ঢাকা ০৬:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গাধার দুধ বিক্রি হচ্ছে, কেজি ২০০০

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:২১:২৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই ২০১৯
  • ৩২২ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ভারতে গত কয়েক বছর ধরে গাধার দুধ বিক্রি হচ্ছে। লিটারে যা ২,০০০ টাকা। গবেষণায় জানা গেছে, গাধার দুধে ফ্যাট কম। রয়েছে ভিটামিন, খনিজ। মানুষের দুধের সঙ্গে অনেক মিল। তাই ওষুধ ও প্রসাধনী তৈরির কাঁচামাল হিসেবে চাহিদা তৈরি হয়েছে এর। যে কারণে আমেরিকা, ইউরোপ, মধ্য ও পূর্ব এশিয়ার দেশগুলিতে এই দুধ কিনতে হুড়োহুড়ি পড়ে।

সেই ঝোঁক বাড়ছে ভারতেও। একাধিক সংস্থা গাধার দুধের প্রসাধনী তৈরি করছে। প্রয়োজনেই তারা গাধাপালকদের ছোট-ছোট গোষ্ঠী গড়েছে।

আনন্দবাজার পত্রিকার এক খবরে বলা হয়, কেরালার এর্নাকুলামের অ্যাবি বেবি মার্কেটিং ম্যানেজমেন্ট পড়েছিলেন। এমন ব্যবসায় নামতে চেয়েছিলেন যেখানে বেশি প্রতিযোগিতা নেই। নেট-বইপত্র ঘেঁটে গাধার দুধের ব্যাপারটা মনে ধরে তার। শেষে শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে রামমঙ্গলমে গাধার খামার করেন। গড়েন ছোট কারখানাও।

২০১৭-তে শুরু হয় তার ব্যবসা। গাধার দুধ থেকে তৈরি হয় ক্রিম ও শ্যাম্পু। আর্থারাইটিসের ক্রিমের দাম ৪,৮৪০ টাকা, এগজিমার ক্রিম ৬,১৩৬। ২০০ মিলিলিটারের মেডিকেটেড শ্যাম্পুও ২,৪০০ টাকার। তার দাবি, গত অর্থ বছরে সেই ব্যবসার অঙ্ক ছুঁয়েছে প্রায় ১.১৫ কোটি টাকা।

অ্যাবি বলেন, আমার জিনিস মূলত বিদেশে অনলাইনে বিক্রি হয়। ওষুধ ও প্রসাধন শিল্পে ব্যাপক চাহিদা। গোটা দেশে ব্যবসা ছড়াতে চাইছি। লগ্নিকারীও দরকার। আমার কাছে ফ্রান্স থেকে আনা ২১টি ‘পউট্যু’ জাতের গাধা রয়েছে। দশাসই চেহারা। দুধও বেশি দেয়। আমার ফার্ম থেকে প্রতি লিটার ৪,৭০০ টাকাতেও বেচেছি।

টাটা ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল সায়েন্স থেকে গত বছর স্নাতকোত্তর পাশ করেছেন দিল্লির পূজা কল। সেই বছর অক্টোবরেই কয়েক জন বন্ধুর সঙ্গে একটি সংস্থা খুলে গাধার দুধের সাবান তৈরি শুরু করেন। বিক্রি করেন অনলাইনে। মূলত ১৪টি যাযাবর পরিবারকে নিয়ে গাজিয়াবাদের দাসনা এলাকায় তারা সমবায়ের মতো গড়েছেন। ৪২টি গাধা রয়েছে। প্রতিদিন সেখান থেকে দিল্লিতে পূজাদের কারখানায় ৫-১৫ লিটারের মতো দুধ এনে ঘণ্টা চারেকের মধ্যে ‘প্রসেস’ করতে হয়।

পূজার দাবি, এখনও খুব কম লোক গাধার দুধের বিষয় জানে। কিন্তু ব্যবসার দুরন্ত ক্ষেত্র এটা। বিভিন্ন জায়গায় প্রদর্শনীতে ও অনলাইনে দারুণ সাড়া পাচ্ছি। মাসে প্রায় দেড় লক্ষ টাকার জিনিস বিক্রি হচ্ছে। লাভ ২০-২৫ শতাংশ। দুধটাকে পাউডার করার যন্ত্রপাতি থাকলে দ্বিগুণ আয় হত।

রাজস্থানের জয়পুরের বিএসসি পড়ুয়া সময় সিংহ গুজ্জরও বছর দু’য়েক আগে ধার করে শহর থেকে প্রায় ৩০ কিমি দূরে ৪০টি গাধার খামার করেছেন।

তিনি বলেন, ভিলওয়াড়ায় বড় রফতানিকারী আছেন। তার লোকেরা প্রতি দিন ৫-৬ লিটার দুধ নিয়ে যান। দিনে আয় ২,৫০০-৩,০০০ টাকার মতো।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

