হাওর বার্তা ডেস্কঃ না ফেরার দেশে চলে গেলেন ভারতের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) রাতে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান। তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর।
টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় মঙ্গলবার রাতে নয়া দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্স (এআইআইএমএস) হাসপাতালে ভর্তির পরপরই তার মৃত্যু হয়।
নরেন্দ্র মোদীর আগের সরকারে ২০১৪ থেকে গত ৩০ মে পর্যন্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন সুষমা স্বরাজ। অসুস্থতার কারণে মোদীর এবারের সরকারে থাকেননি তিনি, অংশ নেননি নির্বাচনেও।
সুষমা স্বরাজ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকাকালেই বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বহু প্রতীক্ষিত স্থল সীমান্ত চুক্তি কার্যকর হয়। এর আওতায় ছিটমহলগুলোর মানুষের বন্দিজীবনের অবসান ঘটে।
২০১৬ সালে কিডনি প্রতিস্থাপনের পর থেকে আর অসুস্থতা কাটিয়ে উঠতে পারেননি সুষমা। কাজে সক্রিয় না থাকলেও দলের পক্ষে শেষ সময় পর্যন্তও টুইটে সক্রিয় ছিলেন বিজেপির এই নেত্রী।
হাসপাতালে নেয়ার কয়েক ঘণ্টা আগেও জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে অভিনন্দন জানিয়ে টুইট করেছিলেন সুষমা স্বরাজ।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শোক জানিয়ে এক বার্তায় বলেছেন, সুষমা স্বরাজ এমন একজন নেতা ছিলেন, যিনি তার জীবন উৎসর্গ করে গেছেন মানুষের সেবায়।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদে সুষমা স্বরাজ ছিলেন ইন্দিরা গান্ধীর পর দ্বিতীয় নারী।
লোকসভার সাত বারের সদস্য সুষমা ২০১৪ সালের নির্বাচনে মধ্য প্রদেশের বিদিশা থেকে ৪ লাখের বেশি ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছিলেন।
সুষমা স্বরাজ ১৯৯৮ সালের ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেন। তিনবার রাজ্য বিধান সভার সদস্যও নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।
কংগ্রেস ক্ষমতায় থাকার সময় লোকসভায় বিরোধীদলীয় নেতার দায়িত্ব পালন করেছিলেন সুষমা স্বরাজ।
তার আগে ২০০৩ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত অটল বিহারী বাজপাইর কেন্দ্রীয় সরকারে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী ছিলেন।
২০০৬ সালে হতে ২০০৯ সাল পর্যন্ত তিনি রাজ্যসভা সদস্য ছিলেন।
সুষমা স্বরাজের জন্ম ১৯৫২ সালে হরিয়ানায়। তার বাবা-মা পাকিস্তানের লাহোর শহরের ধরামপুরা থেকে ভারতে এসেছিলেন। পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন তিনি। ভারতের সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ছিলেন তিনি।
এদিকে, সুষমা স্বরাজের মৃত্যুতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। শোক জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনও।