ঢাকা ১১:৫২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শ্বশুরবাড়ির সম্পত্তি না আনায় স্ত্রীকে হত্যা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৩৯:৪৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৬ অক্টোবর ২০১৯
  • ২৩৪ বার

শ্বশুরবাড়ি থেকে ওয়ারিশী সম্পত্তি না আনায় টাঙ্গাইলের বাসাইলে স্ত্রীকে হত্যা করেছে পাষণ্ড স্বামী। গতকাল ভোর ৫টায় উপজেলার কাশীল ইউনিয়নের স্থলবল্লা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামী শাহিনুর রহমান (৩৯) ও তার পরিবারের সদস্যরা পলাতক রয়েছে। এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূর পিতা মো. মোন্নান মিয়া বাদী হয়ে বাসাইল থানায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। নিহত গৃহবধূ স্বপ্না আক্তারের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ১৬ বছর আগে বাসাইল পৌরসভার ব্রাহ্মণপাড়িল এলাকার মোন্নান মিয়ার বড় মেয়ে স্বপ্না আক্তারের (২৮) সঙ্গে একই উপজেলার কাশীল ইউনিয়নের স্থলবল্লা গ্রামের সামাদ মিয়ার ছেলে সৌদি আরব প্রবাসী শাহিনুর রহমানের বিবাহ হয়। বিবাহের ৮ বছর পর তাদের ঘরে হাসান ও ১৫ বছর পর মুস্তাকিন নামের ২ ছেলের জন্ম হয়। ৬ বছর আগে শাহিনুর সৌদি আরব থেকে স্থায়ীভাবে দেশে চলে আসেন। দেশে আসার পর স্ত্রী স্বপ্না আক্তার তাকে যেকোনো চাকরি বা ব্যবসা করতে বলেন।

স্বামীর বেকারত্ব নিয়ে উভয়ের মধ্যে মাঝে-মাঝেই কথাকাটাকাটি হয়। এ বছরের জুলাই মাসে শাহিন ওয়াল্টন কোম্পানিতে চাকরি নেয়। আড়াই মাস চাকরি করার পর গত ১৫-২০ দিন আগে সে চাকরি ছেড়ে বাড়িতে চলে আসে এবং স্ত্রীকে তার বাবার বাড়ির ওয়ারিশের সম্পত্তি আনার জন্য ক্রমাগত চাপ দিতে থাকে। চাকরি ছেড়ে দেয়া, ওয়ারিশের সম্পত্তি আনা এসব বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে আবার ঝগড়া হলে গত ২ সপ্তাহ আগে স্ত্রী স্বপ্না স্বামী শাহিনুরের সঙ্গে আর সংসার করবে না বলে তার বাবার বাড়ি ব্রাহ্মণপাড়িল চলে আসে। এক সপ্তাহ আগে শাহিনের বাবা সামাদ মিয়া ও মা তারা ভানু অনেক বুঝিয়ে স্বপ্নাকে আবারো তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়।
কিন্তু শাহীন আবার স্ত্রীকে ওয়ারিশের সম্পত্তি আনতে চাপ দিতে থাকে এবং গতকাল ভোরে এনিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। ঝগড়ার একপর্যায়ে শাহিনুর তার ঘরে থাকা ধারালো বর্ষা (দেশীয় অস্ত্র) দিয়ে স্বপ্নার বুকে ও পিঠে আঘাত করে। গুরুতর অবস্থায় স্বপ্নাকে শাশুড়ি তারা ভানু ও পার্শ্ববর্তী মসজিদের ইমাম টাঙ্গাইল শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। এ সময় হাসপাতালে লাশ রেখে শাশুড়ি তারা ভানু পালিয়ে যায়। এ বিষয়ে জানতে শাহিনুরের পারিবারিক মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করলেও কেউ রিসিভ করেনি।
এ ব্যাপারে বাসাইল থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম তুহীন আলী বলেন, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

