ঢাকা ১০:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যেখানেই যেতেন নামাজের ইমামতি করতেন মুরসি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:১২:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ জুন ২০১৯
  • ৩১৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মিসরের সদ্য প্রয়াত সাবেক প্রেসিডেন্ট মুরসি ১৯৫১ সালে উত্তর মিসরের আল-আদওয়াহ প্রদেশে জন্মগ্রহণ করেন। ৭০ এর দশকে কায়রো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকৌশল বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন তিনি। পরে উচ্চ শিক্ষার্থে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যান এবং ডক্টরেট ডিগ্রি​ লাভ করেন। কর্মজীবনে ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটি, নর্থরিজে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন।

১৯৮৫ সালে মুরসি মিসরের জাগাজিগ বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেয়ার উদ্দেশ্যে ক্যালিফোর্নিয়ার অধ্যাপনার চাকরি ছেড়ে মিসরে চলে আসেন। মুরসি ছিলেন একজন কুরআনের হাফেজ। তিনি যেখানেই যেতেন নিজে নামাজের ইমামতি করতেন। গত রমজান মাসে তিনি নিজে তারাবিহ পড়িয়েছিলেন।

মুরসি ২০০০ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১১ সালে আরব বসন্তের সময়ে রাখা ভূমিকার জন্য মুসলিম ব্রাদারহুডের একজন নেতৃস্থানীয় ব্যাক্তি হিসেবে উঠে আসেন তিনি। ২০১২সালে ব্রাদারহুডের বিকল্প প্রেসিডেন্ট মুরসির নাম ঘোষণা করা হয়। পরে মূল প্রার্থী বাদ পড়লে তিনি নির্বাচন করেন। এবং মিসরের প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হন।

২০১২ সালের জুন থেকে ২০১৩ সালের জুলাই পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকাকালে মুরসির বিরুদ্ধে মিসরকে ইসলামিকরণ করার অভিযোগ ওঠে। তার ইসলামপন্থী সংবিধান প্রণয়নের চেষ্টা গ্রহণযোগ্য হয়নি ধর্মনিরপেক্ষ ও উদারপন্থীদের কাছে। দ্রুত অর্থনৈতিক সংস্কারের উদ্যোগও সমালোচিত হয়।

মুরসি ইরানের সাথে সম্পর্ক জোরদার করতে চেয়েছিলেন যা আমেরিকার মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাড়ায়। মোবারক আমলের সেনা অফিসারদেরকে রাষ্ট্রের গুরত্বপূর্ণ পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া এবং বিচারের মুখোমুখি করতে চেষ্টা করায় সেনাবাহিনীও ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে।

ক্ষমতায় আসার এক বছর পরই ২০১৩ সালে মুরসির বিরুদ্ধে শুরু হয় ব্যাপক গণবিক্ষোভ। তাহরির স্কয়ারেই মুরসির বিরুদ্ধে জড়ো হন মানুষ। এই সুযোগে সংবিধান স্থগিত মুরসিকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করে সেনাবাহিনী।

তখন থেকেই মুরসি কারাগারে বন্দী ছিলেন। মুরসি ক্ষমতাচ্যুত হবার পর মিসরের কর্তৃপক্ষ তার সমর্থক এবং মুসলিম ব্রাদারহুডের বিরুদ্ধে ব্যাপক ধরপাকড় শুরু করে।

২০১৪ সালে তার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনা হয়েছিল। এরপর ২০১৬ সালের জুন মাসে তথ্য পাচারের এ মামলায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করেন নিম্ন আদালত। আদালত দেশের গুরুত্বপূর্ণ নথি পাচারের অভিযোগে মুরসিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন। সবশেষ সোমবার মাত্র ৬৭ বছর বয়সে আদালতেই প্রাণ হারান মুরসি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

যেখানেই যেতেন নামাজের ইমামতি করতেন মুরসি

আপডেট টাইম : ০১:১২:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ জুন ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মিসরের সদ্য প্রয়াত সাবেক প্রেসিডেন্ট মুরসি ১৯৫১ সালে উত্তর মিসরের আল-আদওয়াহ প্রদেশে জন্মগ্রহণ করেন। ৭০ এর দশকে কায়রো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকৌশল বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন তিনি। পরে উচ্চ শিক্ষার্থে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যান এবং ডক্টরেট ডিগ্রি​ লাভ করেন। কর্মজীবনে ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটি, নর্থরিজে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন।

১৯৮৫ সালে মুরসি মিসরের জাগাজিগ বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেয়ার উদ্দেশ্যে ক্যালিফোর্নিয়ার অধ্যাপনার চাকরি ছেড়ে মিসরে চলে আসেন। মুরসি ছিলেন একজন কুরআনের হাফেজ। তিনি যেখানেই যেতেন নিজে নামাজের ইমামতি করতেন। গত রমজান মাসে তিনি নিজে তারাবিহ পড়িয়েছিলেন।

মুরসি ২০০০ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১১ সালে আরব বসন্তের সময়ে রাখা ভূমিকার জন্য মুসলিম ব্রাদারহুডের একজন নেতৃস্থানীয় ব্যাক্তি হিসেবে উঠে আসেন তিনি। ২০১২সালে ব্রাদারহুডের বিকল্প প্রেসিডেন্ট মুরসির নাম ঘোষণা করা হয়। পরে মূল প্রার্থী বাদ পড়লে তিনি নির্বাচন করেন। এবং মিসরের প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হন।

২০১২ সালের জুন থেকে ২০১৩ সালের জুলাই পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকাকালে মুরসির বিরুদ্ধে মিসরকে ইসলামিকরণ করার অভিযোগ ওঠে। তার ইসলামপন্থী সংবিধান প্রণয়নের চেষ্টা গ্রহণযোগ্য হয়নি ধর্মনিরপেক্ষ ও উদারপন্থীদের কাছে। দ্রুত অর্থনৈতিক সংস্কারের উদ্যোগও সমালোচিত হয়।

মুরসি ইরানের সাথে সম্পর্ক জোরদার করতে চেয়েছিলেন যা আমেরিকার মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাড়ায়। মোবারক আমলের সেনা অফিসারদেরকে রাষ্ট্রের গুরত্বপূর্ণ পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া এবং বিচারের মুখোমুখি করতে চেষ্টা করায় সেনাবাহিনীও ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে।

ক্ষমতায় আসার এক বছর পরই ২০১৩ সালে মুরসির বিরুদ্ধে শুরু হয় ব্যাপক গণবিক্ষোভ। তাহরির স্কয়ারেই মুরসির বিরুদ্ধে জড়ো হন মানুষ। এই সুযোগে সংবিধান স্থগিত মুরসিকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করে সেনাবাহিনী।

তখন থেকেই মুরসি কারাগারে বন্দী ছিলেন। মুরসি ক্ষমতাচ্যুত হবার পর মিসরের কর্তৃপক্ষ তার সমর্থক এবং মুসলিম ব্রাদারহুডের বিরুদ্ধে ব্যাপক ধরপাকড় শুরু করে।

২০১৪ সালে তার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনা হয়েছিল। এরপর ২০১৬ সালের জুন মাসে তথ্য পাচারের এ মামলায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করেন নিম্ন আদালত। আদালত দেশের গুরুত্বপূর্ণ নথি পাচারের অভিযোগে মুরসিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন। সবশেষ সোমবার মাত্র ৬৭ বছর বয়সে আদালতেই প্রাণ হারান মুরসি।