হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিশেষজ্ঞদের মতে, বাতাসে বাড়তে থাকা দূষণ শিশুদের নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার একটি অন্যতম কারণ। হু জানাচ্ছে, ভারত, পাকিস্তান, কঙ্গো, নাইজেরিয়া, ইথিওপিয়াতে নিউমোনিয়ায় শিশু মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি।
২০১৮ সালে গোটা বিশ্বে নিউমোনিয়ায় আট লাখেরও বেশি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি শিশুর মৃত্যু হয়েছে এই পাঁচ দেশে। জানা গিয়েছে, এদের বেশির ভাগের বয়সই দু’বছরের মধ্যে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু-এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতি বছর নিউমোনিয়ায় মোট যত সংখ্যক রোগীর মৃত্যু হয় তার ১৫ শতাংশই হল শিশু যাদের বয়স পাঁচ বছর বা তারও কম। ২০১৭ সালে মোট ৬৯৪টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে নিউমোনিয়ায়।
নিউমোনিয়ার কারণ
নিউমোনিয়া হল ফুসফুসের সংক্রমণজনিত একটি রোগ। এই রোগ সাধারণত ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাসের আক্রমণের ফলে হয়ে থাকে। তবে কখনো কখনো ফুসফুসে ছত্রাকের সংক্রমণের ফলেও নিউমোনিয়া হয়। নিউমোনিয়া রোগের একটি অন্যতম প্রধান কারণ হল ফুসফুসে ‘স্ট্রেপ্টোকক্কাস নিউমোনি’ নামের ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ।
নিউমোনিয়া নিরাময়যোগ্য এবং প্রতিরোধযোগ্য একটি রোগ। কিন্তু তা সত্ত্বেও প্রতি বছর অসংখ্য শিশু এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
নিউমোনিয়ার লক্ষণ
নিউমোনিয়ার প্রাথমিক লক্ষণ হল জ্বর আর তার সঙ্গেই অনর্গল খুসখুসে কাশি। এর পাশাপাশি শ্বাসকষ্টের সমস্যাও থাকে। ফুসফুসে সংক্রমণ যত বাড়ে, শ্বাসকষ্টও ততই বাড়তে থাকে।
নিউমোনিয়ায় বুকে ব্যথা হতে পারে। তবে বুকের ব্যথার ধরন একেবারে আলাদা। গভীর বা লম্বা শ্বাস নেয়ার সময়ে বুকে ব্যথা বা চাপ অনুভূত হতে পারে। মূলত ফুসফুসে সংক্রমণজনিত প্রদাহের ফলে এই ব্যথা হয়।
এছাড়া নিউমোনিয়ায় মাথায় যন্ত্রণা, শরীর দুর্বল হয়ে পড়া, খাওয়ায় অনীহা, সারাক্ষণ বমি বমি ভাব সহ একাধিক সমস্যা দেখা দেয়।
নিউমোনিয়ার সতর্কতা
এই রোগ সাধারণত ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাসের আক্রমণের ফলে হয়ে থাকে। শীতকালের অপেক্ষাকৃত কম তাপমাত্রায় অনুকূল আবহাওয়ায় নিউমোনিয়া সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস অনেক বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে। সামান্য ঠান্ডা লাগলেও যাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তারা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হতে পারেন। সাধারণত, শিশু এবং বয়স্কদের মধ্যেই নিউমোনিয়ার প্রকোপ অধিক মাত্রায় দেখতে পাওয়া যায়। তাই আবহাওয়ার পরিবর্তনের সময়, বিশেষত শীতকালে নিউমোনিয়া থেকে বাঁচতে প্রয়োজন বাড়তি সতর্কতা। শিশুদের গরম কাপড় পরিয়ে রাখুন। গোসলের সময় সতর্ক থাকুন। ঠাণ্ডা লাগলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।