ঢাকা ১১:৩৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দুর্গাপূজার মণ্ডপে বাজানো হলো আজানের সুর

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৩:১৫:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ অক্টোবর ২০১৯
  • ১৮৯ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দুর্গাপুজোর ষষ্ঠীর দিনে খোদ কলকাতার এক দুর্গাপূজার মণ্ডপে বাজলো আজানের সুর। সম্প্রীতির বার্তা তুলে ধরার লক্ষ্যে আজানের সুর বাজানো হয়। যদিও দুর্গাপুজোর মণ্ডপে আজানের সুর বাজানোকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই ব্যাপক চাপানউতোর ও বিতর্ক শুরু হয়ে গেছে। থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের হয়েছে।

কলকাতার বেলেঘাটা ৩৩ পল্লী পুজো মণ্ডপে আজানের সুর বাজে ষষ্ঠীর দিনে। কলকাতার বেলেঘাটা ৩৩ পল্লী ক্লাবের অন্যতম কর্মকর্তা হলেন স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক পরেশ পাল।

জানা গেছে, আজানের সুর বাজানোর অভিযোগে ওই পুজা কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধে স্থানীয় ফুলবাগান থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন কলকাতার নেতাজি নগর এলাকার বাসিন্দা আইনজীবী শান্তনু সিংহ। তিনি জানিয়েছেন, বেলেঘাটা ৩৩ পল্লী পুজো কমিটির সদস্যদের এই কাজ এলাকায় শান্তি সম্প্রীতি বিনষ্ট এবং রীতি ভঙ্গ করেছে।

পরেশ পাল ছাড়াও ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সুশান্ত সাহাসহ একাধিক শীর্ষ কর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

১৯ তম বর্ষে কলকাতার বেলেঘাটা ৩৩ পল্লীর পুজোর থিম ‘আমরা এক, কিন্তু একা নই’। থিমের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই মণ্ডপের মুখেই একটি বিশাল ছাতার তলায় একসাথে রয়েছে মন্দির, মসজিদ ও গির্জা। এখানে দুর্গা প্রতিমার হাতেও কোন অস্ত্র তুলে দেওয়া হয়নি। আসলে সম্প্রীতির বার্তা তুলে ধরাই এবারের মূল লক্ষ্য এই ক্লাবের পূজো উদ্যোক্তাদের। আর সেই সম্প্রীতির বার্তা তুলে ধরতেই দুর্গাপূজার মণ্ডপ থেকে বাজানো হয়েছিল আজানের সুর।

তবে, বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ভারতের মেঘালয় রাজ্যের রাজ্যপাল তথাগত রায়ও। এই বিষয়ে আইনজীবি শান্তনু সিংহ জানান, ‘দুর্গাপুজোর মণ্ডপে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষজন তাদের আরাধ্য দেবদেবীর আরাধনা করে থাকে। অথচ মাইকে বাজানো হচ্ছে আজানের সুর। এটা কিভাবে প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক ভাবনার নজির হতে পারে? ’

শান্তনু বলেন, ‘বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কর্মকর্তারা আমাকে ঘটনাটি জানান। তারা আমাকে একটি ভিডিও পাঠিয়েছিলেন। আমি দেখে অবাক হয়ে গিয়েছি। তারপরে থানায় এফআইআর দায়ের করার সিদ্ধান্ত নেই। কিন্তু পুলিশ আমাকে কোন এফআইআর নাম্বার দেয়নি। পুলিশ ব্যবস্থা না নিলে আমি বাধ্য হয়ে আদালতের শরণাপন্ন হবো।’

অন্যদিকে ৩৩ পল্লী পুজো কমিটির অন্যতম কর্মকর্তা তথা তৃনমূল বিধায়ক পরেশ পাল জানান, ‘বিজেপি, আরএসএস বাংলার সংস্কৃতি জানে না। এখানে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ মুসলিম রীতি, খ্রিস্টান রীতি সব পালন করতেন। যে দুর্গা, সে-ই শিব, আর সে-ই আল্লাহ্। জাতির জনক মহাত্মা গান্ধী নিজেও মনে করতেন ঈশ্বর, আল্লাহ একই শক্তির আলাদা নাম। কিন্তু বিজেপি, আরএসএস এখানে ধর্মীয় বিভাজন করতে চাইছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

