগুন এড়িয়ে চলা ভালো। কেননা, এতে অ্যালার্জি বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কিছু খাবারের কারণে অ্যালার্জি দেখা যায়, আবার কিছু খাবারে অ্যালার্জি কমাতেও সহায়তা করে। অ্যালার্জি বেড়ে গেলে তাৎক্ষণিক কমাতে সহায়তা করে এমন কয়েকটি খাবার দেখে নিতে পারেন:
কলা
কলার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে কম-বেশি সবারই জানা। অ্যালার্জির ফলে দেহে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে কলা খেতে পারেন। কলা খুব উপকারী একটি খাবার। শরীরে লাল রঙের ছোট র্যাশ দেখা গেলে অথবা পেটে সমস্যা হলে কলা খেতে পারেন। কারণ, কলা শরীরের মেটাবলিজম বাড়াতে সাহায্য করে থাকে। কলা অ্যালার্জি পুরোপুরি ভালো করতে না পারলেও অনেকটা কমিয়ে ফেলে।
ভিটামিন ‘সি’ অথবা কমলাজাতীয় ফল
অনেক সময় পাকস্থলীতে প্রোটিনের পরিমাণ বেশি হলে অ্যালার্জি দেখা দেয়। এক্ষেত্রে ভিটামিন ‘সি’জাতীয় খাদ্য বেশি পরিমাণে খেলে এ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
আদা ও আদা চা
আদা গ্যাস্ট্রোইন্টেস্টাইনাল ও অ্যালার্জিজনিত সমস্যা সমাধানে সহায়তা করে। প্রদাহবিরোধী ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট-জাতীয় উপাদান থাকায় বমি ভাব, মাথা ঘোরানো, হজমের মতো সমস্যা বা অ্যালার্জি কমাতে উপকার করে আদা। অ্যালার্জি তাড়াতে আদা চা খেতে পারেন। আদা কুঁচি ফুটন্ত পানিতে দিয়ে ১০ মিনিট ফুটিয়ে নিতে পারেন। এরপর সেই পানি ছেঁকে নিয়ে কিছুটা আদার রস ও মধু মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যাবে।
গ্রিন টি
গ্রিন টি শুধু ওজন কমাতেই সহায়ক নয়, অ্যালার্জি কমাতেও সাহায্য করে থাকে। গ্রিন টিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিহিস্টাসিন ও প্রদাহবিরোধী উপাদান অ্যালার্জিকে বাধা দিয়ে থাকে।
শসা ও গাজরের রস
শসা ও গাজরের রস একসঙ্গে মিশিয়ে খেলে দ্রুত অ্যালার্জির সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। অ্যালার্জি অনেকটা কমিয়ে আনতে সাহায্য করে এ রস।
ক্যাস্টর অয়েল
ক্যাস্টর অয়েল শুধু আপনার চুলের জন্য নয়, অ্যালার্জি সমস্যা সমাধানেও দারুণ কাজ করে। অ্যালার্জি থেকে দূরে থাকতে চাইলে প্রতিদিন সকালে এক কাপ পরিমাণ পানিতে পাঁচ থেকে ১০ ফোঁটা ক্যাস্টর অয়েল মিশিয়ে পান করতে পারেন।
লেবু
লেবু হলো অন্যতম সাইট্রাস-জাতীয় ফল, যা অ্যালার্জি সমাধানে দারুণ কাজ করে থাকে। পানি ও মধুর সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়। নিয়মিত এ পানীয় পান করলে শরীরের টক্সিক পদার্থগুলো বের হয়ে যায়, অ্যালার্জির সমস্যাও কমে।