ঢাকা ০৮:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মালিকানা দাবিতে মসজিদে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৮:১২:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ জুন ২০১৯
  • ২৯৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে বিদেশি সংস্থার নির্মিত মসজিদ নিজের দাবি করে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন ছালাম নামে স্থানীয় এক প্রভাবশালী। এতে ওই মসজিদে নামাজ আদায় থেকে বিরত রয়েছেন মুসল্লিরা। উপজেলার লোকেরপাড়া ইউনিয়নের চরবকশিয়া গ্রামের ছালাম হোসেন মসজিদের মালিক দাবি করেন।

সরেজমিনে মসজিদে তালা ঝুলানো দেখা গেছে। এ ঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী মুসল্লিরা। মসজিদে তালা লাগানোর বিষয়টি স্থানীয়দের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

লিখিত অভিযোগ থেকে জানা গেছে, উপজেলার চর বকশিয়া গ্রামে দেশ কুয়েতের অর্থে ২০১৫ সালে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। দুবাই প্রবাসী বেলাল হোসেনও সেই মসজিদে বিপুল টাকা অনুদান দেন। এরপর থেকে গ্রামের মুসল্লিরা সেখানে নামাজ আদায় করে আসছেন। এর কিছু দিনের মধ্যে বেলাল হোসেন ও তার ভাই ছালাম মসজিদটি নিজেদের দাবি করেন।

বেলাল বর্তমানে দুবাই বসবাস করছেন। এতে মসজিদ পরিচালনা কমিটি ভেঙে দেন ছালাম। পরে মসজিদ নিজেদের দখলে নিতে তালা ঝুলিয়ে দেন মসজিদে। এছাড়া কাউকে কিছু না জানিয়ে মসজিদের ইমামকে তাড়িয়ে নতুন ইমাম নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এরপর থেকেই নিজের ইচ্ছে মতো মসজিদ পরিচালনা করেন ছালাম। স্থানীয়রা মসজিদে না গেলেও ছালাম ও ইমাম দুইজনে মিলে মসজিদে নামাজ আদায় করেন।

চরবকশিয়া গ্রামের হেলাল উদ্দিন, নুরুল ইসলামসহ অনেকেই জানান, ব্যক্তি মালিকানা দাবি করে গ্রামের সব মুসল্লি যাতে নামাজ পড়তে না পারে সে জন্য দীর্ঘদিন ধরে মসজিদে তালা দিয়ে রাখা হয়েছে। এতে মসজিদে নামাজ আদায় থেকে বিরত রয়েছেন গ্রামের মুসল্লিরা। প্রতিকার চেয়ে ইউপি চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন জায়গায় গ্রামবাসী লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

চরবকশিয়া জামে মসজিদের সহ-সভাপতি আবুল হোসেন জানান, মসজিদ পরিচালনা কমিটির অনুমতি ছাড়াই নিজেদের দাবি করে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে। ছালাম ও দুবাই প্রবাসী বেলালের পৈতৃক জমিতে মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। তালা লাগানো ও ইমাম তাড়িয়ে দেয়ার বিষয়টি প্রতিবাদ করতে গেলে তারা মসজিদ নিজেদের দাবি করেন। গ্রামের লোকজন তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলতে সাহস পায় না।

মসজিদে তালা দেয়া ছালাম হোসেন জানান, শুধুমাত্র নামাজের সময় খুলে দেয়া হয়। এছাড়া সড়কের সাথে মসজিদ হওয়ায় চুরির সম্ভাবনা রয়েছে। নামাজের আগে ইমাম এসে তালা খুলে আজান দেন। শুধু বিদেশি অর্থে মসজিদ নির্মাণ হয়নি, আমার ভাই বেলাল হোসেন বিপুল টাকা দিয়েছেন নির্মাণের জন্য।

উপজেলার লোকেরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শরিফ হোসেন জানান, এবিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। পারিবারিক কারণে ভাই ভাইকে মসজিদে যেতে দেয় না। তাদের ভাইদের কারণে এমন জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। মসজিদ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর আরেকটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে গ্রামবাসী।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

