হাওর বার্তা ডেস্কঃ কেন আমার এত ক্লান্ত লাগছে? নিশ্চয় এই প্রশ্নটি নিজেকে প্রায়ই জিজ্ঞাসা করেন? রাতে সাত থেকে আট ঘন্টা ঘুমানোর পরেও কি আপনি সকালে সতেজ অনুভব করেন না? যদি এর উত্তর হয় হ্যাঁ! তবে জেনে নিন এর পেছনে থাকা অসংখ্য কারণ।
একটি নতুন গবেষণা বলছে যে, আপনার হজম এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্য আপনাকে সর্বদা ক্লান্ত বোধ করাতে পারে। যখন একজন ব্যক্তি সর্বদা ক্লান্ত বোধ করে তাকে ক্রনিক ক্লান্তি সিন্ড্রোম (সিএফএস) বলা হয়। তথ্য জানাচ্ছে যে বিশ্বজুড়ে সিএফএসের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। যথেষ্ট বিশ্রাম নেয়ার পরেও শরীরে অবসাদ দূর হচ্ছে না। চিকিৎসকদের পক্ষেও এর আশানুরূপ চিকিৎসা করা কঠিন হয়ে পড়ছিল। কারণ বহু বছর ধরে সিএফএসকে একটি মানসিক সমস্যা হিসেবে বিবেচনা করা হত। তবে সম্প্রতি জার্নাল মাইক্রোবায়োমে প্রকাশিত একটি গবেষণায় বলা হয়েছে যে, সমস্যাটি মানুষের মস্তিষ্কে নয় বরং এটি তাদের অন্ত্রে রয়েছে।
কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক কিছু মানুষের উপর পরীক্ষা করে এই দাবি করেছেন। গবেষকদের মতে তারা শুধুমাত্র তাদের ল্যাবের নমুনাগুলো পরীক্ষা করে সিএফএসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছিলেন। তাদের পর্যবেক্ষণের প্রায় ৮০ শতাংশ সঠিক ছিল। এটি ঘটছে কেবল পাকস্থলিতে থাকা একটি নির্দিষ্ট ব্যাকটেরিয়ার কারণে।
গবেষকরা আরো বলেন যে, সিএফএসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সাধারণ মানুষের তুলনায় বিভিন্ন অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া বেশি রয়েছে। এমনকি যারা দীর্ঘদিন ক্লান্তি সিন্ড্রোমে ভুগছেন তাদের অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়াল মাইক্রোবায়োম স্বাভাবিক নয়। এই ব্যাকটেরিয়াগুলো শরীরে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল এবং তাপমাত্রাও বাড়িয়ে দিতে পারে।
ভাবছেন, অন্ত্রে ব্যাকটেরিয়া কীভাবে আপনাকে ক্লান্ত বোধ করায়?
এই সমীক্ষায় আরো প্রকাশিত হয় যে, সিএফএসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের অন্ত্রে খারাপ ব্যাকটেরিয়া বেশি থাকে এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ব্যাকটেরিয়া কম থাকে। যা অন্ত্রের প্রদাহ, ব্যথা এবং হজমের সমস্যা বাড়ায়। সিএফএস-এর রোগীদের অন্ত্রের মধ্যে ফুসকুড়ি তৈরি করে যা খারাপ ব্যাকটেরিয়াগুলোকে রক্তের সঙ্গে মিশিয়ে দেয়। যখনই আপনার রক্তে খারাপ ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। তখন আপনার শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতাকে লড়াই করার জন্য আরো কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। আর এতেই আপনার শরীরে ক্লান্তি অনুভূত হয়।
এজন্য আপনার খাবার তালিকায় ফাইবারযুক্ত শাক সবজি, ফল বেশি রাখুন। এরপরও আপনি যদি এ সমস্যা অনুভব করে থাকেন, তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া