তফসিল ঘোষণা এখনো হয়নি, তবে নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, আসছে ডিসেম্বরেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে পৌর নির্বাচন, এটা প্রায় নিশ্চিত। আর আজ বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনার শাহনেওয়াজ চাঁদপুরে এক সভায় ইঙ্গিত দিয়েছেন আগামী সপ্তাহে পৌর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে।
তবে ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন পৌর এলাকায় শুরু হয়ে গেছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ। প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হবে বলে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে এখন উৎসবের আমেজ। তৃণমূলে ভোটের হাওয়ার পাশাপাশি কেন্দ্রে চলছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের যোগাযোগ আর লবিংয়ের তোড়জোড়।
নির্বাচনে অংশ নিতে ইচ্ছুক নেতারা এলাকায় ব্যানার-ফেস্টুনে নিজেদের তুলে ধরছেন ভোটারদের কাছে। চলছে গণসংযোগ।
এর মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের তৎপরতাই চোখে পড়ছে বেশি। কম হলেও আছে বিএনপির আগ্রহী প্রার্থীদের তৎপরতাও।
হঠাৎ করে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সরকারের এমন সিদ্ধান্তে আওয়ামী লীগের শিবিরে চলছে সাজ সাজ রব। হামলা-মামলায় জর্জরিত প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপিতে চলছে টেনশন। দলটি নির্বাচনে আগ্রহী হলেও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে কি না, প্রার্থীরা প্রচারণা চালাতে পারবেন কি না তা নিয়ে সংশয়ে তারা। সরকারি দলের প্রভাব বিস্তারের আশঙ্কাও করছেন বিএনপির নীতিনির্ধারকরা।
এ ছাড়া চেয়ারপারসন দেশের বাইরে থাকায় নির্বাচনে যাওয়া-না যাওয়ার বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তাই নির্বাচন নিয়ে নানামুখী চাপে থাকা দলটি এখনো দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছে অংশগ্রহণ নিয়ে।
তবে দুই দলের কেন্দ্রে যা-ই হোক, তৃণমূলে চলছে যার যার মতো করে প্রস্তুতি। ফেনী থেকে ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিনিধি জানান, নির্বাচনে তফসিল ঘোষণার আগে ফেনীর ৫ পৌরসভার মেয়র-কাউন্সিলর পদের সম্ভাব্য প্রার্থীরা নড়েচড়ে বসেছেন। দলীয় টিকিট নিশ্চিত করতে নেতারা নানা কৌশল করছেন। তবে অন্যান্য দলের চেয়ে সরকারি দলে নির্বাচনী আমেজ একটু বেশি বিরাজ করছে।
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি জানান, জেলার দুটি পৌরসভায় সম্ভাব্য প্রার্থী নানাভাবে ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করে যাচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের চেয়ে পিছিয়ে আছে বিএনপি। আগ্রহী প্রার্থীরা ব্যানার,ফেস্টুন নিয়ে গোটা এলাকা ছেয়ে ফেলেছেন। নিয়মিত গণসংযোগ চালানোর পাশাপাশি স্থানীয় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে নিজেদের আগ্রহের কথা জানান দিচ্ছেন। সাতক্ষীরা সদর পৌরসভায় মেয়র পদে আওয়ামী লীগ থেকে পাঁচজন প্রার্থী হতে চাইছেন বলেও জানা গেছে।
একই অব্স্থা বিরাজ করছে জেলার আরেক পৌরসভা কলারোয়াতে। সেখানেও আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা প্রচার প্রচারণায় এগিয়ে আছেন। পিছিয়ে আছেন বিএনপি-সমর্থিত বর্তমান মেয়র (বরখাস্ত)। এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ থেকে তিনজন এবং বিএনপি থেকে একজন মেয়র পদে লড়তে আগ্রহী বলে জানা গেছে।
সারা দেশে ২৪৫টি পৌরসভায় একসঙ্গে নির্বাচন করতে নির্বাচন কমিশন প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, নির্বাচনে মেয়র,চেয়ারম্যান,ভাইস চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যপদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের দলীয় মনোনয়ন ও দলীয় প্রতীক থাকতে হবে। নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ৪০টি দলের পক্ষ থেকে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ থাকবে। স্থানীয় নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ রাখা হলেও তাদের জন্য বিধি ঠিক করবে নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের সিদ্ধান্তের কারণে সংশোধিত নির্বাচনী আচরণবিধি ও বিধিমালা ৫ নভেম্বর মন্ত্রণালয় পাঠানো হয়েছে। তবে এখনো তা কমিশনে ফেরত আসেনি। বিষয়টি স্বীকার করে নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল মোবারক ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কবে তফসিল ঘোষণা করা হবে তা এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। মন্ত্রণালয় থেকে বিধিমালা ও আচরণবিধি সংক্রান্ত সংশোধিত প্রস্তাবনা ফেরত এলে বলা যাবে।”
এদিকে আজ চাঁদপুরে এক সভায় কমিশনার শাহনেওয়াজ ইঙ্গিত দিয়েছেন আগামী সপ্তাহে পৌর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে।