ঢাকা ০৭:৩১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধির পরিচয়পত্র পেশ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:০৬:৪৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০১৯
  • ২০৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাবাব ফাতিমা আজ জাতিসংঘ সদর দপ্তরে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজ এর কাছে তার পরিচয়পত্র পেশ করেন। এর আগে গত ২৯ নভেম্বর স্থায়ী মিশনের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করে। রাবাব ফাতিমা হচ্ছেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের পঞ্চদশ স্থায়ী প্রতিনিধি। বর্তমান কর্মস্থলে যোগদানের পূর্বে তিনি জাপানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

পরিচয়পত্র পেশকালে স্থায়ী প্রতিনিধি জাতিসংঘ মহাসচিবের নিকট বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা পৌঁছে দেন। এসময় জনাব গুতেরেজ বাংলাদেশকে জাতিসংঘের বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন। মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশ জাতিসংঘের মর্যাদাপূর্ণ একটি সদস্যরাষ্ট্র হিসেবে বৈশ্বিক পরিমন্ডলে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা জাতিসংঘ এবং মহাসচিবের পদক্ষেপ ও প্রচেষ্টাসমূহের প্রতি বাংলাদেশের অব্যাহত প্রতিশ্রুতি ও সমর্থনের কথা পূনর্ব্যক্ত করেন।

স্পেনের মাদ্রিদে সদ্য সমাপ্ত জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত কপ-২৫ (COP-২৫) সামিটে অংশগ্রহণকালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়টি উল্লেখ করেন মহাসচিব গুতেরেজ। তিনি জলবায়ু পরিবর্তন রোধে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের উল্লেখ্যযোগ্য অবদান এবং বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীদের পেশাদারিত্ব ও অব্যাহত সুনামের কথা আলোচনাকালে গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করেন মহাসচিব।

রোহিঙ্গা বিষয়ে মহাসচিব ও স্থায়ী প্রতিনিধির মধ্যে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়। এই সমস্যার টেকসই ও দ্রুত সমাধানে সব ধরণের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবেন মর্মে পূণ:নিশ্চয়তা প্রদান করেন গুতেরেজ।

স্থায়ী প্রতিনিধি ঢাকায় ২০২০ সালের ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকীর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য মহাসচিবকে আমন্ত্রণ জানান এবং বলেন জন্ম শতবার্ষিকীর এই অনুষ্ঠান যথাযোগ্য মর্যাদায় বৈশ্বিকভাবে উদযাপন করা হবে।

ইউনেস্কো কর্তৃক জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান উদযাপনের বিষয়টি উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ নিউইয়র্কস্থ জাতিসংঘ সদরদপ্তরের সঙ্গেও জন্ম শতবার্ষিকীর কর্মসূচি উদযাপনের পরিকল্পনা নিয়েছে। স্থায়ী প্রতিনিধি এক্ষেত্রে মহাসচিবের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।

পেশাদার কূটনীতিক রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ পররাষ্ট্র সার্ভিসে যোগদান করেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি নিউইয়র্ক ও জেনেভাস্থ জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন এবং কোলকাতা ও বেইজিং এ বাংলাদেশ দূতাবাসে দায়িত্ব পালন করেন।

মানবাধিকার বিষয়াবলীতে রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমার রয়েছে ব্যাপক অভিজ্ঞতা। লন্ডনস্থ কমনওয়েলথ সেক্রেটারিয়েটে মানবাধিকার বিভাগের প্রধান এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ার আঞ্চলিক প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করার সূদীর্ঘ অভিজ্ঞতাও রয়েছে এই কূটনীতিকের।

পরিচয়পত্র প্রদান অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মিশনের উপস্থায়ী প্রতিনিধি তারিক মো: আরিফুল ইসলাম, মিনিস্টার মনোয়ার হোসেন, জাতিসংঘের রাজনৈতিক ও শান্তি-বিনির্মাণ বিষয়ের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল মিজ রোজম্যারি এ. ডিকারলো এবং মহাসচিবের শেফ দ্য ক্যাবিনেট মিজ মারিয়া লুইজা রিবিরিয়ো ভিয়োট্টি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধির পরিচয়পত্র পেশ

