ঢাকা ১২:৪৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আবরার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জাতিসংঘের বিবৃতি দেওয়ার ব্যাখা চেয়েছে সরকার

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৭:১৮:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০১৯
  • ২১২ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বুয়েটছাত্র আবরার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জাতিসংঘের বিবৃতি দেওয়ার ব্যাখা চেয়েছে সরকার।

রোববার ঢাকায় নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সেপ্পোকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে এ ব্যাখা চাওয়া হয়।

সেপ্পো সকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যান এবং এ ব্যাপারে তার সঙ্গে কথা বলেন মন্ত্রণালয়ের জাতিসংঘ অনু বিভাগের মহাপরিচালক নাহিদা সোবাহান। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

নাহিদা সোবহানের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে মিয়া সেপ্পো পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ত্যাগ করার সময় উপস্থিত কয়েকজন সাংবাদিক তার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি কথা বলেননি। এ ব্যাপারে পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কারও পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়ার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।

আবরার হত্যাকাণ্ডের পর গত ৯ অক্টোবর ঢাকাস্থ জাতিসংঘ আবাসিক সমন্বয়কারীর দপ্তর থেকে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। ওই বিবৃতিতে মুক্তভাবে মত প্রকাশ করায় বুয়েটের তরুণ শিক্ষার্থীকে খুনের ঘটনায় নিন্দা জানানো হয় এবং জাতিসংঘ এ ঘটনার দ্রুত ও স্বচ্ছ তদন্ত দাবি করেছে বলেও জানানো হয়।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বহু বছর ধরে যেভাবে সহিসংতা চলমান রয়েছে তা বন্ধেরও আহবান জানিয়েছে জাতিসংঘ।

ওইদিন কূটনৈতিক প্রতিবেদকদের সংগঠন ডিক্যাব টকে অংশ নিয়ে মিয়া সেপ্পো ফাহাদ হত্যার ঘটনায় নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্তি করে বলেন, এটি একটি ‘ভীতিকর ঘটনা’। তার নিজের দুই সন্তান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন। একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে কিভাবে এত নিষ্ঠুর ঘটনা ঘটতে পারে সেটা তার কল্পনারও বাইরে। এ ঘটনা গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। প্রিয় সন্তান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে গিয়ে ক্যাম্পসে নিরাপদ আছে, এ নিশ্চয়তা অবশ্যই বাবা-মাকে দিতে হবে।

একইদিনে অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে আবরার ফাহাদ হত্যার ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানান ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, রোববার মিয়া সেপ্পোকে ডেকে জাতিসংঘের বিবৃতির ব্যাপারে সরকারের অসন্তোষের কথা জানিয়ে এ ব্যাপারে ব্যাখা চাওয়া হয়। তাকে জানানো হয়, ফাহাদ যে ধরনের কথা ফেসবুকে লিখেছিল, বাংলাদেশে অনেকেই সেভাবে নিজেদের সমালোচনামূলক মত প্রকাশ করছেন। সরকার কারও মত প্রকাশে বাধা দেয়নি। এমনকি ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ার আগে ফাহাদ ফেসবুকে কি লিখেছে সে সম্পর্কে সরকারের কোনও ধারনাও ছিল না। অতএব জাতিসংঘের বিবৃতিতে মুক্ত মত প্রকাশের জন্য ফাহাদ হত্যাকাণ্ডৈর ঘটনা ঘটেছে বলে যে মন্তব্য করা হয়েছে তা সঠিক নয়।

তাকে আরও জানানো হয়, এ ঘটনায় সরকার এরই মধ্যে খুনের সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের গ্রেফতার ও বিচারে যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে। অতএব এ নিয়ে জাতিসংঘের বিবৃতি অনভিপ্রেত।

এ ছাড়া মিয়া সেপ্পোকে আরও জানানো হয়, বিশ্বের অন্যান্য দেশে বিশেষ করে উন্নত বিশ্বের কোন দেশে যখন শিক্ষার্থী হত্যার ঘটনা ঘটে তখন জাতিসংঘকে কোন মন্তব্য করতে দেখা যায় না। শুধু বাংলাদেশ কোন ঘটনা ঘটলেই তাকে মত প্রকাশের সঙ্গে জড়িয়ে ফেলা হয় যা যুক্তিসঙ্গত নয়।

সূত্র আরও জানায়, এর আগে ফাহাদ হত্যাকাণ্ড নিয়ে ফেসবুক পেজে প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য গত ১০ অক্টোবর যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনারওকেও ডেকে পাঠানো হয়েছিল এবং তার সামনেও একই ধরনের বক্তব্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তুলে ধরা হয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

