ঢাকা ০৯:৪২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কোটালীপাড়ায় শিক্ষককে পেটালেন ইউপি চেয়ারম্যান

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:৪৮:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯
  • ২২৭ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার গজালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক অমূল্য রতন হালদারকে পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠালেন কান্দি ইউপি চেয়ারম্যান উত্তম কুমার বাড়ৈ।

শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার কান্দি ইউনিয়নের ধারাবাশাইল বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় গোটা ইউনিয়নে নিন্দার ঝড় ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

শিক্ষক অমূল্য রতন হালদার কান্দি ইউনিয়নের গজালিয়া গ্রামের মহেন্দ্রলাল হালদারের ছেলে। তিনি বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি রয়েছেন।

জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার উপজেলার মাচারতারা পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের সবুজ ঘরামী নামে দশম শ্রেণির এক ছাত্রকে শ্রেণি কক্ষে পড়া না পারার কারণে গণিত শিক্ষক আশীষ চন্দ্র বড়াল মারধর করেন। এ ঘটনা নিয়ে সবুজ ঘরামীর পরিবারের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

বিষয়টি বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক নারায়ণ চন্দ্র হালদার সবুজ ঘরামীর পরিবারকে চেপে যেতে বলেন। ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান উত্তম কুমার বাড়ৈর স্ত্রী জেলা পরিষদ সদস্য রীনা রাণী মণ্ডল। ঘটনাটি সবুজ ঘরামীর বাবা সুশীল ঘরামী রীনা রাণী মণ্ডলকেও জানান।

এ বিষয় নিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় ধারাবাশাইল বাজারে ইউপি চেয়ারম্যান উত্তম কুমার বাড়ৈ ও নারায়ণ চন্দ্র হালদারের ভাই গজালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক অমূল্য রতন হালদারের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়।

এক পর্যায়ে চেয়ারম্যান উত্তম কুমার বাড়ৈ ও তার ভাই মনি বাড়ৈ শিক্ষক অমূল্য রতন হালদারকে মারধর করেন।

অমূল্য রতন হালদার বলেন, চেয়ারম্যান উত্তম কুমার বাড়ৈ তার ভাই মনিকে সঙ্গে নিয়ে আমাকে মারপিট করে আমার কপালে তার পায়ের স্যান্ডেল লাগিয়ে বলে’ তুই আমার স্যান্ডেলেরও যোগ্য না। বেশি বাড়াবাড়ি করলে তোকে ও তোর ভাইকে দেখে নেব।

এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান উত্তম কুমার বাড়ৈর কাছে জানতে চাইলে হলে তিনি বলেন, আমি শিক্ষক অমূল্য হালদারকে মারধর করিনি। অমূল্য হালদার মাচারতারা পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের বিষয়টি নিয়ে আমার মা-বাপ তুলে গালিগালাজ করেছেন। তখন আমার ভাই মনির সঙ্গে তার একটু হাতাহাতি হয়। অমূল্য রতন হালদার শিক্ষক হলেও এলাকার লোকজন তার বিরুদ্ধে কয়েক মাস আগে থানায় জিডি করেছে।

এছাড়া অমূল্য রতন হালদারের ভাই মাচারতারা পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নারায়ণ চন্দ্র হালদার বিদ্যালয়টিতে দুর্নীতি আখড়ায় পরিণত করেছে। বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আমার স্ত্রী রীনা রাণী মণ্ডল প্রতিবাদ করায় তারা দুই ভাই আমাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে মিথ্যা রটাচ্ছে।

মাচারতারা পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নারায়ণ চন্দ্র হালদার বলেন, চেয়ারম্যান উত্তম কুমার বাড়ৈর সব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। তিনি তার ক্ষমতাবলে এলাকায় রামরাজত্ব কায়েম করেছেন।

কোটালীপাড়া থানার ওসি শেখ লুৎফর রহমান ঘটনাটি স্বীকার করে বলেন, শিক্ষকের গায়ে হাত দেয়াটা ন্যাক্কারজনক ঘটনা। তবে উভয়পক্ষ থেকেই অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

কোটালীপাড়ায় শিক্ষককে পেটালেন ইউপি চেয়ারম্যান

আপডেট টাইম : ১২:৪৮:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার গজালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক অমূল্য রতন হালদারকে পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠালেন কান্দি ইউপি চেয়ারম্যান উত্তম কুমার বাড়ৈ।

শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার কান্দি ইউনিয়নের ধারাবাশাইল বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় গোটা ইউনিয়নে নিন্দার ঝড় ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

শিক্ষক অমূল্য রতন হালদার কান্দি ইউনিয়নের গজালিয়া গ্রামের মহেন্দ্রলাল হালদারের ছেলে। তিনি বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি রয়েছেন।

জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার উপজেলার মাচারতারা পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের সবুজ ঘরামী নামে দশম শ্রেণির এক ছাত্রকে শ্রেণি কক্ষে পড়া না পারার কারণে গণিত শিক্ষক আশীষ চন্দ্র বড়াল মারধর করেন। এ ঘটনা নিয়ে সবুজ ঘরামীর পরিবারের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

বিষয়টি বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক নারায়ণ চন্দ্র হালদার সবুজ ঘরামীর পরিবারকে চেপে যেতে বলেন। ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান উত্তম কুমার বাড়ৈর স্ত্রী জেলা পরিষদ সদস্য রীনা রাণী মণ্ডল। ঘটনাটি সবুজ ঘরামীর বাবা সুশীল ঘরামী রীনা রাণী মণ্ডলকেও জানান।

এ বিষয় নিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় ধারাবাশাইল বাজারে ইউপি চেয়ারম্যান উত্তম কুমার বাড়ৈ ও নারায়ণ চন্দ্র হালদারের ভাই গজালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক অমূল্য রতন হালদারের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়।

এক পর্যায়ে চেয়ারম্যান উত্তম কুমার বাড়ৈ ও তার ভাই মনি বাড়ৈ শিক্ষক অমূল্য রতন হালদারকে মারধর করেন।

অমূল্য রতন হালদার বলেন, চেয়ারম্যান উত্তম কুমার বাড়ৈ তার ভাই মনিকে সঙ্গে নিয়ে আমাকে মারপিট করে আমার কপালে তার পায়ের স্যান্ডেল লাগিয়ে বলে’ তুই আমার স্যান্ডেলেরও যোগ্য না। বেশি বাড়াবাড়ি করলে তোকে ও তোর ভাইকে দেখে নেব।

এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান উত্তম কুমার বাড়ৈর কাছে জানতে চাইলে হলে তিনি বলেন, আমি শিক্ষক অমূল্য হালদারকে মারধর করিনি। অমূল্য হালদার মাচারতারা পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের বিষয়টি নিয়ে আমার মা-বাপ তুলে গালিগালাজ করেছেন। তখন আমার ভাই মনির সঙ্গে তার একটু হাতাহাতি হয়। অমূল্য রতন হালদার শিক্ষক হলেও এলাকার লোকজন তার বিরুদ্ধে কয়েক মাস আগে থানায় জিডি করেছে।

এছাড়া অমূল্য রতন হালদারের ভাই মাচারতারা পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নারায়ণ চন্দ্র হালদার বিদ্যালয়টিতে দুর্নীতি আখড়ায় পরিণত করেছে। বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আমার স্ত্রী রীনা রাণী মণ্ডল প্রতিবাদ করায় তারা দুই ভাই আমাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে মিথ্যা রটাচ্ছে।

মাচারতারা পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নারায়ণ চন্দ্র হালদার বলেন, চেয়ারম্যান উত্তম কুমার বাড়ৈর সব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। তিনি তার ক্ষমতাবলে এলাকায় রামরাজত্ব কায়েম করেছেন।

কোটালীপাড়া থানার ওসি শেখ লুৎফর রহমান ঘটনাটি স্বীকার করে বলেন, শিক্ষকের গায়ে হাত দেয়াটা ন্যাক্কারজনক ঘটনা। তবে উভয়পক্ষ থেকেই অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।