হাওর বার্তা ডেস্কঃ আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে চরম হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যা নিয়ে আতঙ্কে গোটা বিশ্বের শান্তিপ্রিয় মানুষ। মঙ্গলবার ওয়াশিংটনের ওভাল অফিসে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে পাশে বসিয়ে তিনি বলেন, ‘চাইলে সাত দিনে আমরা মানচিত্র থেকে আফগানিস্তানকে মুছে ফেলতে পারতাম। কিন্তু আমরা আলোচনার পক্ষপাতী।
এক কোটি মানুষ মারতে চাই না।’ আফগানিস্তানের সরকার দেশেশান্তি ফেরানোর নামে জঙ্গি গোষ্ঠী তালিবানের সঙ্গে আমেরিকার আলোচনা প্রস্তাবে বরাবর দূরত্ব বজায় রেখেছে। এই পরিস্থিতিতে আফগান সরকারের ওপর চাপ বাড়িয়ে তাদের আলোচনার টেবিলে আনতেই ট্রাম্প এই হুমকি দেন।
কিন্তু ট্রাম্পের এই হুমকির বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে কাবুল। তারা ট্রাম্পের এই মন্তব্যের ‘উপযুক্ত ব্যাখ্যা’চেয়েছে। মঙ্গলবার আফগান প্রেসিডেন্টের অফিস থেকে প্রচারিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘তালেবানদের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় আপত্তি নেই। কিন্তু বিদেশি শক্তিকে আমাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে দেব না।’
আগামী সেপ্টেম্বরে আফগানিস্তানে সাধারণ নির্বাচন। তার আগেই তালিবানের সঙ্গে শান্তি চুক্তি সেরে ফেলতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র। এ জন্য তারা তালিবানের সঙ্গে আলোচনার টেবিলে বসার জন্য আফগান সরকারের ওপর চাপ দিচ্ছে। পাকিস্তানকে সঙ্গে নিয়ে সেটা নিশ্চিত করতে চাইছে ওয়াশিংটন। আবার আফগানিস্তানকে নিশানায় রেখে, ট্রাম্প পাকিস্তানের উপরেও চাপ বজায় রাখতে চাইছেন বলেও মনে করা হচ্ছে। কেননা একটা সময়ে পাকিস্তানের মদদেই আফগানিস্তানে ক্ষমতায় এসেছিল তালিবান।
কিন্তু আফগানিস্তান নিয়ে ট্রাম্পের এমন হুঁশিয়ারি ভাল ভাবে নিচ্ছে না আন্তর্জাতিক মহলের একটা বড় অংশ। আফগানিস্তান বিষয়ক বিশেষ মার্কিন দূত জ়ালমে খালিজ়াদ অবশ্য বলেই চলেছেন, ‘মুখে যুদ্ধের কথা বললেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আসলে শান্তি আলোচনার উপরেই জোর দিতে চাইছেন।’
হোয়াইট হাউসে আসার আগে থেকেই এই শান্তি আলোচনার কথা বলে আসছেন ট্রাম্প। ২০১৭ সালে সেই অবস্থান থেকে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে তালিবানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন ট্রাম্প। তার পর ফের ভোল পাল্টে গত ডিসেম্বরে ট্রাম্প জানান, কয়েক মাসের মধ্যেই আফগানিস্তান থেকে অর্ধেক সেনা সরিয়ে নেয়া হবে।
এই শান্তি প্রক্রিয়ায় মধ্যস্থতা করার জন্য ইমরানকে চিঠি লিখেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। জবাবে ইতিবাচক সাড়া দেন ইমরান খান। মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রে সফরে থাকা ইমরান খানকে পাশে বসিয়ে সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের ভূমিকার প্রশংসা করেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘আফগানিস্তানে শান্তি সমঝোতার বিষয়টা অনেক দূর এগিয়েছে।’