গাধার দুধ বিক্রি হচ্ছে, কেজি ২০০০

আপডেট টাইম : ০৪:২১:২৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ভারতে গত কয়েক বছর ধরে গাধার দুধ বিক্রি হচ্ছে। লিটারে যা ২,০০০ টাকা। গবেষণায় জানা গেছে, গাধার দুধে ফ্যাট কম। রয়েছে ভিটামিন, খনিজ। মানুষের দুধের সঙ্গে অনেক মিল। তাই ওষুধ ও প্রসাধনী তৈরির কাঁচামাল হিসেবে চাহিদা তৈরি হয়েছে এর। যে কারণে আমেরিকা, ইউরোপ, মধ্য ও পূর্ব এশিয়ার দেশগুলিতে এই দুধ কিনতে হুড়োহুড়ি পড়ে।

সেই ঝোঁক বাড়ছে ভারতেও। একাধিক সংস্থা গাধার দুধের প্রসাধনী তৈরি করছে। প্রয়োজনেই তারা গাধাপালকদের ছোট-ছোট গোষ্ঠী গড়েছে।

আনন্দবাজার পত্রিকার এক খবরে বলা হয়, কেরালার এর্নাকুলামের অ্যাবি বেবি মার্কেটিং ম্যানেজমেন্ট পড়েছিলেন। এমন ব্যবসায় নামতে চেয়েছিলেন যেখানে বেশি প্রতিযোগিতা নেই। নেট-বইপত্র ঘেঁটে গাধার দুধের ব্যাপারটা মনে ধরে তার। শেষে শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে রামমঙ্গলমে গাধার খামার করেন। গড়েন ছোট কারখানাও।

২০১৭-তে শুরু হয় তার ব্যবসা। গাধার দুধ থেকে তৈরি হয় ক্রিম ও শ্যাম্পু। আর্থারাইটিসের ক্রিমের দাম ৪,৮৪০ টাকা, এগজিমার ক্রিম ৬,১৩৬। ২০০ মিলিলিটারের মেডিকেটেড শ্যাম্পুও ২,৪০০ টাকার। তার দাবি, গত অর্থ বছরে সেই ব্যবসার অঙ্ক ছুঁয়েছে প্রায় ১.১৫ কোটি টাকা।

অ্যাবি বলেন, আমার জিনিস মূলত বিদেশে অনলাইনে বিক্রি হয়। ওষুধ ও প্রসাধন শিল্পে ব্যাপক চাহিদা। গোটা দেশে ব্যবসা ছড়াতে চাইছি। লগ্নিকারীও দরকার। আমার কাছে ফ্রান্স থেকে আনা ২১টি ‘পউট্যু’ জাতের গাধা রয়েছে। দশাসই চেহারা। দুধও বেশি দেয়। আমার ফার্ম থেকে প্রতি লিটার ৪,৭০০ টাকাতেও বেচেছি।

টাটা ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল সায়েন্স থেকে গত বছর স্নাতকোত্তর পাশ করেছেন দিল্লির পূজা কল। সেই বছর অক্টোবরেই কয়েক জন বন্ধুর সঙ্গে একটি সংস্থা খুলে গাধার দুধের সাবান তৈরি শুরু করেন। বিক্রি করেন অনলাইনে। মূলত ১৪টি যাযাবর পরিবারকে নিয়ে গাজিয়াবাদের দাসনা এলাকায় তারা সমবায়ের মতো গড়েছেন। ৪২টি গাধা রয়েছে। প্রতিদিন সেখান থেকে দিল্লিতে পূজাদের কারখানায় ৫-১৫ লিটারের মতো দুধ এনে ঘণ্টা চারেকের মধ্যে ‘প্রসেস’ করতে হয়।

পূজার দাবি, এখনও খুব কম লোক গাধার দুধের বিষয় জানে। কিন্তু ব্যবসার দুরন্ত ক্ষেত্র এটা। বিভিন্ন জায়গায় প্রদর্শনীতে ও অনলাইনে দারুণ সাড়া পাচ্ছি। মাসে প্রায় দেড় লক্ষ টাকার জিনিস বিক্রি হচ্ছে। লাভ ২০-২৫ শতাংশ। দুধটাকে পাউডার করার যন্ত্রপাতি থাকলে দ্বিগুণ আয় হত।

রাজস্থানের জয়পুরের বিএসসি পড়ুয়া সময় সিংহ গুজ্জরও বছর দু’য়েক আগে ধার করে শহর থেকে প্রায় ৩০ কিমি দূরে ৪০টি গাধার খামার করেছেন।

তিনি বলেন, ভিলওয়াড়ায় বড় রফতানিকারী আছেন। তার লোকেরা প্রতি দিন ৫-৬ লিটার দুধ নিয়ে যান। দিনে আয় ২,৫০০-৩,০০০ টাকার মতো।