দুর্গাপূজার মণ্ডপে বাজানো হলো আজানের সুর

আপডেট টাইম : ০৩:১৫:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ অক্টোবর ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দুর্গাপুজোর ষষ্ঠীর দিনে খোদ কলকাতার এক দুর্গাপূজার মণ্ডপে বাজলো আজানের সুর। সম্প্রীতির বার্তা তুলে ধরার লক্ষ্যে আজানের সুর বাজানো হয়। যদিও দুর্গাপুজোর মণ্ডপে আজানের সুর বাজানোকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই ব্যাপক চাপানউতোর ও বিতর্ক শুরু হয়ে গেছে। থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের হয়েছে।

কলকাতার বেলেঘাটা ৩৩ পল্লী পুজো মণ্ডপে আজানের সুর বাজে ষষ্ঠীর দিনে। কলকাতার বেলেঘাটা ৩৩ পল্লী ক্লাবের অন্যতম কর্মকর্তা হলেন স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক পরেশ পাল।

জানা গেছে, আজানের সুর বাজানোর অভিযোগে ওই পুজা কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধে স্থানীয় ফুলবাগান থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন কলকাতার নেতাজি নগর এলাকার বাসিন্দা আইনজীবী শান্তনু সিংহ। তিনি জানিয়েছেন, বেলেঘাটা ৩৩ পল্লী পুজো কমিটির সদস্যদের এই কাজ এলাকায় শান্তি সম্প্রীতি বিনষ্ট এবং রীতি ভঙ্গ করেছে।

পরেশ পাল ছাড়াও ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সুশান্ত সাহাসহ একাধিক শীর্ষ কর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

১৯ তম বর্ষে কলকাতার বেলেঘাটা ৩৩ পল্লীর পুজোর থিম ‘আমরা এক, কিন্তু একা নই’। থিমের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই মণ্ডপের মুখেই একটি বিশাল ছাতার তলায় একসাথে রয়েছে মন্দির, মসজিদ ও গির্জা। এখানে দুর্গা প্রতিমার হাতেও কোন অস্ত্র তুলে দেওয়া হয়নি। আসলে সম্প্রীতির বার্তা তুলে ধরাই এবারের মূল লক্ষ্য এই ক্লাবের পূজো উদ্যোক্তাদের। আর সেই সম্প্রীতির বার্তা তুলে ধরতেই দুর্গাপূজার মণ্ডপ থেকে বাজানো হয়েছিল আজানের সুর।

তবে, বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ভারতের মেঘালয় রাজ্যের রাজ্যপাল তথাগত রায়ও। এই বিষয়ে আইনজীবি শান্তনু সিংহ জানান, ‘দুর্গাপুজোর মণ্ডপে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষজন তাদের আরাধ্য দেবদেবীর আরাধনা করে থাকে। অথচ মাইকে বাজানো হচ্ছে আজানের সুর। এটা কিভাবে প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক ভাবনার নজির হতে পারে? ’

শান্তনু বলেন, ‘বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কর্মকর্তারা আমাকে ঘটনাটি জানান। তারা আমাকে একটি ভিডিও পাঠিয়েছিলেন। আমি দেখে অবাক হয়ে গিয়েছি। তারপরে থানায় এফআইআর দায়ের করার সিদ্ধান্ত নেই। কিন্তু পুলিশ আমাকে কোন এফআইআর নাম্বার দেয়নি। পুলিশ ব্যবস্থা না নিলে আমি বাধ্য হয়ে আদালতের শরণাপন্ন হবো।’

অন্যদিকে ৩৩ পল্লী পুজো কমিটির অন্যতম কর্মকর্তা তথা তৃনমূল বিধায়ক পরেশ পাল জানান, ‘বিজেপি, আরএসএস বাংলার সংস্কৃতি জানে না। এখানে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ মুসলিম রীতি, খ্রিস্টান রীতি সব পালন করতেন। যে দুর্গা, সে-ই শিব, আর সে-ই আল্লাহ্। জাতির জনক মহাত্মা গান্ধী নিজেও মনে করতেন ঈশ্বর, আল্লাহ একই শক্তির আলাদা নাম। কিন্তু বিজেপি, আরএসএস এখানে ধর্মীয় বিভাজন করতে চাইছে।