ঢাকা ০৮:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বগুড়ায় নারী ‘জিনের বাদশা’র কাণ্ড

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:৩০:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯
  • ২০৯ বার

বগুড়ার গাবতলীতে ট্রাঙ্কে (টিনের বাক্স) এক বান্ডিল টাকা, তাবিজ ও পাথর রাখলে জিন ১৫ দিনের মধ্যে টাকা দিয়ে বাক্স ভরে দিবে। এমন প্রলোভনে দেড় লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেয়ায় জনগণ শাবলি বেগম (৩২) নামে এক `জিনের বাদশাকে’ আটক করেছে।

মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার রামেশ্বরপুর ইউনিয়নের তেজপাড়া গ্রামে ওই ঘটনার সময় পুলিশ তাকে আটক ও কিছু নমুনা জব্দ করেছে।

ভুক্তভোগী গৃহবধূ রঞ্জনা বেগম (৩০) গাবতলী থানায় প্রতারক শাবলি বেগম, তার স্বামী ও মায়ের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

গাবতলী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জাকির হোসেন জানান, গত আগস্টে গাবতলী উপজেলার তেজপাড়া গ্রামের জাকির হোসেনের স্ত্রী রঞ্জনা বেগমের সঙ্গে বগুড়া সদরের লাহিড়িপাড়া ইউনিয়নের কেরুলিয়া গ্রামের আতাউর রহমানের স্ত্রী শাবলি বেগমের পরিচয় হয়। শাবলি বেগম তাকে প্রলোভন দেন যে, ট্রাঙ্কে টাকা রাখলে ১৫ দিনের মধ্যে টাকা দিয়ে ট্রাঙ্ক ভরে যাবে।

শাবলি বেগমের কথায় রঞ্জনা বেগম বিশ্বাস করেন। তিনি গত ১১ আগস্ট থেকে বিভিন্ন সময়ে শাবলিকে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা দেন। শাবলি কাগজ কেটে ৫০০ টাকা বান্ডিল বানান ও সেটি কাপড়ে মুড়িয়ে রঞ্জনাকে দেন।

এর সঙ্গে একটি পাথর ও তাবিজও দেয়া হয়। ওই `টাকার’ বান্ডিল, পাথর ও তাবিজ একত্রে ট্রাঙ্কে রাখতে বলা হয়। জিন এসে ১৫ দিনের মধ্যে বাক্সভর্তি টাকা করে দিবে। আর এ কথা স্বামী ও পরিবারের কাউকে বলতে নিষেধ করা হয়। কেউ জানলে জিন তার ক্ষতি করবে। এ ভয়ে রঞ্জনা ঘটনাটি কাউকে বলেননি।

এ দিকে নির্ধারিত সময় মঙ্গলবার রঞ্জনা বেগমের ট্রাঙ্কভর্তি টাকা দেখার কৌতূহল জাগে। তিনি ট্রাঙ্ক খুলে দেখেন, জিন টাকা দেয়নি। তিনি কাপড়ের প্যাকেট খুললে ভিতরে কাগজের বান্ডিল, পাথর ও তাবিজ দেখতে

রঞ্জনা বেগম টাকার খোয়ানোর জন্য খুব কষ্ট পান। তিনি আরও টাকা দেয়ার প্রলোভনে শাবলি বেগমকে ফোনে ডেকে পাঠান। দুপুরে শাবলি তেজপাড়া গ্রামে রঞ্জনার বাড়িতে এলে তাকে কৌশলে আটক করা হয়। এ সময় শত শত গ্রামবাসী নারী জিনের বাদশা শাবলিকে দেখতে ভিড় করেন।

গ্রামবাসী ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিলে গাবতলী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শাবলিকে উদ্ধার করে। গাবতলী থানায় শাবলি, তার স্বামী আতাউর রহমান এবং মা ধলি বেগমের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন প্রতারণার শিকার রঞ্জনা।

গাবতলী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জাকির হোসেন জানান, গ্রেফতার শাবলিকে আদালতের মাধ্যমে বগুড়া জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। মামলার অপর আসামি তার মা ও স্বামীকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

