ঢাকা ১২:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রযুক্তি ব্যবহারে আফ্রিকায় ‘কৃষি বিপ্লব

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:০৮:১১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০১৯
  • ২৪৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আধনিক যুগ শেষ, পাশ্চাত্যের দেশগুলো এখন পা রাখতে যাচ্ছে অত্যাধুনিক জগতে। ঠিক তার বিপরীত চিত্র আফ্রিকায়। সেখানকার আদিম সমাজ ব্যবস্থায় মাত্র প্রলেপ বসাতে শুরু করেছে আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি।

পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম মহাদেশটিতে অর্থনীতির চাকাই ঘোরে কৃষিকে কেন্দ্র করে। অথচ, সেখানকার অ নেক দেশে এখনো চাষাবাদ হয় আদিম পদ্ধতিতে। একারণে, বিক্রি তো দূরের কথা, নিজেদের চাহিদা মেটাতেই হিমশিম খেতে হয় কৃষকদের। তবে, দিন বদলাতে শুরু করেছে। সম্প্রতি গবেষণার স্বার্থে নানা দেশ থেকে আসা কৃষিবিদদের আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে আশাতীত সাফল্য পেয়েছেন আফ্রিকান কৃষকেরা।

আফ্রিকায় কৃষিকাজের প্রধান সমস্যা ফসলে পোকার আক্রমণ। একবার পোকায় ধরলে সেই মৌসুমের ফসল ঘরে তোলার চিন্তা বাদ দিতে হয় চাষিদের। কিন্তু, প্রযুক্তির ব্যবহার সেই বিপদ দূর করেছে অনেকটাই।

বিস্তীর্ণ ফসলের জমি ঘুরেফিরে দেখা বেশ কষ্টের। এ ভোগান্তি এড়াতে ছোট এক ধরনের ড্রোন ব্যবহার করছেন কৃষিবিদরা। প্রথমত, এই ড্রোন পোকা চিহ্নিত করতে পারে। দ্বিতীয়ত, পোকায় ধরা ফসলে প্রয়োজনমতো কীটনাশকও ছিটাতে পারে। প্রতিটি ড্রোন এক বছরে প্রায় দশ হাজার একর জমিতে কীটনাশক দিতে পারে।

সম্প্রতি ঘানায় আট হাজার কৃষক স্বল্পমূল্যে ড্রোন ব্যবহার করে আগের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি ফসল ঘরে তুলতে সক্ষম হয়েছেন।
গ্রিন হাউসের মতো ঘর বানিয়ে ফসল উৎপাদন হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত
উগান্ডার রাজধানী কামপালায় অসংখ্য শিশু পুষ্টিহীনতার শিকার। সেখানে সবজি বা ফল পাওয়া যায় না বললেই চলে। এ সমস্যা কাটাতে ২০১০ সালের দিকে একটি পরিবার বাড়ির বারান্দা ও ছাদে সবজি চাষ শুরু করে। তাদের চাহিদা মেটানোর পরেও সবজি অন্যদের বিলিয়ে দিতে হতো। ধীরে ধীরে ওই আইডিয়া গ্রহণ করেন আশপাশের অনেকেই। এখন শহরেও গরুর খামার দিয়েছেন অনেকে। গোবর থেকে বায়োগ্যাস তৈরি করে রান্না ও বৈদ্যুতিক কাজে অনেকটাই অগ্রসর হয়ে গেছে দরিদ্র দেশটি।

মালি, সুদান ও নাইজেরিয়ার জলবায়ু কৃষির জন্য খুব একটা উপযোগী নয়। আর্দ্রতা ওঠা-নামা করায় ফসল বড় হওয়ার আগেই মরে যায়। বিদেশি একটি কৃষি প্রতিষ্ঠান সেখানে ফসল রক্ষা করতে ক্ষেতের উপর ছাদের ব্যবস্থা করেছিল। অনেকটা গ্রিন হাউসের মতো দেখতে এসব ঘরে ফসলের আর্দ্রতা রক্ষা সম্ভব হয়। আফ্রিকার অনেক দেশেই এই পদ্ধতিতে চাষাবাদ হয় এখন।

কৃষিক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার অবশ্য নতুন নয়। উন্নত দেশগুলোতে ফসল রোপণ থেকে ঘরে তোলা পর্যন্ত সবকিছুই করা হচ্ছে প্রযুক্তির সাহায্যে। এমনকি ব্যবহার হচ্ছে রোবটও। ফলে, কম সময়ে অধিক ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে। পৃথিবীতে খাদ্যের চাহিদা যেভাবে বাড়ছে সেক্ষেত্রে কৃষিখাতে গবেষণার পরিমাণ আরও বাড়াতে হবে বলে মনে করছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রযুক্তি ব্যবহারে আফ্রিকায় ‘কৃষি বিপ্লব

