আল্লাহ তায়ালা তার বান্দার জন্য যে সব নেয়ামতের ব্যবস্থা করেছেন ফলের অন্যতম। ফলের মধ্যে এমন এক কারিগরি ক্ষমতা রয়েছে যা দুনিয়ার কোনো কারিগরির সঙ্গে মিলবে না। ফল আল্লাহর সৃষ্টির নিদর্শনও বটে। ফলের মৌসুমে ফল না খেলে যেন মন ভরে না। লোভনীয় ফল দেখলে যে কারো জিহ্বায় পানি এসে যায়। আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু ইত্যাদি সুস্বাদু ফল যেমন মানুষের খাবারের চাহিদা মেটায়, তেমনি রোগের প্রতিষেধকও বটে। তাই এর যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে মহান প্রভুর প্রতি শোকর আদায় করা দরকার। জান্নাতেও ফলমূল দিয়ে আপ্যায়ন করা হবে। কোরানে এ সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘উভয় উদ্যানের প্রত্যেক ফল বিভিন্ন রকমের হবে। অতএব, তোমরা উভয়ে তোমাদের পালনকর্তার কোন কোন অবদানকে অস্বীকার করবে? তারা তথায় রেশমের আস্তরবিশিষ্ট বিছানায় হেলান দিয়ে বসবে। উভয় উদ্যানের ফল তাদের কাছে ঝুলবে।’
মৌসুমি ফলের উপকারিতা বর্ণনা করে শেষ করার মতো নয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে মানুষের শরীরে রোগের প্রতিষেধক হিসেবে মৌসুমি ফল-ফলাদির চেয়ে অধিক কার্যকরি কোনো ওষুধ নেই। ফল খেলে অনেক রোগ-
বালাই দূর হয়। ফল শরীরকে সতেজ করে, মস্তিষ্ককে চাঙ্গা করে। নিয়মিত ফল খেলে এর নানামুখী উপকার পাওয়া যায়। আল্লাহর এই শ্রেষ্ঠ নিয়ামতের অধিকারী হতে হলে তার নৈকট্য লাভ করতে হবে। যারা সৎকর্মপরায়ণ মুমিন হবে এবং জান্নাতবাসী হবে মহান আল্লাহ তায়ালা তাদের জন্য এমন সুস্বাদু নাজ-নিয়ামত দেয়ার ওয়াদা করেছেন। জান্নাতবাসীর জন্য নির্মিত বাগানের বর্ণনায় বলা হয়েছে, সেখানে থাকবে দুটি উদ্যান। একটি হবে স্বর্ণনির্মিত অন্যটি হবে রৌপ্য নির্মিত। যারা আল্লাহর একান্ত নৈকট্য লাভ করবে তাদের জন্য স্বর্ণনির্মিতটি। আর যারা হবে সৎকর্মপরায়ণ তারা পাবে রৌপ্য নির্মিতটি।
পার্থিব জীবনে যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করবে এবং পরকালে জান্নাতবাসী হবে মহান আল্লাহ-পাক তাদের অবশ্যই এই নিয়ামতের অধিকারী করবেন। এখন অনেকে ভেজালের আশঙ্কায় মৌসুমি ফল খান না। তবে স্রষ্টার একটি বিশেষ নেয়ামত হিসেবে যথাসম্ভব সতর্কতার সঙ্গে সবার উচিত মৌসুমি ফলের স্বাদ নেয়া। তাছাড়া অতি দামি মৌসুমি ফলগুলো খেতে গিয়ে আশপাশের গরিব-দুঃখী মানুষগুলোর কথাও ভুলে গেলে চলবে না। উচ্চমূল্যের কারণে মৌসুমি ফল কিনে খাওয়ার সামর্থ্য এদের অনেকেরই নেই। এ জন্য সবার উচিত আশপাশের লোকদের প্রতি নজর রাখা।