হাওর বার্তা ডেস্কঃ হঠাৎ করে রাজধানীর বাজারে বাড়তে শুরু করেছে চালের দাম। চলতি সপ্তাহ থেকে সব ধরনের চালের দাম কেজিতে ২ থেকে ৮ টাকা বেড়েছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, চালের সরবরাহ কম। ট্রাক ধর্মঘটে সরবরাহের ঘাটতির কারণেই চালের দাম বেড়েছে। আর সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, চালের পর্যাপ্ত মজুত আছে। দাম বাড়ার কোনো যুক্তি নেই।
খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দেশে বছরে চালের চাহিদা প্রায় ২ কোটি ৮৪ লাখ ১৬ হাজার ৭১০ মেট্রিক টন। বছরে চালের উৎপাদন প্রায় ৩ কোটি ৪৪ লাখ মেট্রিক টন। বর্তমানে সরকারের বিভিন্ন গুদামে খাদ্য মজুত রয়েছে প্রায় ১৪ লাখ ৫২ হাজার ৭০৭ মেট্রিক টন। এর মধ্যে চাল ১১ লাখ ১৩ হাজার ৩০৩ মেট্রিক টন। হিসাব অনুযায়ী, দেশে পর্যাপ্ত চালের মজুত রয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, ঘূর্ণিঝড় বুলবুল ও পরিবহন ধর্মঘটকে সাইনবোর্ড লাগিয়ে কিছু অসাধু চাল ব্যবসায়ী হঠাৎ করে দাম বাড়িয়েছে। সরকার যখন পেঁয়াজ পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে, ঠিক সেই সময়ের পর চাল নিয়ে চালবাজিতে মেতেছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী।
তবে এ বিষয়ে ব্যবসায়ীরা বলছেন, ধর্মঘটে পণ্যবাহী ট্রাক না চলার কারণে নাটোর, জয়পুরহাট, নওগাঁ ও কুষ্টিয়াসহ বিভিন্ন জেলা থেকে চাল রাজধানীতে আসেনি। যে কারণে রাজধানীতে চালের ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
ঢাকার রায়েরবাজারের চাল ব্যবসায়ী সাজ্জাদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মিজানুর রহমান রাইজিংবিডিকে বলেন, প্রতি কেজি নাজিরশাইল চাল ৫৪, ৫৯ থেকে ৬১ টাকা বিক্রি হলেও ১৮ নভেম্বর থেকে ৫৮ থেকে ৬৪ টাকায় টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৫০ টাকা কেজির মিনিকেট ৫৫ টাকা, ৩৭ টাকার আটাশ চাল ৪২ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
রাজধানীর বাবুবাজারের সততা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী রায়হান মাহমুদ রাইজিংবিডিকে বলেন, কয়েক দিন ধরে চালের সরবরাহ কম। এ কারণে দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে সরবরাহ বাড়লে চাল আগের দামে বিক্রি হবে।
তিনি বলেন, চাল আছে। তবে সরবরাহের তুলনায় চাহিদা কিছুটা বেশি রয়েছে।
বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাস্কিং মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুর রশিদ বলেন, নাটোর, জয়পুরহাট, নওগাঁ ও কুষ্টিয়াসহ বিভিন্ন জেলায় চালের ক্রেতা কম। পণ্যবাহী ট্রাক কম চলাচল করায় চাল রাজধানীতে পাঠানো যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, ‘ক্রেতা কম থাকায় এখানে চালের দাম কমে গেছে। রাজধানীতে চালের দাম সেখানকার ব্যবসায়ীরা বাড়িয়েছেন।’
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘দেশে চালের পর্যাপ্ত মজুত আছে। চালের মূল্য বৃদ্ধির কোনো কারণ নেই। অযৌক্তিকভাবে চালের দাম বৃদ্ধি করা হলে, তা সহ্য করা হবে না। ’
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের প্রতিটি বাজারে যে পরিমাণ চাল মজুত আছে, তা আগামী ৮-১০ দিন পর্যন্ত পরিবহন ধর্মঘট চললেও দামের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না, যদি কেউ কারসাজি না করে। ’
অসাধু ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে দিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে। প্রয়োজন হলে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনেও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। যেহেতু ধানের দাম বৃদ্ধি পায়নি। তাই চালের দাম কোনভাবেই বাড়তে দেয়া হবে না। কেউ অসহযোগিতা করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।