হাওর বার্তা ডেস্কঃ মানুষ শুধু নিয়তের মাধ্যমেই আল্লাহকে খুশি করতে পারে। এজন্য নিখুঁঁত মন থাকা লাগবে। দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হওয়া লাগবে। মহান রাব্বুল আলামিনের নৈকট্য লাভ হয় এতিমদের সাহায্যে। রাসুল (সা.) এর দেখার সৌভাগ্য হয় এতিমদের সহযোগিতায়। তাই যথাসাধ্য এতিমদের সাহায্যে এগিয়ে আসুন। আল্লাহ আমাদের সবাইকে বিষয়টি অনুধাবন করার তৌফিক দিন এতিম শব্দটি খুব বেদনাময়। শব্দটি শোনার সঙ্গে সঙ্গে আপন সত্তার ভেতর এক শিহরণ জাগ্রত হয়। অনুভবে খুব নাড়া দিয়ে ওঠে।
বাবা-মায়ের ছায়া আল্লাহ তায়ালার এক বিশেষ রহমত। বাবা-মায়ের কাছে ভালোবাসার কমতি নেই। তারা সর্বদা চেষ্টা করেন সন্তানের মুখে হাসি ফুটাতে। চেষ্টা করেন ভালো খাবার তার জন্য রেখে দিতে। চেষ্টা করেন ভালো শিক্ষাঙ্গনে ভর্তি করাতে। সন্তানের অসুস্থতা ও জ্ঞানের কমতি আল্লাহ তায়ালার প্রদত্ত মনে করে গ্রহণ করেন মৃদুহাসি দিয়ে।
মৃত্যু কাউকে জানান দিয়ে আসে না। সে অজান্তে হঠাৎ কোনো একসময় উপস্থিত হয়। মৃত্যু দেখে না, কে ছোট আর কে বড়, কে কার বাবা কিংবা কে কার ছেলে। মৃত্যু দেখে না, কে কোনো বংশের বা কে কোনো খান্দানের। যখন কোনো ব্যক্তি তার আদরের ছোট্ট বাচ্চাকে রেখে দুনিয়া থেকে বিদায় নেয়, তখন মহান রাব্বুল আলামিন দেখেন, কে সেই বাচ্চার অভিভাবক হয়, কে তার দায়িত্বভার গ্রহণ করে।
ইসলামের দৃষ্টিতে এতিমদের মাথায় হাত বুলিয়ে দেওয়া, তাদের জন্য অন্ন, কাপড় আর অভিভাবকত্ব গ্রহণ করা বড় পুণ্যের কাজ বলে অভিহিত করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা কোরআনে বলেন, ‘এতিমদের সঙ্গে ভালো আচরণ করো এবং কল্যাণকর কার্য আল্লাহ খুব ভালোভাবেই জানেন।’ (সূরা নিসা : ১২৭)।
হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি মুসলমানদের মধ্য থেকে কোনো এতিম বাচ্চাকে নিজ দস্তরখানায় অংশীদার বানাবে, আল্লাহ তাকে নিশ্চিত জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। সাবধান! তোমরা এমন কোনো গোনাহ করো না, যার কোনো মাফ নেই।’ (তিরমিজি)।
হাদিসে আরও বলা হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন, ‘এতিমদের অভিভাবকরা জান্নাতে দুই আঙুলের মতো হবে। তিনি দুই আঙুল অর্থাৎ শাহাদৎ আর মধ্যমা আঙুলের দিকে ইশারা করেছেন।’ (তিরমিজি)।
আমাদের সমাজে সাধারণত এতিম ও অসহায় বাচ্চাদের জন্য সাহায্য শুধু খাদ্য আর কাপড় দেওয়া। কিন্তু এ বাচ্চাদের জন্য চরিত্র গঠন ও আর্থিক সহযোগিতা নেই বললে চলে। সুদৃষ্টি আর অভিভাবকহীন হওয়ায় সমাজে লাঞ্ছিত জীবন অতিবাহিত করে। অসহায় বাচ্চাটি মহল্লায়, রাস্তা আশপাশে পড়ে থাকে বিবস্ত্র আর ছেঁড়া কাপড় পরে। অথবা কাজ করে কারও বাসাবাড়িতে।
অথচ আল্লাহ তায়ালা এতিমদের কষ্টে এগিয়ে আসার জন্য বারবার বলেছেন। এতিম বাচ্চা নিজ বাবা-মায়ের আদর-মায়া-স্নেহ থেকে বঞ্চিত থাকে। যার কোনো বিকল্প পথ নেই। তাই মুসলমানদের হুকুম দেওয়া হয়েছে, এতিমদের সঙ্গে নম্র আচরণ করা। ভালোবাসার হাত মাথায় বুলিয়ে দেওয়া। যাতে তারাও বাবা-মায়ের মায়া-আদর কিছুক্ষণের জন্য বুঝতে পারে।
মানুষ শুধু নিয়তের মাধ্যমেই আল্লাহকে খুশি করতে পারে। এজন্য নিখুঁঁত মন থাকা লাগবে। দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হওয়া লাগবে। মহান রাব্বুল আলামিনের নৈকট্য লাভ হয় এতিমদের সাহায্যে। রাসুল (সা.) এর দেখার সৌভাগ্য হয় এতিমদের সহযোগিতায়। তাই যথাসাধ্য এতিমদের সাহায্যে এগিয়ে আসুন। আল্লাহ আমাদের সবাইকে বিষয়টি অনুধাবন করার তৌফিক দিন। আমিন!