মালিকানা দাবিতে মসজিদে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন

আপডেট টাইম : ০৮:১২:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ জুন ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে বিদেশি সংস্থার নির্মিত মসজিদ নিজের দাবি করে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন ছালাম নামে স্থানীয় এক প্রভাবশালী। এতে ওই মসজিদে নামাজ আদায় থেকে বিরত রয়েছেন মুসল্লিরা। উপজেলার লোকেরপাড়া ইউনিয়নের চরবকশিয়া গ্রামের ছালাম হোসেন মসজিদের মালিক দাবি করেন।

সরেজমিনে মসজিদে তালা ঝুলানো দেখা গেছে। এ ঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী মুসল্লিরা। মসজিদে তালা লাগানোর বিষয়টি স্থানীয়দের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

লিখিত অভিযোগ থেকে জানা গেছে, উপজেলার চর বকশিয়া গ্রামে দেশ কুয়েতের অর্থে ২০১৫ সালে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। দুবাই প্রবাসী বেলাল হোসেনও সেই মসজিদে বিপুল টাকা অনুদান দেন। এরপর থেকে গ্রামের মুসল্লিরা সেখানে নামাজ আদায় করে আসছেন। এর কিছু দিনের মধ্যে বেলাল হোসেন ও তার ভাই ছালাম মসজিদটি নিজেদের দাবি করেন।

বেলাল বর্তমানে দুবাই বসবাস করছেন। এতে মসজিদ পরিচালনা কমিটি ভেঙে দেন ছালাম। পরে মসজিদ নিজেদের দখলে নিতে তালা ঝুলিয়ে দেন মসজিদে। এছাড়া কাউকে কিছু না জানিয়ে মসজিদের ইমামকে তাড়িয়ে নতুন ইমাম নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এরপর থেকেই নিজের ইচ্ছে মতো মসজিদ পরিচালনা করেন ছালাম। স্থানীয়রা মসজিদে না গেলেও ছালাম ও ইমাম দুইজনে মিলে মসজিদে নামাজ আদায় করেন।

চরবকশিয়া গ্রামের হেলাল উদ্দিন, নুরুল ইসলামসহ অনেকেই জানান, ব্যক্তি মালিকানা দাবি করে গ্রামের সব মুসল্লি যাতে নামাজ পড়তে না পারে সে জন্য দীর্ঘদিন ধরে মসজিদে তালা দিয়ে রাখা হয়েছে। এতে মসজিদে নামাজ আদায় থেকে বিরত রয়েছেন গ্রামের মুসল্লিরা। প্রতিকার চেয়ে ইউপি চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন জায়গায় গ্রামবাসী লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

চরবকশিয়া জামে মসজিদের সহ-সভাপতি আবুল হোসেন জানান, মসজিদ পরিচালনা কমিটির অনুমতি ছাড়াই নিজেদের দাবি করে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে। ছালাম ও দুবাই প্রবাসী বেলালের পৈতৃক জমিতে মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। তালা লাগানো ও ইমাম তাড়িয়ে দেয়ার বিষয়টি প্রতিবাদ করতে গেলে তারা মসজিদ নিজেদের দাবি করেন। গ্রামের লোকজন তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলতে সাহস পায় না।

মসজিদে তালা দেয়া ছালাম হোসেন জানান, শুধুমাত্র নামাজের সময় খুলে দেয়া হয়। এছাড়া সড়কের সাথে মসজিদ হওয়ায় চুরির সম্ভাবনা রয়েছে। নামাজের আগে ইমাম এসে তালা খুলে আজান দেন। শুধু বিদেশি অর্থে মসজিদ নির্মাণ হয়নি, আমার ভাই বেলাল হোসেন বিপুল টাকা দিয়েছেন নির্মাণের জন্য।

উপজেলার লোকেরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শরিফ হোসেন জানান, এবিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। পারিবারিক কারণে ভাই ভাইকে মসজিদে যেতে দেয় না। তাদের ভাইদের কারণে এমন জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। মসজিদ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর আরেকটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে গ্রামবাসী।