হাওর বার্তা ডেস্কঃ রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে নিজেদের পক্ষে যা সম্ভব তার সবকিছুই বাংলাদেশ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বলেছেন, এ সংকট সমাধানে বিশ্ব বিবেককে এগিয়ে আসতে হবে।
‘আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক পদক্ষেপের পাশাপাশি সংকট সমাধানে শিক্ষাবিদ, গবেষক ও বিশ্বের খ্যাতনামা উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভূমিকা রাখতে হবে, যাতে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের টেকসই ও স্থায়ী প্রত্যাবাসন নিশ্চিত হয়,’ যোগ করেন তিনি।
শুক্রবার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের হার্ভার্ড কেনেডি স্কুলের ‘অ্যাশ সেন্টার ফর ডেমোক্রেটিক গভর্নেন্স অ্যান্ড ইনোভেশন’ সেন্টারে অনুষ্ঠিত ‘ইন্টারন্যাশনাল রোহিঙ্গা অ্যাওয়ারনেস কনফারেন্সে’ পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বোস্টনের অর্থনীতিবিদ ড. আন্দুল্লাহ শিবলি, ড. ডেভিড ড্যাপাইচ ও সমাজকর্মী নাসরিন শিবলি এ সেমিনারটির আয়োজন করেন।
আলোচক হিসেবে ছিলেন জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনারের নিউইয়র্ক কার্যালয়ের পরিচালক নিনেথ কেলি এবং হার্ভার্ড কেনেডি স্কুলের ভিয়েতনাম ও মিয়ানমার কর্মসূচির সিনিয়র ইকোনমিস্ট ও প্রফেসর এমিরেটাস ড. ডেভিড ড্যাপাইচ।
অনুষ্ঠানটির সঞ্চালক ছিলেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক এবং অ্যাশ সেন্টার ফর ডেমোক্রেটিক গভর্নন্সের পরিচালক এন্থনি সাইচ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার উদ্বোধনী ও মূল বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অদম্য অগ্রযাত্রার কথা তুলে ধরেন। এতে উঠে আসে জিডিপির উচ্চ প্রবৃদ্ধির হার, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, আমদানি-রপ্তানি বৃদ্ধি ও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ নানা উন্নয়ন সূচকের উদাহরণ।
মন্ত্রী জিনি-কোইফিসিয়েন্টসহ অর্থনীতির বিভিন্ন সূচক, উপাত্ত ও সংজ্ঞায় বাংলাদেশের উন্নয়নকে বিশ্লেষণ করে দেখান, যা পার্শ্ববর্তী যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি ও অগ্রমুখী। কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তার বিস্ময়কর সাফল্যের কথাও তুলে ধরেন মন্ত্রী।
এমন সম্ভাবনাময় বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ইস্যুটি কীভাবে অর্থনীতি, সমাজ ও পরিবেশের ওপর প্রভাব ফেলছে তা উল্লেখ করেন তিনি।
১১ লাখ রোহিঙ্গাকে মানবিক আশ্রয় দেয়ার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদারতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশ্বের সবচেয়ে ভাগ্যবিড়ম্বিত ও অমানবিক সহিংসতার স্বীকার এ মানুষগুলোকে আশ্রয় না দিলে তাদের আর যাওয়ার কোনো জায়গা ছিল না।
মন্ত্রী রোহিঙ্গা সংকটের ক্রম ইতিহাসসহ এ সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের পাশাপাশি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নিয়ে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার শুরু থেকে এ পর্যন্ত বিস্তারিত তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘মিয়ানমার এ সংকট সমাধানে এগিয়ে আসেনি। কফি আনান কমিশনের সুপারিশ থেকে শুরু করে কোনো পদক্ষেপই তারা বাস্তবায়ন করেনি। রাখাইন রাজ্যে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়ার আস্থা ও নিরাপত্তা সৃষ্টিকারী কোনো অনুকূল পরিবেশই তারা সৃষ্টি করতে পারেনি। পরিবর্তে মিয়ানমার বিষয়টি নিয়ে ব্লেইম গেম খেলছে।’