ঢাকা ০১:১৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
ভারতে ১৩ বাংলাদেশি নাগরিক গ্রেপ্তার কবরের পাশে দিন-রাত বসে থাকি, ছেলে ফিরে আসে না সংস্কার না করলে শহীদদের রক্তের সঙ্গে অন্যায় করা হবে : উপদেষ্টা সাখাওয়াত কাকে ‘ননসেন্স’ বললেন বুবলী ভোটার হওয়ার ন্যূনতম বয়সসীমা প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে আপত্তি বিএনপি মহাসচিবের সচিবালয়ে প্রবেশে অস্থায়ী পাসের ব্যাপারে বিশেষ সেল গঠন জর্জিনাকে ‘স্ত্রী’ সম্বোধন, তবে কি বিয়েটা সেরেই ফেলেছেন রোনালদো ৩১ ডিসেম্বর আসছে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণা মহাখালীতে আবাসিক ভবনে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ২ ইউনিট ভোটার হওয়ার ন্যূনতম বয়সসীমা প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে আপত্তি বিএনপি মহাসচিবের

মেক্সিকোতে মাছির বিষে যে গ্রামে অধিকাংশ মানুষ অন্ধ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:১২:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০১৯
  • ২০৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ টিলটেপেক।  মেক্সিকোর দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্ত ঘেঁষা স্বায়ত্তশাসিত রাজ্য অক্সাকার একটি পাহাড়ি গ্রাম। পাহাড়ি ঘন অরণ্যের মাঝে অবস্থিত ছোট্ট এই গ্রামটিতে শ’তিনেক মানুষের বাস। জাতিতে সবাই জাপাটোক উপজাতীয় গোত্রের।

আধুনিক সভ্যতার ছোঁয়া থেকে যোজন যোজন দূরত্বে অবস্থিত গ্রামটি দেখতে আর দশটা সাদাসিধে পাহাড়ি গ্রামের মতই।

তবে গ্রামের মানুষগুলো একেবারেই আলাদা। এই আলাদা হওয়ার কারণ আরো দুঃখজনক।   কারণ গ্রামের অধিকাংশ মানুষ অন্ধ। শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। গ্রামের  অধিবাসীদের এই করুণ পরিণতির জন্য এটি ‘অন্ধদের গ্রাম’ হিসেবে পরিচিত। আরও অবাক করা ব্যাপার হচ্ছে- শুধু গ্রামের অধিবাসীরা নয় তাদের পোষা পশুপাখিগুলোও অন্ধ।

গ্রামের অধিবাসীরা কিন্তু জন্ম থেকেই অন্ধ নয়। স্বাভাবিক মানব শিশুর মতই তাদের জন্ম এবং বেড়ে ওঠা। এরপর কেউ কয়েক বছর, কেউ কয়েক দিন পরে সারা জীবনের মতো দৃষ্টিহীন হয়ে গেছেন। গ্রামবাসীদের কাছে নিয়তীর এই নিষ্ঠুর পরিণতিই যেন স্বাভাবিক নিয়ম। তাদের বিশ্বাস গ্রামের একটি প্রাচীন গাছের অভিশাপের কারণে তারা অন্ধত্ব বরণ করে। গাছটির নাম লাবজুয়েলা। এই গাছ দেখার পর তারা অন্ধ হয়ে যায়।

গ্রামটির খবর বর্হিবিশ্বে প্রকাশিত হওয়ার পর গবেষকরা কোমর বেঁধে নেমেছিলেন এই রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য। বেশ কিছু দিন গবেষণার পর তারা আসল রহস্য উদঘাটনে সক্ষম হন। তারা প্রমাণ করেছেন, ওই গাছের সঙ্গে গ্রামের মানুষের দৃষ্টিহীনতার কোনো সম্পর্ক নেই। মাছির কামড়ে গ্রামবাসীর এই পরিণতি হচ্ছে। ব্লাক ফ্লাই বা মাক্ষি নামে পরিচিত এই মাছি অত্যন্ত বিষাক্ত। এই মাছির কামড়ে শরীরে প্রবেশ করে এক ধরনের বিষাক্ত পদার্থ যা গ্রামবাসীর অন্ধত্বের জন্য দায়ী।

এই গ্রামের আরও একটি রহস্যময় ব্যাপার হচ্ছে- গ্রামে প্রায় ৭০টির মতো কুঁড়ে ঘর আছে যার কোনটির জানালা নেই। জানালা না থাকার ব্যাপারে গ্রামবাসীর অভিমত- যেহেতু তাদের দৃষ্টিশক্তি নেই সেহেতু ঘরের জানালা দিয়ে আসা আলোরও দরকার নেই।

