হাওর বার্তা ডেস্কঃ মুটিয়ে যাওয়া মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে! এর পিছনে অনেক কারণ থাকতে পারে। তবে কখনো ভেবে দেখেছেন কি, রোগ প্রতিরোধের জন্য যেসব ওষুধ খাওয়া হয় সেগুলোও মুটিয়ে যাওয়ার কারণ হতে পারে?
সাধারণ জ্বর থেকে শুরু করে সর্দি কাশি বা পেটের সমস্যা, অ্যান্টিবায়োটিকের শরণাপন্ন হতে হয় কখনো সখনো। ঠিক নিয়ম মেনে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ায় ভয়ের কিছু দেখছেন না চিকিৎসকরা। তবে চিন্তায় ফেলছে এই নিয়মের বাইরে গিয়ে খাওয়ার বিষয়টাই।
ভারতীয় জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ সুবর্ণ গোস্বামীর মতে, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া মুঠো মুঠো অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া আমাদের একটা অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গিয়েছে। পেটের গোলমাল হোক বা দিন কয়েকের জ্বর, ওষুধ তো জানাই আছে! নিজের জানা একটা অ্যান্টিবায়োটিকের কোর্স করলেই ঝামেলা মিটে গেল বলে ধরে নিই আমরা!
এই অকারণ ও অত্যধিক অ্যান্টিবায়োটিকের কারণে শরীরে বেড়ে চলেছে মেদ। তার সঙ্গে শরীরে সুপারবাগসের উপস্থিতি মুশকিলে ফেলছে রোগী ও চিকিৎসককে। অনেক সময় তো কোর্সও সেষ করেন না অনেকে। জানাশোনা অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগে রোগ একটু ভাল হলেই, ব্যস! ওষুধ খাওয়া বন্ধ! এই সব স্বভাবই ডেকে আনছে আগামী দিনের গুরুতর বিপদ।
অবৈজ্ঞানিক উপায়ে ও ঘন ঘন অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহারে শরীর সেই অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ তৈরি করতে পারে। তাই দিনের পর দিন নির্দিষ্ট অসুখে সেই ওষুধ নেয়ার ফলে একটা সময়ের পর তা আর শরীরে কাজ করে না। শরীরের ব্যাকটেরিয়া তখন সেই নির্দিষ্ট ওষুধের সঙ্গে লড়ার ক্ষমতা অর্জন করে ফেলে আরো শক্তিশালী হয়ে ওঠে। অতিরিক্ত ক্ষমতাসম্পন্ন সেই জীবাণুরাই সুপারবাগস।
ফ্যাটও ডাকে অ্যান্টিবায়োটিক
ঘ্রেলিন হরমোনের উপর নির্ভর করে শরীরে মেদের বৃদ্ধি। খিদেকেও নিয়ন্ত্রণ করে এটি। ভালো কিছু ব্যাকটিরিয়ার উপস্থিতিতে এই হরমোন আরো সক্রিয় হয়ে ওঠে। তবে অবৈজ্ঞানিক উপায়ে ঘন ঘন অ্যান্টিবায়োটিক খেলে এসব জীবাণু সহজেই ধ্বংস হয় আর ঘ্রেলিনের কার্যকারিতাও কমে। ফলে মেদ বৃদ্ধি পায়, ঘন ঘন খিদে পায়। অনেকটা খেলেও অনেক সময় খিদে মেটে না।
আবার উপকারি ব্যাকটেরিয়ার ধ্বংসের কারণে শরীরে সহজেই পানি জমে। থাইরয়েড হরমোন নিঃসৃত হতে পারে না, পাকস্থলীতে ইস্ট সংক্রমণও হয়। ফলে হজমের সমস্যাও দেখা যায়। এর ফলে পেটের চর্বিও বাড়ে।
করণীয়
চিকিৎসকদের মতে, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ঘন ঘন অ্যান্টিবায়োটিক একেবারেই নয়। কখনো কোনো অ্যান্টিবায়োটিকের কোর্স শুরু করলে অবশ্যই তা শেষ করুন। রোগ একটু ভাল হল মানেই নিজেরা সিদ্ধান্ত নিয়ে কোর্স শেষ করে দেবেন না। চিকিৎসকের সঙ্গে কথা হওয়াটা এ ক্ষেত্রে খুবই জরুরি। অ্যান্টিবায়োটিক চললে প্রচুর পানি খান। সঙ্গে সুষম আহার খান, এড়িয়ে চলুন তেল-মশলা।