হাওর বার্তা ডেস্কঃ কোরবানির পশুর চামড়ার দাম অস্বাভাবিক কমে যাওয়ার জন্য চামড়া ব্যবসায়ীদের দোষারোপ করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। বলেছেন, দাম কমার পেছনে ব্যবসায়ীদের কারসাজি রয়েছে। বুধবার (১৪ আগস্ট) সকালে রংপুর নগরীর শালবন এলাকায় নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ঈদের আগে মালিক ও চামড়া ব্যবসায়ীদের নিয়ে সভা করে আমরা চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দিয়েছিলাম। কিন্তু দুঃখজনকভাবে আমরা লক্ষ্য করলাম-ঈদের দিন দাম এমন কমে এলো, যা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। এ কারণে আমরা কাঁচাচামড়া রপ্তানি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘যখনই আমরা কোনো উদ্যোগ নিই, তখনই এটির বিরুদ্ধাচারণ করা হয়। চামড়ার দাম নিয়েও এমনটি হয়েছে।’
টিপু মুনশি বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা বলছেন-কাঁচা চামড়া রপ্তানি করলে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। আজ তারা নিজেরা সভা ডেকেছেন, দেখি কী সিদ্ধান্ত নেন। এর পর আমরা এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব। তবে কোনোভাবেই চামড়াশিল্পকে আমরা ধ্বংস করে দিতে পারি না।’এদিকে ঢাকায় ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভায় কাঁচাচামড়া রপ্তানি না করার দাবি জানানো হয়েছে। সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, ২০ আগস্ট থেকে নিজস্ব প্রতিনিধির মাধ্যমে নির্ধারিত দরে লবণযুক্ত চামড়া সংরক্ষণ করা হবে। কাঁচাচামড়া রপ্তানির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন বলেছে, কাঁচাচামড়া রপ্তানি করলে দেশীয় শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
চামড়ার মৌসুমি ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সিন্ডিকেট করে কাঁচা চামড়ার দাম কমানো হচ্ছে। অন্যদিকে আড়তদাররা বলছেন, চামড়া কেনার পুঁজিই নেই তাদের। এজন্য তারা চামড়া কিনছেন না।
আর ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন বলছে, তারা আরও ১০ দিন পরে চামড়া কিনবেন। এখন যা হচ্ছে এর সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততা নেই।
এবার ঢাকায় প্রতি বর্গফুট গরুর কাঁচা চামড়া ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, ঢাকার বাইরে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা; খাসির কাঁচা চামড়া সারাদেশে ১৮ থেকে ২০ এবং বকরির চামড়ার দাম ১৩ থেকে ১৫ টাকা নির্ধারণ করে দেয় সরকার৷ তবে ওই দামে কোথাও চামড়া বিক্রি হয়নি।
সোমবার ঈদের দিন চামড়ার ক্রেতা ছিল অনেক কম। আর যেসব মৌসুমি ব্যবসায়ী চামড়া সংগ্রহ করেন তারাও অনেক কম দাম হাঁকেন। তাদের দাম শুনে অনেকে ক্ষুব্ধ হন। দিন শেষে অল্প দামে কেনার পরও প্রতি চামড়া কয়েকশ টাকা করে লোকসান গুনতে হচ্ছে বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা। ক্ষোভে দুঃখে দেশের অনেক জায়গায় মানুষ চামড়া কেটে মাটিতে পুঁতে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।