মেক্সিকো সরকার যখন এ গ্রাম সম্পর্কে জানতে পারে তখন বাসিন্দাদের অন্য স্থানে সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে, কিন্তু সেই প্রচেষ্টাও ব্যর্থ হয়েছে। কারণ গ্রামের লোকেরা অন্ধত্ব বরণ করতে রাজি কিন্তু ভিটে মাটি ছেড়ে যেতে রাজি নয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ভারতে ১৩ বাংলাদেশি নাগরিক গ্রেপ্তার

মেক্সিকোতে মাছির বিষে যে গ্রামে অধিকাংশ মানুষ অন্ধ

আপডেট টাইম : ১২:১২:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ টিলটেপেক।  মেক্সিকোর দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্ত ঘেঁষা স্বায়ত্তশাসিত রাজ্য অক্সাকার একটি পাহাড়ি গ্রাম। পাহাড়ি ঘন অরণ্যের মাঝে অবস্থিত ছোট্ট এই গ্রামটিতে শ’তিনেক মানুষের বাস। জাতিতে সবাই জাপাটোক উপজাতীয় গোত্রের।

আধুনিক সভ্যতার ছোঁয়া থেকে যোজন যোজন দূরত্বে অবস্থিত গ্রামটি দেখতে আর দশটা সাদাসিধে পাহাড়ি গ্রামের মতই।

তবে গ্রামের মানুষগুলো একেবারেই আলাদা। এই আলাদা হওয়ার কারণ আরো দুঃখজনক।   কারণ গ্রামের অধিকাংশ মানুষ অন্ধ। শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। গ্রামের  অধিবাসীদের এই করুণ পরিণতির জন্য এটি ‘অন্ধদের গ্রাম’ হিসেবে পরিচিত। আরও অবাক করা ব্যাপার হচ্ছে- শুধু গ্রামের অধিবাসীরা নয় তাদের পোষা পশুপাখিগুলোও অন্ধ।

গ্রামের অধিবাসীরা কিন্তু জন্ম থেকেই অন্ধ নয়। স্বাভাবিক মানব শিশুর মতই তাদের জন্ম এবং বেড়ে ওঠা। এরপর কেউ কয়েক বছর, কেউ কয়েক দিন পরে সারা জীবনের মতো দৃষ্টিহীন হয়ে গেছেন। গ্রামবাসীদের কাছে নিয়তীর এই নিষ্ঠুর পরিণতিই যেন স্বাভাবিক নিয়ম। তাদের বিশ্বাস গ্রামের একটি প্রাচীন গাছের অভিশাপের কারণে তারা অন্ধত্ব বরণ করে। গাছটির নাম লাবজুয়েলা। এই গাছ দেখার পর তারা অন্ধ হয়ে যায়।

গ্রামটির খবর বর্হিবিশ্বে প্রকাশিত হওয়ার পর গবেষকরা কোমর বেঁধে নেমেছিলেন এই রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য। বেশ কিছু দিন গবেষণার পর তারা আসল রহস্য উদঘাটনে সক্ষম হন। তারা প্রমাণ করেছেন, ওই গাছের সঙ্গে গ্রামের মানুষের দৃষ্টিহীনতার কোনো সম্পর্ক নেই। মাছির কামড়ে গ্রামবাসীর এই পরিণতি হচ্ছে। ব্লাক ফ্লাই বা মাক্ষি নামে পরিচিত এই মাছি অত্যন্ত বিষাক্ত। এই মাছির কামড়ে শরীরে প্রবেশ করে এক ধরনের বিষাক্ত পদার্থ যা গ্রামবাসীর অন্ধত্বের জন্য দায়ী।

এই গ্রামের আরও একটি রহস্যময় ব্যাপার হচ্ছে- গ্রামে প্রায় ৭০টির মতো কুঁড়ে ঘর আছে যার কোনটির জানালা নেই। জানালা না থাকার ব্যাপারে গ্রামবাসীর অভিমত- যেহেতু তাদের দৃষ্টিশক্তি নেই সেহেতু ঘরের জানালা দিয়ে আসা আলোরও দরকার নেই।

মেক্সিকো সরকার যখন এ গ্রাম সম্পর্কে জানতে পারে তখন বাসিন্দাদের অন্য স্থানে সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে, কিন্তু সেই প্রচেষ্টাও ব্যর্থ হয়েছে। কারণ গ্রামের লোকেরা অন্ধত্ব বরণ করতে রাজি কিন্তু ভিটে মাটি ছেড়ে যেতে রাজি নয়।