হাওর বার্তা ডেস্কঃ ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ এবং ৩৫এ ধারায় জম্মু-কাশ্মীরকে প্রদান করা বিশেষ আইনি অধিকার ও মর্যাদা খারিজ নিয়ে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তিনি স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন তার দল কোনভাবেই এই বিলকে সমর্থন করবে না। তার অভিমত অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা না করে বা ভোটাভুটি না করে সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক উপায়ে জম্মু-কাশ্মীরকে বিভক্ত করে দুইটি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার দুপুরে চেন্নাই যাওয়ার পথে কলকাতার নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় তিনি বলেন, ‘গতকাল থেকে যা ঘটে চলেছে আমি দেশের নাগরিক হিসাবে তা লক্ষ্য করছি। আমরা সকলেই দেশভক্ত এবং আমাদের মাতৃভূমিকে ভালবাসি। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে কাশ্মীরের মানুষ আমাদের ভাই-বোন।’
এসময় তিনি বলেন, ‘আমি এই বিলের যোগ্যতা নিয়ে কোনও কথা বলছি না। কিন্তু যেভাবে এই প্রস্তাবটি পাশ করা হল তার পদ্ধতি নিয়ে আমি একমত নই। এ ব্যাপারে আমার দল কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা এই বিলকে কোনভাবেই সমর্থন করি না। আমরা এই বিলের পক্ষে ভোটও দেব না। কারণ আমরা যদি ভোট দিই তবে সেটা নথিভুক্ত থাকবে যে আমরা এটাকে সমর্থন করি। ওরা (সরকার) যেটা করেছে তা সাংবিধানিক, বৈধ বা প্রযুক্তিগতভাগে এটা প্রশংসনীয় নয়। এটা সম্পূর্ণ অগণান্ত্রিক। ওদের উচিত ছিল এই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া আগে এই বিলটি নিয়ে সমস্ত রাজনৈতিক দল ও কাশ্মীরের মানুষদের সাথে কথা বলা। আমরা বিশ্বাস করি যদি এই সমস্যার সমাধান করতে হয় তবে সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে আলোচনা করতে হয়।’
সোমবার রাতে কাশ্মীরের দুই সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ ও মেহবুবা মুফতিসহ কাশ্মীরি নেতাদের গ্রেফতার করা নিয়েও সরব হয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রধান। তিনি বলেন, ‘আবদুল্লাহ সম্পর্কে আমার কাছে কোনও তথ্য নেই। কিন্তু বিভিন্ন গণমাধ্যম ও পত্রিকা মারফত জানতে পেরেছি যে ওমর আবদুল্লাহ ও মেহবুবা মুফতিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমি সরকারের কাছে আর্জি জানাবো তারাও কাশ্মীরের মানুষ, ভাই ও বোন। তারা যেন নিজেদেরকে বিচ্ছিন্ন অনুভব না করেন। তারা যেন অনুভব করেন যে তারাও দেশের নাগরিক। আমরা সকলেই এক। আমি মনে করি মেহবুবা, ওমরসহ অন্যরা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, কিন্তু সন্ত্রাসবাদী নয়। গণতন্ত্র ও কাশ্মীরের মানুষের স্বার্থেই তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া উচিত।’
মমতার জানান, ‘সরকারের উচিত মানুষের মধ্যে ভরসা যোগানো, মানুষের মধ্যে যেন আতঙ্ক সৃষ্টি না হয়। আমি মনে করি আমাদের অযথা আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আমাদেরকে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আমরা চাই শান্তিপূর্ণ আলোচনা ও শান্তিপূর্ণ সমাধান।’