আবরার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জাতিসংঘের বিবৃতি দেওয়ার ব্যাখা চেয়েছে সরকার

আপডেট টাইম : ০৭:১৮:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বুয়েটছাত্র আবরার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জাতিসংঘের বিবৃতি দেওয়ার ব্যাখা চেয়েছে সরকার।

রোববার ঢাকায় নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সেপ্পোকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে এ ব্যাখা চাওয়া হয়।

সেপ্পো সকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যান এবং এ ব্যাপারে তার সঙ্গে কথা বলেন মন্ত্রণালয়ের জাতিসংঘ অনু বিভাগের মহাপরিচালক নাহিদা সোবাহান। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

নাহিদা সোবহানের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে মিয়া সেপ্পো পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ত্যাগ করার সময় উপস্থিত কয়েকজন সাংবাদিক তার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি কথা বলেননি। এ ব্যাপারে পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কারও পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়ার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।

আবরার হত্যাকাণ্ডের পর গত ৯ অক্টোবর ঢাকাস্থ জাতিসংঘ আবাসিক সমন্বয়কারীর দপ্তর থেকে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। ওই বিবৃতিতে মুক্তভাবে মত প্রকাশ করায় বুয়েটের তরুণ শিক্ষার্থীকে খুনের ঘটনায় নিন্দা জানানো হয় এবং জাতিসংঘ এ ঘটনার দ্রুত ও স্বচ্ছ তদন্ত দাবি করেছে বলেও জানানো হয়।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বহু বছর ধরে যেভাবে সহিসংতা চলমান রয়েছে তা বন্ধেরও আহবান জানিয়েছে জাতিসংঘ।

ওইদিন কূটনৈতিক প্রতিবেদকদের সংগঠন ডিক্যাব টকে অংশ নিয়ে মিয়া সেপ্পো ফাহাদ হত্যার ঘটনায় নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্তি করে বলেন, এটি একটি ‘ভীতিকর ঘটনা’। তার নিজের দুই সন্তান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন। একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে কিভাবে এত নিষ্ঠুর ঘটনা ঘটতে পারে সেটা তার কল্পনারও বাইরে। এ ঘটনা গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। প্রিয় সন্তান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে গিয়ে ক্যাম্পসে নিরাপদ আছে, এ নিশ্চয়তা অবশ্যই বাবা-মাকে দিতে হবে।

একইদিনে অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে আবরার ফাহাদ হত্যার ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানান ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, রোববার মিয়া সেপ্পোকে ডেকে জাতিসংঘের বিবৃতির ব্যাপারে সরকারের অসন্তোষের কথা জানিয়ে এ ব্যাপারে ব্যাখা চাওয়া হয়। তাকে জানানো হয়, ফাহাদ যে ধরনের কথা ফেসবুকে লিখেছিল, বাংলাদেশে অনেকেই সেভাবে নিজেদের সমালোচনামূলক মত প্রকাশ করছেন। সরকার কারও মত প্রকাশে বাধা দেয়নি। এমনকি ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ার আগে ফাহাদ ফেসবুকে কি লিখেছে সে সম্পর্কে সরকারের কোনও ধারনাও ছিল না। অতএব জাতিসংঘের বিবৃতিতে মুক্ত মত প্রকাশের জন্য ফাহাদ হত্যাকাণ্ডৈর ঘটনা ঘটেছে বলে যে মন্তব্য করা হয়েছে তা সঠিক নয়।

তাকে আরও জানানো হয়, এ ঘটনায় সরকার এরই মধ্যে খুনের সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের গ্রেফতার ও বিচারে যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে। অতএব এ নিয়ে জাতিসংঘের বিবৃতি অনভিপ্রেত।

এ ছাড়া মিয়া সেপ্পোকে আরও জানানো হয়, বিশ্বের অন্যান্য দেশে বিশেষ করে উন্নত বিশ্বের কোন দেশে যখন শিক্ষার্থী হত্যার ঘটনা ঘটে তখন জাতিসংঘকে কোন মন্তব্য করতে দেখা যায় না। শুধু বাংলাদেশ কোন ঘটনা ঘটলেই তাকে মত প্রকাশের সঙ্গে জড়িয়ে ফেলা হয় যা যুক্তিসঙ্গত নয়।

সূত্র আরও জানায়, এর আগে ফাহাদ হত্যাকাণ্ড নিয়ে ফেসবুক পেজে প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য গত ১০ অক্টোবর যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনারওকেও ডেকে পাঠানো হয়েছিল এবং তার সামনেও একই ধরনের বক্তব্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তুলে ধরা হয়।