হাওর বার্তা ডেস্কঃ গোপালগঞ্জে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) উদ্ভাবিত নতুন জাতের স্বল্প জীবনকাল সম্পন্ন বিনাধান-১৬ আমন মৌসুমে উৎপাদনে নতুন রেকর্ড গড়েছে। হেক্টর প্রতি এ জাতের ধান ফলেছে ৭.২২ মেট্রিক টন।
গোপালগঞ্জ বিনা উপকেন্দ্র জানিয়েছে, এ বছর এ কেন্দ্রের তত্ত্বাবধানে গোপালগঞ্জ জেলার ১২০ একর জমিতে ৩৫০টি প্রদর্শনী প্লটে এ ধানের আবাদ করা হয়েছে। রোপণের একশ দিনের মাথায় ধান কেটে প্রতি হেক্টরে ৭.২২ টন ফলন পাওয়া গেছে। আমন মৌসুমে প্রচলিত জাতের তুলনায় এটি সবচেয়ে বেশি ফলন দিয়ে দেশে নতুন রেকর্ড করেছে। এর আগে এ ধান হেক্টরে ৬.৬৯ টন ফলেছে।
গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার পশ্চিম মাঝিগাতি গ্রামের কৃষক হুমায়ূন খোন্দকার বলেন, এ ধান রেকর্ড পরিমাণ ফলন দিয়েছে। প্রচলিত আমনের ১ মাস আগে এ ধান কাটায় বাজারে দাম ভালো পাওয়া যায়। এ ধানের আবাদের পর সরিষা, কলাই বা মসুরের আবাদ করা যায়। আগে আমরা বছরে ২টি ফসল পেলেও এখন একই জমিতে বছরে ৩ ফসল ফলিয়ে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে পারছি। এতে আমাদের বেশি লাভ হচ্ছে।
একই গ্রামের কৃষক খন্দকার সিদ্দিক বলেন, এই ধানে রোগ বালাই নেই। তাই কীটনাশক খরচ লাগেনা। বুলবুলের আঘাতে ধান হেলে পড়লেও একটি ধানও ঝড়ে পড়েনি। ফলনও অধিক।
কাশিয়ানী উপজেলার পশ্চিম মাঝিগাতী গ্রামের কৃষক রিজাউল খন্দকার বলেন, ক্ষেতে উৎপাদিত ধান থেকেই এ ধানের বীজ পরের বছরের জন্য সংরক্ষণ করা যায়। এ ধানের চাল চিকন ও ভাত খেতে সুস্বাদু।
গোপালগঞ্জ বিনা উপকেন্দ্রর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শেফাউর রহমান বলেন, লাভজনক শস্য বিন্যাস উদ্ভাবন কর্মসূচীর আওতায় গোপালগঞ্জ বিনা উপকেন্দ্রের তত্ত্বাবধানে ও কৃষি সম্প্রসারণের সহযোগিতায় গোপালগঞ্জে বিনাধান-১৬ আবাদ করা হয়। কৃষক আমন মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে প্রতি হেক্টরে সর্বোচ্চ ৭.২২ টন ধান উৎপাদন করেছে। এটি দেশের সর্বোচ্চ ফলন। গত বছর এ ধান ফলন হয়েছিল ৬.৬৯ টন।জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি সহিষ্ণু, পানি সাশ্রয়ী ও স্বল্প জীবনকালের এ ধান ক্ষেত থেকে কাটার পর কৃষক একই জমিতে আরও ২টি ফসল ফলাতে পারবেন। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন এ ধানের বীজ উৎপাদন ও সংরক্ষণ করে কৃষি সম্প্রসারণের মাধ্যমে কৃষকে আবাদে উদ্বুদ্ধ করলে দেশের ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।
কাশিয়ানী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা পীযূষ রায় বলেন, অল্প সময়ে বিনাধান-১৬ অধিক ফলন দিচ্ছে। দোফসলি জমিকে করেছে ত্রিফলা।