আপডেট টাইম : ১১:০৮:১১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আধনিক যুগ শেষ, পাশ্চাত্যের দেশগুলো এখন পা রাখতে যাচ্ছে অত্যাধুনিক জগতে। ঠিক তার বিপরীত চিত্র আফ্রিকায়। সেখানকার আদিম সমাজ ব্যবস্থায় মাত্র প্রলেপ বসাতে শুরু করেছে আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি।

পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম মহাদেশটিতে অর্থনীতির চাকাই ঘোরে কৃষিকে কেন্দ্র করে। অথচ, সেখানকার অ নেক দেশে এখনো চাষাবাদ হয় আদিম পদ্ধতিতে। একারণে, বিক্রি তো দূরের কথা, নিজেদের চাহিদা মেটাতেই হিমশিম খেতে হয় কৃষকদের। তবে, দিন বদলাতে শুরু করেছে। সম্প্রতি গবেষণার স্বার্থে নানা দেশ থেকে আসা কৃষিবিদদের আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে আশাতীত সাফল্য পেয়েছেন আফ্রিকান কৃষকেরা।

আফ্রিকায় কৃষিকাজের প্রধান সমস্যা ফসলে পোকার আক্রমণ। একবার পোকায় ধরলে সেই মৌসুমের ফসল ঘরে তোলার চিন্তা বাদ দিতে হয় চাষিদের। কিন্তু, প্রযুক্তির ব্যবহার সেই বিপদ দূর করেছে অনেকটাই।

বিস্তীর্ণ ফসলের জমি ঘুরেফিরে দেখা বেশ কষ্টের। এ ভোগান্তি এড়াতে ছোট এক ধরনের ড্রোন ব্যবহার করছেন কৃষিবিদরা। প্রথমত, এই ড্রোন পোকা চিহ্নিত করতে পারে। দ্বিতীয়ত, পোকায় ধরা ফসলে প্রয়োজনমতো কীটনাশকও ছিটাতে পারে। প্রতিটি ড্রোন এক বছরে প্রায় দশ হাজার একর জমিতে কীটনাশক দিতে পারে।

সম্প্রতি ঘানায় আট হাজার কৃষক স্বল্পমূল্যে ড্রোন ব্যবহার করে আগের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি ফসল ঘরে তুলতে সক্ষম হয়েছেন।
গ্রিন হাউসের মতো ঘর বানিয়ে ফসল উৎপাদন হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত
উগান্ডার রাজধানী কামপালায় অসংখ্য শিশু পুষ্টিহীনতার শিকার। সেখানে সবজি বা ফল পাওয়া যায় না বললেই চলে। এ সমস্যা কাটাতে ২০১০ সালের দিকে একটি পরিবার বাড়ির বারান্দা ও ছাদে সবজি চাষ শুরু করে। তাদের চাহিদা মেটানোর পরেও সবজি অন্যদের বিলিয়ে দিতে হতো। ধীরে ধীরে ওই আইডিয়া গ্রহণ করেন আশপাশের অনেকেই। এখন শহরেও গরুর খামার দিয়েছেন অনেকে। গোবর থেকে বায়োগ্যাস তৈরি করে রান্না ও বৈদ্যুতিক কাজে অনেকটাই অগ্রসর হয়ে গেছে দরিদ্র দেশটি।

মালি, সুদান ও নাইজেরিয়ার জলবায়ু কৃষির জন্য খুব একটা উপযোগী নয়। আর্দ্রতা ওঠা-নামা করায় ফসল বড় হওয়ার আগেই মরে যায়। বিদেশি একটি কৃষি প্রতিষ্ঠান সেখানে ফসল রক্ষা করতে ক্ষেতের উপর ছাদের ব্যবস্থা করেছিল। অনেকটা গ্রিন হাউসের মতো দেখতে এসব ঘরে ফসলের আর্দ্রতা রক্ষা সম্ভব হয়। আফ্রিকার অনেক দেশেই এই পদ্ধতিতে চাষাবাদ হয় এখন।

কৃষিক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার অবশ্য নতুন নয়। উন্নত দেশগুলোতে ফসল রোপণ থেকে ঘরে তোলা পর্যন্ত সবকিছুই করা হচ্ছে প্রযুক্তির সাহায্যে। এমনকি ব্যবহার হচ্ছে রোবটও। ফলে, কম সময়ে অধিক ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে। পৃথিবীতে খাদ্যের চাহিদা যেভাবে বাড়ছে সেক্ষেত্রে কৃষিখাতে গবেষণার পরিমাণ আরও বাড়াতে হবে বলে মনে করছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা।