ঢাকা ০৭:৪২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাশিয়ার সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:১৭:৫৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ অগাস্ট ২০১৯
  • ২২১ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ রাশিয়ার সঙ্গে মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তি (আইএনএফ) থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়ে ফেব্রুয়ারিতেই ঘোষণা দিয়েছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার থেকে সিদ্ধান্তটি কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ রাশিয়ার সঙ্গে নতুন করে অস্ত্র-প্রতিযোগিতার পথ সৃষ্টি করল বলে মনে করছেন কূটনীতিবিদরা।

খবরে বলা হয়, শীতল যুদ্ধের সমাপ্তি ঘোষণা করতে ১৯৮৭ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রেগান ও সোভিয়েত নেতা মিখাইল গর্বাচেভের মধ্যে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুসারে, উভয় দেশের জন্য ৫০০ থেকে ৫৫০০ কিলোমিটারের মধ্যে অর্থাৎ মাঝারি পাল্লার কোনো ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া নিষিদ্ধ করা হয়। পারমাণবিক ও অ-পারমাণবিক, দু’ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রের ওপরেই এই নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। কিন্তু ফেব্রুয়ারি মাসে ট্রাম্প প্রশাসন দাবি করে, রাশিয়া চুক্তি ভেঙেছে। তারা যদি চুক্তির শর্ত না মানে তাহলে এই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র বের হয়ে যাবে। রাশিয়া এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে। জানায়, তারাও চুক্তি থেকে বের হয়ে যাবে।

সম্প্রতি নতুন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এসপার জানান,  উভয় পক্ষের সহায়তা ছাড়া চুক্তি টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়।

২০০২ থেকে শুরু
আইএনএফ চুক্তি নিয়ে প্রথম বিপরীতমুখী পদক্ষেপ নিয়েছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের প্রশাসন। তার শাসনামলে ২০০২ সালে ব্যালিস্টিক পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র মোকাবিলা করতে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করা বিরোধী একটি চুক্তি থেকে বের হয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্র। এরপর দ্বিতীয় পদক্ষেপ নেয় রাশিয়া। ২০০৭ সালে তারা জানায়, আইএনএফ চুক্তিতে রাশিয়ার স্বার্থ নেই। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে একটি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্কা চালানোর অভিযোগ আনে যুক্তরাষ্ট্র। তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রশাসন দাবি করে, রাশিয়া চুক্তি ভঙ্গ করেছে। তবে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে চাপ আসায় চুক্তিটি থেকে সরে যাননি ওবামা। সর্বশেষ গত বছর, রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রথমবার আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ আনে ন্যাটো। এক বিবৃতিতে ন্যাটো জানায়, আমরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি যে, রাশিয়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা তৈরি ও পরীক্ষা করেছে, যা আইএনএফ চুক্তি-বিরোধী ও ইউরো-আটলান্টিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি।

চুক্তি না থাকার ঝুঁকি
আইএনএফ চ’ক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাহার নিয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্টনিও গুঁতেরা বলেন, পারমাণবিক যুদ্ধ হওয়ার পথ থেকে একটি অমূল্য রোধক হারিয়ে গেল। এতে ব্যালিস্টিক ক্ষেপনাস্ত্র হামলার ঝুঁকি কমবে না, বাড়বে।  বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, এই চুক্তির ভাঙন, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে নতুন করে অস্ত্র তৈরির প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করবে। রুশ সামরিক বিশ্লেষক পাভেল ফেলগেনহয়ের বলেন, চুক্তিটি যেহেতু শেষ হয়ে গেছে, এখন আমরা নতুন সব অস্ত্র তৈরি ও মোতায়েন দেখবো। -খবর বিবিসি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

রাশিয়ার সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

আপডেট টাইম : ১২:১৭:৫৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ অগাস্ট ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ রাশিয়ার সঙ্গে মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তি (আইএনএফ) থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়ে ফেব্রুয়ারিতেই ঘোষণা দিয়েছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার থেকে সিদ্ধান্তটি কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ রাশিয়ার সঙ্গে নতুন করে অস্ত্র-প্রতিযোগিতার পথ সৃষ্টি করল বলে মনে করছেন কূটনীতিবিদরা।

খবরে বলা হয়, শীতল যুদ্ধের সমাপ্তি ঘোষণা করতে ১৯৮৭ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রেগান ও সোভিয়েত নেতা মিখাইল গর্বাচেভের মধ্যে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুসারে, উভয় দেশের জন্য ৫০০ থেকে ৫৫০০ কিলোমিটারের মধ্যে অর্থাৎ মাঝারি পাল্লার কোনো ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া নিষিদ্ধ করা হয়। পারমাণবিক ও অ-পারমাণবিক, দু’ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রের ওপরেই এই নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। কিন্তু ফেব্রুয়ারি মাসে ট্রাম্প প্রশাসন দাবি করে, রাশিয়া চুক্তি ভেঙেছে। তারা যদি চুক্তির শর্ত না মানে তাহলে এই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র বের হয়ে যাবে। রাশিয়া এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে। জানায়, তারাও চুক্তি থেকে বের হয়ে যাবে।

সম্প্রতি নতুন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এসপার জানান,  উভয় পক্ষের সহায়তা ছাড়া চুক্তি টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়।

২০০২ থেকে শুরু
আইএনএফ চুক্তি নিয়ে প্রথম বিপরীতমুখী পদক্ষেপ নিয়েছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের প্রশাসন। তার শাসনামলে ২০০২ সালে ব্যালিস্টিক পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র মোকাবিলা করতে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করা বিরোধী একটি চুক্তি থেকে বের হয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্র। এরপর দ্বিতীয় পদক্ষেপ নেয় রাশিয়া। ২০০৭ সালে তারা জানায়, আইএনএফ চুক্তিতে রাশিয়ার স্বার্থ নেই। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে একটি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্কা চালানোর অভিযোগ আনে যুক্তরাষ্ট্র। তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রশাসন দাবি করে, রাশিয়া চুক্তি ভঙ্গ করেছে। তবে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে চাপ আসায় চুক্তিটি থেকে সরে যাননি ওবামা। সর্বশেষ গত বছর, রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রথমবার আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ আনে ন্যাটো। এক বিবৃতিতে ন্যাটো জানায়, আমরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি যে, রাশিয়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা তৈরি ও পরীক্ষা করেছে, যা আইএনএফ চুক্তি-বিরোধী ও ইউরো-আটলান্টিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি।

চুক্তি না থাকার ঝুঁকি
আইএনএফ চ’ক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাহার নিয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্টনিও গুঁতেরা বলেন, পারমাণবিক যুদ্ধ হওয়ার পথ থেকে একটি অমূল্য রোধক হারিয়ে গেল। এতে ব্যালিস্টিক ক্ষেপনাস্ত্র হামলার ঝুঁকি কমবে না, বাড়বে।  বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, এই চুক্তির ভাঙন, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে নতুন করে অস্ত্র তৈরির প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করবে। রুশ সামরিক বিশ্লেষক পাভেল ফেলগেনহয়ের বলেন, চুক্তিটি যেহেতু শেষ হয়ে গেছে, এখন আমরা নতুন সব অস্ত্র তৈরি ও মোতায়েন দেখবো। -খবর বিবিসি।