বগুড়ায় নারী ‘জিনের বাদশা’র কাণ্ড

আপডেট টাইম : ১২:৩০:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯

বগুড়ার গাবতলীতে ট্রাঙ্কে (টিনের বাক্স) এক বান্ডিল টাকা, তাবিজ ও পাথর রাখলে জিন ১৫ দিনের মধ্যে টাকা দিয়ে বাক্স ভরে দিবে। এমন প্রলোভনে দেড় লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেয়ায় জনগণ শাবলি বেগম (৩২) নামে এক `জিনের বাদশাকে’ আটক করেছে।

মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার রামেশ্বরপুর ইউনিয়নের তেজপাড়া গ্রামে ওই ঘটনার সময় পুলিশ তাকে আটক ও কিছু নমুনা জব্দ করেছে।

ভুক্তভোগী গৃহবধূ রঞ্জনা বেগম (৩০) গাবতলী থানায় প্রতারক শাবলি বেগম, তার স্বামী ও মায়ের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

গাবতলী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জাকির হোসেন জানান, গত আগস্টে গাবতলী উপজেলার তেজপাড়া গ্রামের জাকির হোসেনের স্ত্রী রঞ্জনা বেগমের সঙ্গে বগুড়া সদরের লাহিড়িপাড়া ইউনিয়নের কেরুলিয়া গ্রামের আতাউর রহমানের স্ত্রী শাবলি বেগমের পরিচয় হয়। শাবলি বেগম তাকে প্রলোভন দেন যে, ট্রাঙ্কে টাকা রাখলে ১৫ দিনের মধ্যে টাকা দিয়ে ট্রাঙ্ক ভরে যাবে।

শাবলি বেগমের কথায় রঞ্জনা বেগম বিশ্বাস করেন। তিনি গত ১১ আগস্ট থেকে বিভিন্ন সময়ে শাবলিকে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা দেন। শাবলি কাগজ কেটে ৫০০ টাকা বান্ডিল বানান ও সেটি কাপড়ে মুড়িয়ে রঞ্জনাকে দেন।

এর সঙ্গে একটি পাথর ও তাবিজও দেয়া হয়। ওই `টাকার’ বান্ডিল, পাথর ও তাবিজ একত্রে ট্রাঙ্কে রাখতে বলা হয়। জিন এসে ১৫ দিনের মধ্যে বাক্সভর্তি টাকা করে দিবে। আর এ কথা স্বামী ও পরিবারের কাউকে বলতে নিষেধ করা হয়। কেউ জানলে জিন তার ক্ষতি করবে। এ ভয়ে রঞ্জনা ঘটনাটি কাউকে বলেননি।

এ দিকে নির্ধারিত সময় মঙ্গলবার রঞ্জনা বেগমের ট্রাঙ্কভর্তি টাকা দেখার কৌতূহল জাগে। তিনি ট্রাঙ্ক খুলে দেখেন, জিন টাকা দেয়নি। তিনি কাপড়ের প্যাকেট খুললে ভিতরে কাগজের বান্ডিল, পাথর ও তাবিজ দেখতে

রঞ্জনা বেগম টাকার খোয়ানোর জন্য খুব কষ্ট পান। তিনি আরও টাকা দেয়ার প্রলোভনে শাবলি বেগমকে ফোনে ডেকে পাঠান। দুপুরে শাবলি তেজপাড়া গ্রামে রঞ্জনার বাড়িতে এলে তাকে কৌশলে আটক করা হয়। এ সময় শত শত গ্রামবাসী নারী জিনের বাদশা শাবলিকে দেখতে ভিড় করেন।

গ্রামবাসী ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিলে গাবতলী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শাবলিকে উদ্ধার করে। গাবতলী থানায় শাবলি, তার স্বামী আতাউর রহমান এবং মা ধলি বেগমের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন প্রতারণার শিকার রঞ্জনা।

গাবতলী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জাকির হোসেন জানান, গ্রেফতার শাবলিকে আদালতের মাধ্যমে বগুড়া জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। মামলার অপর আসামি তার মা ও স্বামীকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।