আপডেট টাইম : ১২:০৬:৪৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাবাব ফাতিমা আজ জাতিসংঘ সদর দপ্তরে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজ এর কাছে তার পরিচয়পত্র পেশ করেন। এর আগে গত ২৯ নভেম্বর স্থায়ী মিশনের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করে। রাবাব ফাতিমা হচ্ছেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের পঞ্চদশ স্থায়ী প্রতিনিধি। বর্তমান কর্মস্থলে যোগদানের পূর্বে তিনি জাপানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

পরিচয়পত্র পেশকালে স্থায়ী প্রতিনিধি জাতিসংঘ মহাসচিবের নিকট বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা পৌঁছে দেন। এসময় জনাব গুতেরেজ বাংলাদেশকে জাতিসংঘের বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন। মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশ জাতিসংঘের মর্যাদাপূর্ণ একটি সদস্যরাষ্ট্র হিসেবে বৈশ্বিক পরিমন্ডলে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা জাতিসংঘ এবং মহাসচিবের পদক্ষেপ ও প্রচেষ্টাসমূহের প্রতি বাংলাদেশের অব্যাহত প্রতিশ্রুতি ও সমর্থনের কথা পূনর্ব্যক্ত করেন।

স্পেনের মাদ্রিদে সদ্য সমাপ্ত জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত কপ-২৫ (COP-২৫) সামিটে অংশগ্রহণকালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়টি উল্লেখ করেন মহাসচিব গুতেরেজ। তিনি জলবায়ু পরিবর্তন রোধে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের উল্লেখ্যযোগ্য অবদান এবং বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীদের পেশাদারিত্ব ও অব্যাহত সুনামের কথা আলোচনাকালে গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করেন মহাসচিব।

রোহিঙ্গা বিষয়ে মহাসচিব ও স্থায়ী প্রতিনিধির মধ্যে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়। এই সমস্যার টেকসই ও দ্রুত সমাধানে সব ধরণের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবেন মর্মে পূণ:নিশ্চয়তা প্রদান করেন গুতেরেজ।

স্থায়ী প্রতিনিধি ঢাকায় ২০২০ সালের ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকীর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য মহাসচিবকে আমন্ত্রণ জানান এবং বলেন জন্ম শতবার্ষিকীর এই অনুষ্ঠান যথাযোগ্য মর্যাদায় বৈশ্বিকভাবে উদযাপন করা হবে।

ইউনেস্কো কর্তৃক জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান উদযাপনের বিষয়টি উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ নিউইয়র্কস্থ জাতিসংঘ সদরদপ্তরের সঙ্গেও জন্ম শতবার্ষিকীর কর্মসূচি উদযাপনের পরিকল্পনা নিয়েছে। স্থায়ী প্রতিনিধি এক্ষেত্রে মহাসচিবের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।

পেশাদার কূটনীতিক রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ পররাষ্ট্র সার্ভিসে যোগদান করেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি নিউইয়র্ক ও জেনেভাস্থ জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন এবং কোলকাতা ও বেইজিং এ বাংলাদেশ দূতাবাসে দায়িত্ব পালন করেন।

মানবাধিকার বিষয়াবলীতে রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমার রয়েছে ব্যাপক অভিজ্ঞতা। লন্ডনস্থ কমনওয়েলথ সেক্রেটারিয়েটে মানবাধিকার বিভাগের প্রধান এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ার আঞ্চলিক প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করার সূদীর্ঘ অভিজ্ঞতাও রয়েছে এই কূটনীতিকের।

পরিচয়পত্র প্রদান অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মিশনের উপস্থায়ী প্রতিনিধি তারিক মো: আরিফুল ইসলাম, মিনিস্টার মনোয়ার হোসেন, জাতিসংঘের রাজনৈতিক ও শান্তি-বিনির্মাণ বিষয়ের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল মিজ রোজম্যারি এ. ডিকারলো এবং মহাসচিবের শেফ দ্য ক্যাবিনেট মিজ মারিয়া লুইজা রিবিরিয়ো ভিয়োট্টি।