হাওর বার্তা ডেস্কঃ ঋতু বৈচিত্র্যে এখন রাতের শেষে কুয়াশা জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। নওগাঁর আত্রাই উপজেলার প্রতিটি গ্রামে গ্রামে গাছিরা খেজুর গাছ কাটার কাজে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। আর মাত্র কয়েক দিন পর রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরির পর্ব শুরু হয়ে চলবে প্রায় মাঘ মাস পর্যন্ত।
খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের প্রস্তুতি উপজেলার প্রতিটি গ্রামে চোখে পড়ছে। খেজুর রস ও গুড়ের জন্য আত্রাই উপজেলার এক সময় খ্যাতি ছিল। সময়ের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে খেজুরের গুড়। কিছুদিন আগেও বিভিন্ন এলাকার অধিকাংশ বাড়িতে, ক্ষেতের আইলে, ঝোঁপ-ঝাড়ের পাশে ও রাস্তার দুই ধার দিয়ে ছিল অসংখ্য খেজুর গাছ।
কোনো পরির্চর্যা ছাড়াই অনেকটা প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে উঠতো এসব খেজুর গাছ। প্রতিটি পরিবারের চাহিদা পূরণ করে অতিরিক্ত রস দিয়ে তৈরি করা হতো সুস্বাদু খেজুরের গুড়। গ্রামীণ জনপদে সাধারণ মানুষের সচেতনতার অভাবে পুকুরের পাড়ে রাস্তার ধারে পরিবেশ বান্ধব খেজুর গাছ এখন আর তেমন চোখে পড়ে না। ইট ভাটার জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার বেশি হওয়ার কারণে যে পরিমাণ গাছ চোখে পড়ে তা নির্বিচারে নিধন করায় দিন দিন খেজুর গাছ কমছেই। তবে এখনও শীতকালে শহর থেকে মানুষ দলে দলে ছুটে আসে খেজুর রস পান করতে।
নাটোরের লালপুর উপজেলা থেকে আসা গাছি আলম মিঞা ও তার সহকর্মীরা জানান, মালিকদের কাছ থেকে চার মাসের জন্য গাছ ভেদে পাঁচ থেকে সাত কেজি করে খেজুরের গুড় দিয়ে গাছগুলো আমরা নেই। চাহিদা মত খেজুর গাছ না পাওয়ার কারণে রস কম হওয়ায় আশানুরূপ গুড় তৈরি করতে পারি না। তারপরও এ বছর প্রায় ২০০টির বেশি খেজুর গাছের মালিকদের সঙ্গে চুক্তি করেছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কে এম কাউছার হোসেন জানান, বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলেই খেজুর গাছ প্রায় বিলুপ্তির পথে। গাছিদের খেজুর গাছ কাটার কাজটি শিল্প দক্ষতায় ভরা।