হাওর বার্তা ডেস্কঃ গত এক বছরে ৮ বার হামলার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুর। ৩০ জুন ২০১৮ থেকে এ বছরের ১৪ আগস্টের হামলাসহ মোট ৮ বার ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা তার ওপর হামলা করেছে বলে অভিযোগ তার। এসব হামলার সাথে জড়িতদের বিচারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন নুর।
সোমবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন নুর।
এ সময় নুর অভিযোগ করে বলেন, গত ১৪ আগস্ট চর বিশ্বাস থেকে আমার বোনের বাড়ি দশমিনা যাওয়ার পথে উলানিয়া বাজারে আমার ওপর হামলা হয়। এ সময় পটুয়াখালী ৩ এর সাংসদ এস.এম শাহজাদা সাজুর নির্দেশে চাঁদাবাজ ও মাদকব্যবসায়ী, গলাচিপা উপজেলা চেয়ারম্যান শাহিন শাহ এর নেতৃত্বে তার ভাই নুরে আলম, লিটু পেদা, আব্বাস পেদা, পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাইনুল ইসলাম রণো, উপজেলা শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক, উলানিয়া যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাকিল, যুবলীগ নেতা ইদ্রিস, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক ফরিদ আহসান কচিন, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ আসিফ, ছাত্রলীগ নেতা জাহিদ, তূর্য্যসহ আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও শ্রমিক লীগের প্রায় শতাধিক নেতা-কর্মী আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে রড, স্টীলের পাইপ ও চাপাতি নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়।
ভিপি নুর বলেন, হামলায় প্রায় ২০-২৫ জন আহত হয়। এ সময় ১০ টি মটরসাইকেল ভাংচুর, ২ টি ডিসএলআর ও ৮৯ হাজার টাকা ছিনতাই হয়। আহতদের মধ্যে আমি নিজে, রবিউল, ইব্রাহিম, জাহিদ, রিয়াজসহ ৫ জন গুরুতর আহত হই।
হামলাকারীরা চিকিৎসায় বাধা দিয়েছে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, সন্ত্রাসীরা শুধু হামলা করেই ক্ষান্ত হয়নি আমাকে চিকিৎসার মতো মৌলিক অধিকার থেকেও বঞ্চিত করেছে। ডাক্তার সিটি স্ক্যান ও ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষার জন্য বরিশাল মেডিকেলে রেফার করলেও সন্ত্রাসীরা এবং পুলিশ আমাকে জোর করে বাসায় পাঠিয়ে দেয়।
এ ঘটনা নিয়ে বাড়াবাড়ি না করতে নুরসহ তার পরিবারকে নিয়মিত হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর।
হামলার বিচার চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে নুর বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট অনুরোধ, কিছুদিন আগেও বিবিসি বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আপনি নিজেই বলেছেন সরকারের সমালোচনা করতে বাধা নেই, দেশে ভিন্নমত প্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে। তাই আপনার কাছে আমাদের অনুরোধ ভিন্নমতের মানুষের উপর দমন-পীড়ন বন্ধ করে গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রাখতে আপনার দলের নেতা-কর্মী ও আইন শৃংখলা বাহিনীকে নির্দেশ দিন। দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় দলীয় প্রভাবমুক্ত করে আইন শৃংখলা বাহিনীকে কার্যকর করুন।
এসময় সরকারের বিরোধিতা করলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন ‘খালেদা জিয়ার মতো পরিণতি’ হতে পারে—আওয়ামী লীগ ও সরকারের গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে তাদের এমন হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন নুরুল হক।