শ্বশুরবাড়ির সম্পত্তি না আনায় স্ত্রীকে হত্যা

আপডেট টাইম : ১১:৩৯:৪৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৬ অক্টোবর ২০১৯

শ্বশুরবাড়ি থেকে ওয়ারিশী সম্পত্তি না আনায় টাঙ্গাইলের বাসাইলে স্ত্রীকে হত্যা করেছে পাষণ্ড স্বামী। গতকাল ভোর ৫টায় উপজেলার কাশীল ইউনিয়নের স্থলবল্লা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামী শাহিনুর রহমান (৩৯) ও তার পরিবারের সদস্যরা পলাতক রয়েছে। এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূর পিতা মো. মোন্নান মিয়া বাদী হয়ে বাসাইল থানায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। নিহত গৃহবধূ স্বপ্না আক্তারের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ১৬ বছর আগে বাসাইল পৌরসভার ব্রাহ্মণপাড়িল এলাকার মোন্নান মিয়ার বড় মেয়ে স্বপ্না আক্তারের (২৮) সঙ্গে একই উপজেলার কাশীল ইউনিয়নের স্থলবল্লা গ্রামের সামাদ মিয়ার ছেলে সৌদি আরব প্রবাসী শাহিনুর রহমানের বিবাহ হয়। বিবাহের ৮ বছর পর তাদের ঘরে হাসান ও ১৫ বছর পর মুস্তাকিন নামের ২ ছেলের জন্ম হয়। ৬ বছর আগে শাহিনুর সৌদি আরব থেকে স্থায়ীভাবে দেশে চলে আসেন। দেশে আসার পর স্ত্রী স্বপ্না আক্তার তাকে যেকোনো চাকরি বা ব্যবসা করতে বলেন।

স্বামীর বেকারত্ব নিয়ে উভয়ের মধ্যে মাঝে-মাঝেই কথাকাটাকাটি হয়। এ বছরের জুলাই মাসে শাহিন ওয়াল্টন কোম্পানিতে চাকরি নেয়। আড়াই মাস চাকরি করার পর গত ১৫-২০ দিন আগে সে চাকরি ছেড়ে বাড়িতে চলে আসে এবং স্ত্রীকে তার বাবার বাড়ির ওয়ারিশের সম্পত্তি আনার জন্য ক্রমাগত চাপ দিতে থাকে। চাকরি ছেড়ে দেয়া, ওয়ারিশের সম্পত্তি আনা এসব বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে আবার ঝগড়া হলে গত ২ সপ্তাহ আগে স্ত্রী স্বপ্না স্বামী শাহিনুরের সঙ্গে আর সংসার করবে না বলে তার বাবার বাড়ি ব্রাহ্মণপাড়িল চলে আসে। এক সপ্তাহ আগে শাহিনের বাবা সামাদ মিয়া ও মা তারা ভানু অনেক বুঝিয়ে স্বপ্নাকে আবারো তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়।
কিন্তু শাহীন আবার স্ত্রীকে ওয়ারিশের সম্পত্তি আনতে চাপ দিতে থাকে এবং গতকাল ভোরে এনিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। ঝগড়ার একপর্যায়ে শাহিনুর তার ঘরে থাকা ধারালো বর্ষা (দেশীয় অস্ত্র) দিয়ে স্বপ্নার বুকে ও পিঠে আঘাত করে। গুরুতর অবস্থায় স্বপ্নাকে শাশুড়ি তারা ভানু ও পার্শ্ববর্তী মসজিদের ইমাম টাঙ্গাইল শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। এ সময় হাসপাতালে লাশ রেখে শাশুড়ি তারা ভানু পালিয়ে যায়। এ বিষয়ে জানতে শাহিনুরের পারিবারিক মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করলেও কেউ রিসিভ করেনি।
এ ব্যাপারে বাসাইল থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম তুহীন আলী বলেন, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।