হাওর বার্তা ডেস্কঃ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠনগুলোর সম্মেলন দরজায় কড়া নাড়ছে। আগামী ৬ নভেম্বর কৃষক লীগের সম্মেলনের মাধ্যমে এই প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। শেষ হবে ২১ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলনের মধ্য দিয়ে।
এরই মধ্যে সম্মেলন উপলক্ষ্যে সাজছে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। সেখানে চলছে মঞ্চ প্রস্তুতির কাজ।
মঙ্গলবার সেখানে ঘুরে দেখা গেছে, মঞ্চ তৈরিতে কর্মব্যস্ত শ্রমিকরা। আর সেগুলোর তদারকি করছেন কৃষক লীগের নেতারা। সামনে বিশাল মঞ্চ, যেখানে বসবেন প্রধান অতিথি শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ ও কৃষক লীগের শীর্ষ নেতারা। সামনে বসবেন সম্মেলনে আগত কাউন্সিলর ও ডেলিগেটরা।
লম্বায় ৯০ ফুট আর প্রস্থে ৩০ ফুট রেখে মঞ্চ তৈরির কাজ করে যাচ্ছেন দায়িত্বরত শ্রমিকরা। তারা জানিয়েছেন, মঞ্চের ভিত্তি তৈরির কাজ প্রায় শেষ। এখন ডিজাইন অনুযায়ী কাজ হবে।
কৃষক লীগের সম্মেলন ঘিরে এরই মধ্যে সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে সাজ সাজ রব। বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে রাজধানীসহ সারাদেশে ব্যানার, ফেস্টুনসহ বিভিন্নভাবে প্রচার শুরু করবে কৃষক লীগ। সংগঠনের শীর্ষ নেতারা দিনের পুরোটা সময় থাকছেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে, খোঁজ রাখছেন কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে।
সম্মেলনের প্রস্তুতি নিয়ে জানতে চাইলে সংগঠনটির সভাপতি মোতাহার হোসেন মোল্লা এবং সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক রেজা বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কৃষক লীগকে খুব ভালোবাসেন, এজন্য কৃষক লীগের সম্মেলন আগে দিয়েছেন। আমরা তার এই আস্থার প্রতিদান দিতে চাই। আশা করি খুব জমকালো একটি সম্মেলন হবে। সম্মেলন উপলক্ষে আমাদের ১৫ টি উপ কমিটি করা হয়েছে। মঞ্চে কৃষি ও কৃষক সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দেয়া হবে। ‘আমার বাড়ি, আমার খামার’ স্লোগানকে সামনে রেখে সম্মেলন হবে।’
কৃষকলীগ সূত্রে জানা গেছে, মঞ্চ এমনভাবে সাজানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে, যেন দেখতে এমন মনে হয়, মূল স্টেজ কোনো বনের মধ্যে রয়েছে। চারদিকে গাছ-গাছালির আধিক্য থাকবে। এছাড়া মূল মঞ্চের সামনে আরো দুটি ছোট মঞ্চ করা হয়েছে। এর একদিকে থাকবে কৃষকদের সবজির বাজার, অন্যদিকে থাকবে কৃষক নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
মোতাহার হোসেন মোল্লা বলেন, ‘যেহেতু এটা কৃষকদের সংগঠন, সুতরাং আমরা চাইছি সম্মেলনে এর আবহ তৈরি করতে। সারা বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৬ হাজার কাউন্সিলর আসবে। এছাড়া অনেক ডেলিগেট আসবে। এই সম্মেলনে নতুন নেতৃত্বে যারা আসবে, তারা কৃষক লীগের প্রতিষ্ঠার যে উদ্দেশ্য সেটি বাস্তবায়ন করবে বলে বিশ্বাস করি।’
জানা গেছে, একই স্থানে শ্রমিক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ এবং যুবলীগের সম্মেলন হবে। সংগঠন ভেদে মঞ্চের দৃশ্য পরিবর্তন হবে।
সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, ‘সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বুধবার থেকে সারা ঢাকা শহরে প্রচারণা চালাবো। কৃষক লীগ যেহেতু গ্রামের সংগঠন, সেহেতু জেলাগুলোতে আমরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। সেখানকার জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ডে আমরা পোস্টার লাগিয়েছি। কাউন্সিলরের কাজ, আমন্ত্রণপত্র আজ চলে যাচ্ছে। মঞ্চের কাজ পুরোদমে শুরু করেছি। ৪ নভেম্বরের মধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। জাতীয় সংগীত ও কৃষকের জন্য দুটি গান হবে।’
দেশে কৃষির উন্নয়ন এবং কৃষকের স্বার্থ রক্ষার জন্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ১৯ এপ্রিল বাংলাদেশ কৃষক লীগ প্রতিষ্ঠা করেন। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সম্মেলন হয় সর্বশেষ ২০১২ সালের ১৯ জুলাই। ৩ বছর কমিটির মেয়াদ থাকলেও চলেছে প্রায় ৮ বছর। শুধু কেন্দ্রীয় কমিটি নয়, জেলা পর্যায়ের কমিটিগুলোও বিভিন্ন কারণে ঝিমিয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিকে সামনে রেখে আগামী ৬ নভেম্বর কৃষক লীগের সম্মেলন হবে।
রাইজিংবিডি